করোনা ভাইরাস সংক্রমণ জয় করা ২৩ পুলিশ সদস্যকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সংবর্ধনা দিয়েছে নাটোর জেলা পুলিশ। আজ সোমবার দুপুরে নাটোর পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা তাদের হাতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। ফুলেল শুভেচ্ছা শেষে তাদের মিষ্টি মুখ করানো হয়। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকরাম হোসেন,সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাতসহ জেলার সকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাবৃন্দসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
করোনা জয়ী ২৩ পুলিশ সদস্যের মধ্যে ইন্সপেক্টর তৌহিদুল ইসলাম, কনস্টেবল সাজ্জাদ হোসেন এবং কনস্টেবল এলিজা খাতুন তাদের বক্তব্যে করোনাকালীন সময়ে আইসোলেশনে থাকা প্রায় এক মাসের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে আমরা ফিরে এসেছি। আইসোলেশন সেন্টারে জেলা পুলিশের খাদ্য, চিকিৎসা ও বিনোদনের ব্যবস্থা রাখাসহ সার্বক্ষণিক সহযোগিতা ও সমর্থন দিয়ে যাওয়া এবং মনোবলকে সতেজ রেখে মহান স্রষ্টার কৃপায় আমরা করোনা জয়ে সক্ষম হয়েছি। প্রথমে যখন তাদের করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে তখন তারা হঠাৎকরেই মনোবল হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু পুলিশ সুপার মহোদয়ের কথায় ও দিক নির্দেশনায় তারা তাদের মনোবল ফিরে পান। প্রথমে তারা ভেবেছিলেন হয়তো আর পরিবার পরিজনের কােিছ ফিরে যেতে পারবেন না। এখান থেকেই তাদের বিদায় নিতে হবে। কিন্তু পুলিশ সুপার স্যারের প্রতিনিয়ত পরামর্শ ও বিনোদনমুলক আচরনে তারা চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা নিয়ে আজ তারা করোনাকে জয় করেছেন। এখন তারা নিজেরাই প্লাজমা থেরাপি দিতে প্রস্তুত হয়েছেন। তারা বুঝতে পেরেছেন করোনা আক্রান্ত হলে মানুষের কি অবস্থা হয়। সেকারনে তারা সবসময় প্লাজমা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন।
জেলা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত জেলা পুলিশের প্রায় এক হাজার একশ’ সদস্যের মধ্যে ৪৮৭ জনের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরীক্ষা করা হয়। আক্রান্তের পরে দু’দফায় পরীক্ষা শেষে নেগেটিভ রিপোর্ট প্রাপ্তি সাপেক্ষে ২৩ জন সুস্থ্য হয়েছেন এবং অবশিষ্ট একজন চিকিৎসাধীন আছেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, মানুষের কল্যাণে জীবন বাজি রেখে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে পুলিশ সদস্যরা। তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যকর সকল পদক্ষেপ গ্রহন করেছে জেলা পুলিশ। যে কোন জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলায় এম্বুলেন্স, কুইক রেসপন্স টিম, থানা কেন্দ্রিক আইসোলেশ সেন্টার প্রস্তুত রয়েছে। আমাদের সার্বক্ষণিক সাহস ও সমর্থন প্রদান এবং নিজেদের মনোবল চাঙ্গা থাকায় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত পুলিশ সদস্যরা সুস্থ্য হয়ে ফিরে এসেছেন এবং আজ থেকে তাঁরা সকলেই আবার দেশের কল্যাণে ও মানুষকে নিরাপদ রাখতে কাজ শুরু করবেন। করোনা জয়ী পুলিশ সদস্যরা এক একজন দেশের রত্ন। কিভাবে কঠিন পরিস্থিতি পার করতে হয় তা তারা বুঝতে পেরেছে। একজন পুলিশ সদস্যরও কিন্তু পরিবার রয়েছে। তাদের কিছু হয়ে গেলে সেই পরিবারের কি হবে সেই দিকও তাদের মাথায় রাখতে হবে। একটা পুলিশ সদস্য একটা পরিবারের জীবিকার হাতিয়ার।তাই করোনাকে ভয় পেয়ে নয় মনোবল চাঙ্গা রেখে তাকে মোকাবেলা করতে হবে। করোনা জয়ী নাটোর জেলা পুলিশের এক ইন্সপেক্টর, চার সাব-ইন্সপেক্টর, তিন এসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর, ১৩ কনোস্টেবলসহ ২১ জন এবং ইন্ড্রাশট্রিয়াল পুলিশের এক সদস্য ও থানায় কর্মরত বিশেষ আনসারের এক সদস্য রয়েছেনে।