ডেস্ক নিউজ
ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণুজীব পুরো বিশ্বকে তছনছ করে দিয়েছে, কেড়ে নিচ্ছে অসংখ্য মানুষের জীবন। এর গতিপথ অপ্রতিরোধ্যÑ পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিজ্ঞানের আধুনিকতম যুগে, মানুষের অগোচরে, মানুষকে অসহায় করে।
কোভিড-১৯ তিন ধরনেরÑ মৃদ্যু (গরষফ), মাঝারি (গড়ফবৎধঃব) আর মারাত্মক (ঝবৎরড়ঁং বা ঈৎরঃরপধষ)। এর মধ্যে মৃদু রোগীর সংখ্যাই বেশিÑ প্রায় ৯২ থেকে ৯৫ শতাংশ। ইতোমধ্যে বিরাটসংখ্যক রোগী সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে। ৪ এপ্রিল পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি (২,৯১,৫৪৫) এবং মৃত্যুর সংখ্যা ইতালিতে (১৪,৬৮১)। এর পরের অবস্থান স্পেনের (মৃত্যুর সংখ্যা ১১,৭৪৪)। চীনের পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলেও নতুন করে কয়েক রোগী শনাক্ত হচ্ছে এবং মৃত্যুও হয়েছে। ওই তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ায় তুলনামূলকভাবে আক্রান্তের সংখ্যা কম। ভারতে রোগী ৩ হাজার ৭২, মৃত্যু ৭৫ জন। দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বশেষ আক্রান্ত দেশ বাংলাদেশ। ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে রোগীর সংখ্যা ৮৮ ও মৃত্যু ৯। বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মিজোরাম, মণিপুর, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটানসহ এসব অঞ্চলে প্রাদুর্ভাব অপেক্ষাকৃত কম। বিশ্বব্যাপী নানা গবেষণা চলছে। এর মধ্যে বলা হয়েছে, গ্রীষ্মপ্রধান দেশে অপেক্ষাকৃত কম হতে পারে। কিন্তু আমেরিকার লুজিয়ানা ও মিয়ামি বর্তমানে উষ্ণ বলে রোগীর সংখ্যা কম নয়।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনে অজানা কারণে নিউমোনিয়া রোগী শনাক্ত হয় এবং ১১ জানুয়ারি ২০২০ প্রথম রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ৩০ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বব্যাপী জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করে। ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নোভেল করোনা ভাইরাসকে কোভিড-১৯ হিসেবে নামকরণ করে।
চীনের পর বিশ্বব্যাপী দ্রুত জ্যামিতিক হারে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ে। কোনো কোনো দেশে প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিল দেখা যাচ্ছে আবার কোথাও বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রথম থেকেই সময়োচিত গাইডলাইন ও দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে। প্রথমেই বলেছে রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা বাড়াতে। এটা অনুসরণ করে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুর অনেকটা সফলতা পেয়েছে। বর্তমানে বিশ্বে কোভিড ১৯-এর গতি-প্রকৃতির ওপর বেশকিছু পর্যবেক্ষণ মন্তব্য পাওয়া গেছে।
বিভিন্ন দেশের মৃত্যুর হারের বেশকিছু কারণ চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তা হলো ১. জনসংখ্যার বয়সের অনুপাত, ২. স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা ও ৩. পরীক্ষার সংখ্যা।
১. জনসংখ্যার বয়সের অনুপাত : বয়স্ক লোকরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ও মৃত্যুবরণ করছে। এর পাশাপাশি যাদের দীর্ঘস্থায়ী রোগ আছে যেমনÑ ক্যানসার, উচ্চরক্তচাপ, ফুসফুসের অসুখ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিম্নমুখী। যে দেশে বয়স্ক লোকের সংখ্যা বেশি, সে দেশেই মৃত্যুর হার বেশি দেখা যাচ্ছে।
২. স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা : রোগীদের চিকিৎসা সুযোগ-সুবিধার মধ্যে প্রয়োজন যথাযথ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন, আইসোলেশন, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসার সরঞ্জামাদি, হাসপাতাল শয্যাসংখ্যা এবং আইসিইউ। এখানে আইসিইউয়ের গুরুত্বটাই বেশি দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ রোগীরা খুব কম সময়ে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শ্বাসযন্ত্র অকার্যকর করে ফেলে। এটা প্রতিরোধে আইসিইউয়ের কোনো বিকল্প নেই। প্রতি লাখে মানুষের বিপরীতে জার্মানির আইসিইউ শয্যাসুবিধা ২৯, যুক্তরাষ্ট্রের ৩৪, ইতালির ১২ আর স্পেনের ১০টি। শেষের দুই দেশের মৃত্যুহার অন্য দেশগুলোর চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি। কিন্তু উল্টোচিত্র দক্ষিণ কোরিয়ায়Ñ মাত্র লাখে ১০টি। এর পরও তারা মৃত্যুর হার নামিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে এক ভাগেরও নিচে। খুব দ্রুত সংক্রমণের হারও কমিয়েছে। তা সম্ভব হয়েছে হোম কোয়ারেন্টিনের কঠোর পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে। এ ছাড়া দেশটি কমপক্ষে তিন লাখ জনগণের করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করেছে। তাদের মধ্যে ৯ হাজার জনের ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। বড় আকারে পরীক্ষার উদ্যোগের কারণে তারা সংক্রমণ ও মৃত্যুÑ দুটিই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সফল হয়েছে।
