করোনা ভাইরাস মুক্ত রয়েছে নাটোর। তবুও নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছে সারা জেলা। সবসময় জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি সেনা বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যরা রয়েছে মাঠে। যেকোন প্রয়োজনে তারা মানুষের পাশে থেকে সেবা করার ব্রত নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। মাইকিং, মসজিদ,হাসপাতাল সহ বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন স্থানে জিবানুনাশক স্প্রে করা এবং সড়কগুলোতে ছিটিয়ে চলেছেন জিবানুনাশক ঔষধ। বিদেশ ফেরত কোন ব্যক্তি যেন করোনা ভাইরাসের সংক্রামন ছড়াতে না পারে বা সরকারি নির্দেশনা না মানে তাদে জন্য জেলা প্রশাসনের ১৩ টি ভ্রাম্যমান আদালত কাজ করছে। এরসাথে পুলিশ প্রশাসনের সদস্যরা নিয়মিত মাইকিং সহ মানুষের নিরাপত্তা দিয়ে চলেছে। এরই মধ্যে নাটোর কারাগারের এক হাজতি এবং বড়াইগ্রামের এক ব্যক্তি যিনি ঢাকায় তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক লক্ষন দেখা দেয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত তাদের চিকিৎসার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকাতে প্রেরণ করা হয়। পরে তাদের নমুনা পরীক্ষায় করোনা ভাইরাস শনাক্তের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। তারা দুজনেই আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত সাধারন রোগে অসুস্থ্য হয়েছেন বলে জানান নাটোরের সিভিল সার্জন কাজী মিজানুর রহমান।
নাটোরের সিভিল সার্জন কাজী মিজানুর রহমান জানান, নাটোর থেকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ঢাকাতে পাঠানো দুজনের নমুনা জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এ পাঠানো হয়েছিল। কারাগার থেকে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ থাকা এক হাজতিকে নাটোর সদর হাসপাতালের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছিল। তার নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। গত ২২ মার্চ সেই হাজতিকে জামিনে মুক্তি দিয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছিল। তার বয়স ৫০ বছর। জ্বর সর্দি ও শ্বাস কষ্ট ছিল তার। এর আগে গত ২১ মার্চ করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় এক গার্মেন্টস কর্মকর্তার নমুনা পাঠানো হয়েছিল। তারও সর্দি-জ্বর,গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট ছিল। তিনি বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে সভা করার পর অসুস্থ হয়েছিলেন বলে জানিয়েছিলেন। তিনিও করোনা ভাইরাস মুক্ত। তিনি এখন ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছেন।
সিভিল সার্জন আরও জানান, গত ২৪ ঘন্টায় নাটোরে আরও ১৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। এ নিয়ে জেলায় মোট কোয়ারেন্টাইনে থাকেন ২৬৪ জন। তবে তাঁদের মধ্যে ২৩ জনের কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। সবাই সুস্থ আছেন।
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ জানান, জেলায় এখন পর্যন্ত কারও করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়নি। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটরা সেনা সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। এখন সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছেন। সবাইকে ঘরে রাখতে কঠোর ভূমিকা পালন করা হচ্ছে।