করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে কানাইখালী পুরনো ষ্টেডিয়ামে কাঁচা বাজারের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে জেলা সদরের প্রধান কাঁচা বাজারের কার্যক্রম নীচা বাজার থেকে ষ্টেডিয়াম মাঠে স্থানান্তর করা হয়। জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় স্থানীয় সংসদ সদস্য মাঠে বাজারের কার্যক্রম শুরু করেন। এতে সাধারন মানুষ খুশি হলেও ব্যবসায়ীরা জানান ক্ষোভ। হঠাৎ করে কোন রকম পরিকল্পনা বা স্থাপনা তৈরী না করেই এভাবে বাজার স্থানান্তর করায় তাদের মালামাল নষ্ট হবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, খন নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল, জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ , পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা , নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি সহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ।
বাজারের অনেক ব্যবসায়ী জানান, খোলা মাঠের মধ্যে ব্যবসা করতে তাদের সমস্যা হবে। কোন রকম পরিকল্পনা তাদের নেওয়া হয়নি। বাজারের শুরুতেই বৃষ্টি শুরু হওয়ায় তাদের মালামাল রেখে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে হয়েছে। এছাড়াও ক্রেতারাও বৃষ্টিতে দাঁড়াতে পারবেনা। বর্তমান বৈশাখ মাস যেকোন সময় কাল বৈশঅখী ঝড় শুরু হতে পারে। এতেকরে তারা সহ ক্রেতারাও চরম বিপতে পড়বে। বিশেশ করে বৃষ্টিতে পানি জমে থাকলে তাদের তাজা মাছগুলোও হারিয়ে যাবে। তাদের মালামাল সঙগ্রহ করার সেরকম কোন ব্যবস্থাও নাই এখানে। যদি তাদের জন্য মাথার উপরে টিনের চালা করে দেওয়া হয় তাহলে তাদের ব্যবসা করা সম্ভব হবে। আর তা না হলে এখানে খোলা মাঠে ব্যবসা হবেনা।
তবে ক্রেতারা বলেন, সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে বাজার করার জন্য এই মাঠে বাজার স্থানান্তর করাটা একটা ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে। নিরাপদে বাজার করা যাবে। নীচাবাজারে অনেক মানুষের সমাগম হওয়ায় সেখানে নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন তারা। এখন এখানে ফাঁকা স্থানে বাজার করতে পারায় তারা খুশি। বাজারে অনেক লোকজনের মাঝে বাজার করতে তাদের সমস্য ছিল। এখন আর সেই সমস্যা হবেনা। এ বিষয়ে নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি বলেন, নাটোর পৌর এলঅকার সবচেয়ে বড় এবং জমজমাট বাজার হলো নীচাবাজারের এই বাজার। এখানেই এক বাজারের রয়েছে কাঁচা তরকারী ,মাছ, মাংস সহ মুদিখানা সামগ্রী। এক স্থানেই পাওয়া যায় সকল সুবিধা। সেকারনে এই বাজারে মানুষের সমাগম অনেক বেশী। আর এতে করেই করোনা ভাইরাস সংক্রমন হওয়ার সম্ভবনাও বেশী। নেই চিন্তা করেই জেলা ও প্রলিশ প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে পৌরসভা সিন্ধান্ত গ্রহন করে বাজারটি খোলা মাঠে স্থানান্তরের। সেই হিসেবেই নীচা বাজারকে ফাঁকা করতে সড়িয়ে নেওয়া হয় মাছ ও কাঁচা তরকারীর বাজার। যদিও এটা সাময়িক সময়ের জন্য করোনার প্রভাব শেষ হলেই পুনরায় সকলকে পুর্বের স্থানে বসার অনুমতি দেওয়া হবে।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন , করোনা ভাইরাস রোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনেক কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। সেজন্য পুলিশ প্রশাসন সারা দিন রাত নাটোরের মানুষের কথা চিন্তা করে কাজ করছেন। কিভাবে নাটোরের সাধারন মানুষকে করোনার ভয়ার্ত হাত থেকে নিরাপদে রাখা যায়। তারা নাটোরবাসীর কাছে সচেতন থাকার অনুরোধ করেন। নীচাবাজারটি অনেক ছোট জায়গার ওপর অনেক ধরনের ব্যবসা চলছিল যা নাটোরবাসীর জন্য বিপদজনক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ওই বাজারটিতে মানুষ শরীরের সাথে শরীর লাগিয়ে চলাচল করতো। এতে করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমন হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশী। এখানে বাজারের কিছু অংশ স্থানান্তর করায় এখন ক্রেতারা সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে পারবেন। এই বাজারটি এক মুখি করা হবে। যাতে করে মানুষ সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে বাজার করতে পারে। এছাড়াও বাজারের নিরাপত্বার জন্য পুলিশ সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। কোন ধরনের সমস্যা হলেই প্রশাসনকে তা অবহিত করার অনুরোধ করেন তিনি। স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম, শিমুল, জানালেন, নাটোরবাসীকে করোনা ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করতে এই বাজারটি স্থানান্তর করা হয়েছে। এখানে একটু কষ্ট করে সকল ব্যবসায়ীদের থাকার অনুরোধ করেন। সমস্যা সমাধান হলেই আপনাদের আবার পুরাতন স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। যেকোন সমস্যায় তিনি বাজারের ব্যবসায়ীদের পাশে থাকবেন। কোন সমস্যায় পড়ে তাদের ব্যবসার যেন কোন ক্ষতি না হয় সেদিকে তিনি নিজে খেয়াল রাখবেন। প্রয়োজনে তার সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলেন তিনি।