জার্মানিতে এ রোগে খুব অল্পসংখ্যক মানুষই মৃত্যুবরণ করেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যাপক হারে তরুণদের পরীক্ষা করানোয় জার্মানির এই নিম্ন মৃত্যুহারের অন্যতম কারণ। দেখা গেছে, যেসব দেশ পরীক্ষা করে কম এবং যারা খুব বেশি অসুস্থ, তাদেরই কেবল পরীক্ষা করতে চায়। তাদের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোন দেশের স্বাস্থ্যসেবা কতটা সক্ষম, সেটিও বড় ভূমিকা রাখছে। করোনা ভাইরাসের অন্য রোগীদের বাঁচাতে প্রয়োজন কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্র। যেসব রোগী পর্যাপ্ত শয্যা আর নিবিড় পর্যবেক্ষণের যন্ত্রাদি পাবেন, তাদের বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, না পেলে থাকে মৃত্যুঝুঁকি।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা : ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সেখানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ৯১ হাজার ৫৪৫। অথচ প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আগে দেড় মাসের বেশি সময় পেয়েছিল। দুর্ভাগ্য, ট্রাম্প প্রশাসন বিষয়টিকে প্রথমে গুরুত্ব দেয়নি। এপ্রিলজুড়ে সেখানে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ : গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর আগে চীনের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রচার ও প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করে। সরকার, গণমাধ্যম ও পত্রপত্রিকা সচেতনতা সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং জনগণ যথেষ্ট সচেতন হয়েছে বলে মনে হয়।
সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলোÑ
১. মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান সংকুচিত করা।
২. স্বাধীনতা দিবসের সব অনুষ্ঠান বাতিল।
৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা, এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত।
৪. অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণা।
৫. গণপরিবহন, নৌপথ, বিমান বন্ধ ঘোষণা।
৬. ২৬ মার্চ থেকে দেশব্যাপী হোম কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা।
৭. জনপ্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য সামরিক বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীকে নিয়োগ।
৮. সীমিত আকারে ব্যাংক, কাঁচাবাজার ও খাবার দোকান খোলা রাখা।
৯. অল্প আয়ের মানুষের জন্য খাদ্য-অর্থ সহযোগিতা প্রদান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৩১ মার্চ গণভবন থেকে ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খোঁজখবর নেন, প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
করণীয় : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শুরু থেকেই সময়োচিত দিকনির্দেশনা দিয়ে চলেছে। প্রথমেই তারা বলেছেÑ পরীক্ষা, পরীক্ষা, পরীক্ষা। দ্বিতীয়ত, বলেছেÑ সন্দেহভাজন ব্যক্তি (সোর্স) পৃথক্করণ, পরীক্ষা করা আর পর্যাপ্ত চিকিৎসা প্রদান। সর্বশেষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৬টি পরামর্শ দিয়েছে।
এসবের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে করণীয় নির্ধারণ করেছেÑ
১. সচেতনতা : অতিসাধারণ কিছু বিষয় মেনে চললে একজন নিজেকে করোনা ভাইরাস থেকে নিরাপদ রাখতে পারবে। সেগুলো হচ্ছেÑ
ক. হাঁচি-কাশি থেকে ১ মিটার (৩ ফুট) দূরত্ব বজায় রাখুন। খ. হাতের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছেÑ সন্দেহজনক স্থানে হাতের স্পর্শ লাগলে হাত ভালো করে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নাক-মুখ-চোখ হাতের স্পর্শ থেকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন। গ. মাছ, মাংস, ডিম ভালো করে সিদ্ধ করে খাবেন। ঘ. ভিড় এড়িয়ে চলুন। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার করোনামুক্ত ঘোষণা না করবে, ততক্ষণ এগুলো মেনে চলতে হবে।
২. সামাজিক দূরত্ব : বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু সামাজিক দূরত্বের নিয়ম-কানুন মেনে চললেই করোনার সংক্রমণে অর্ধেক মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব। কমপক্ষে ৩ ফুট বা ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম এড়ানো, গণপরিবহন ব্যবহার না করার মতো বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে।
৩. কোয়ারেন্টিন (সঙ্গনিরোধ) : ২ রকমÑ ক. প্রাতিষ্ঠানিক : যেখানে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কঠোরভাবে নিয়ম অনুসরণ করা হয়। এ রকম ব্যবস্থা যত বৃদ্ধি করা যাবে, তত মানুষ নিরাপদ থাকবে। খ. হোম কোয়ারেন্টিন বাড়িতে দুই রকমÑ ১. সুস্থ মানুষ যাতে আক্রান্ত না হয়, এ জন্য তারা নিজেরাই সব নিয়ম-কানুন মেনে নিজে এবং নিজের পরিবারকে নিরাপদ রাখবেন। ২. সন্দেহভাজন ব্যক্তি সবার থেকে আলাদা থাকবেন কমপক্ষে ১৪ দিনÑ আলাদ কক্ষ, আলাদা খাবার গ্রহণ, আলাদা পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ রাখার জন্য তাকে এটি করতে হবে।
৪. পরীক্ষা (রোগ নির্ণয়) : ইতোমধ্যে সরকার পরীক্ষার সুযোগ অনেক বৃদ্ধি করেছে। ২৯টি ল্যাবের পরিকল্পনায় ১১টি চালু করেছে। আরটি-পিসিআর সব সময় সঠিক নির্ণয় নাও করতে পারে। এ ক্ষেত্রে উপসর্গ যাদের আছে, তাদের ২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয়বার করতে হবেÑ এ পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
৫. চিকিৎসা : কোভিড-১৯ রোগীদের আইসোলেশন (বিচ্ছিন্নকরণ) বাধ্যতামূলক। কারণ এত দ্রুত ছড়ানো রোগ এর আগে দেখা যায়নি। এ জন্য পরীক্ষা, চিকিৎসা ও রোগীদের চলাচলÑ এ দেশের অন্য সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে হবে। কোনোক্রমেই কোভিড-১৯ রোগীর সঙ্গে অন্য রোগীদের এক হাসপাতালে রাখা সঠিক হবে না। কোয়ারেন্টিন এবং আইসিইউসহ হাসপাতালের সংখ্যা পর্যাপ্ত বাড়িয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে।
৬. স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকি নিরসনে ব্যবস্থা : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১ এপ্রিল বলেছেন, তাদের পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (চচঊ) কমে আসছে। এ কারণে পিপিইর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। যারা কোভিড ১৯-এর সংস্পর্শে না আসবেন, পিপিই তাদের ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন নেই। পিপিই পরীক্ষা কিটসহ সব প্রয়োজনীয় জিনিস পর্যাপ্ত মজুদ রাখতে হবে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিবহন, খাবারসহ সব নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৭. সমন্বয় : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সব বিভাগের ও সংশ্লিষ্ট আন্তঃমন্ত্রণালয় ঘনিষ্ঠ সমন্বয় রাখতে হবে।
৮. নেতৃত্ব : পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কার্যক্রমে সঠিক নেতৃত্ব চেইন অব কমান্ড ও সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি। মুহূর্তের মধ্যেই জরুরি সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজন হতে পারে।
৯. অন্য রোগীদের চিকিৎসা : ঢাকা বা বিভাগীয় শহরের বড় বড় হাসপাতাল অন্য রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট রাখতে হবে। কোনোক্রমেই যেন অন্য রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত এবং কোভিড-১৯ রোগীদের সঙ্গে সংমিশ্রণ না হয়।
১০. মাস্ক ব্যবহার : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার বলেছে, কোভিড ১৯-এর রোগী বা তাকে বহনকারী ব্যক্তি ছাড়া কারও মাস্ক ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। অহেতুক মাস্ক ব্যবহার বরং ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
গোটা বিশ্ব আজ করোনা ভাইরাসের থাবায় বিপর্যস্ত। এগিয়ে চলেছে এক অজানা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকেÑ মানুষের জীবন গভীর সংকটের মুখোমুখি, অচল হয়ে পড়েছে সভ্যতা, ধ্বংসের মুখে বিশ্ব অর্থনীতি। এ মুহূর্তে অজানা এক ভয়ঙ্কর লড়াইয়ের মুখোমুখি বিশ্ববাসী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এ রকম ভয়াবহ সংকট বিশ্ববাসী দেখেনি। অতীতের সব দুরবস্থা অতিক্রম করে চলেছে করোনা ভাইরাসÑ এক অদৃশ্য অণুজীব। ব্যর্থ হচ্ছে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, মহাশক্তি ও অর্থনীতি। মানছে না ধনী-দরিদ্র, সাদা-কালো, ধর্ম-অধর্ম, সীমানাÑ এক কাতারে নিয়ে এসেছে গোটা বিশ্বকে।
আমাদের বাংলাদেশের রয়েছে লড়াইয়ের দীর্ঘ ইতিহাস। লড়াই করে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা এনেছি, এনেছি গণতন্ত্র। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে চলেছেন। আজ বাংলাদেশের সব মানুষকে দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষ কঠিন দৃঢ় ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে। বাংলাদেশের মানুষ যখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তখন পরাজয়ের ইতিহাস নেই। আজ এমনই এক সময় যখন কেউ নিরাপদ নয়। তাই সবাইকে সব নিয়ম-কানুন, নির্দেশনা অনুসরণ করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। এ লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে।