ডেস্ক নিউজ
তাৎক্ষণিকভাবে ফলাফল পেতে এবং আরও বেশি মানুষকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার আওতায় আনতে ‘অ্যান্টিজেন টেস্ট’ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শিগগির দেশের কিছু সরকারি হাসপাতালে এই পরীক্ষা চালু হবে। এই টেস্টের মাধ্যমে নমুনা দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ফলাফল পাওয়া যাবে।
পাশাপাশি এ মাসেই কিছু ‘কভিড-১৯’ হাসপাতালকে ‘নন-কভিড’ ঘোষণা করা হবে। অর্থাৎ যেসব হাসপাতালে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর কয়েকটিতে আর এই সেবা দেওয়া হবে না।
সোমবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান। তাইওয়ানের দেওয়া বেশ কিছু স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম নিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দেশে বর্তমানে রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পলিমারাইজ চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) টেস্টের মাধ্যমে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট ও অ্যান্টিজেন টেস্ট পদ্ধতিতেও এ পরীক্ষা করা যায়। সরকার র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট করার অনুমোদন দেবে না। তবে শিগগির অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরুর জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান তিনি। তবে কবে থেকে এই পদ্ধতির পরীক্ষা চালু হবে এবং এতে খরচ কেমন হবে, তা সুনির্দিষ্ট করে জানাননি মন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুহার কমেছে। সুস্থতার হার বেড়েছে। করোনা হাসপাতালগুলোর ৬০ থেকে ৭০ ভাগ বেড খালি থাকছে। এমন প্রেক্ষাপটে এ মাসেই কিছু হাসপাতালকে নন-কভিড ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, যেখান থেকে আগে, সাশ্রয়ী দামে ও সহজে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে, সেখান থেকেই নেওয়া হবে।
করোনা মোকাবিলায় নেওয়া প্রকল্পের আওতায় ভেন্টিলেটর, আইসিইউ বেডসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনে ফেলে রাখার কারণ জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে গেছে। তবে এসব সরঞ্জাম সব সময়ই প্রয়োজন হয়। যেসব হাসপাতালে দরকার এবং নতুন যেসব হাসপাতাল হবে সেখানে এসব ব্যবহার করা হবে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম দিল তাইওয়ান : করোনাভাইরাস মোকাবিলায় তাইওয়ান (চায়না তাইপে) বাংলাদেশকে বেশ কিছু স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এক লাখ সার্জিক্যাল মাস্ক, এক হাজার ৬০০ এন৯৫ মাস্ক, ২০ হাজার কাপড়ের মাস্ক, ১০ হাজার ফেস শিল্ড, ৫০০ পিপিই, ২০০ গগলস ও দুটি ভেন্টিলেটর। বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ী গ্রুপ ওয়ালটন এ ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করেছে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সম্মিলিত উদ্যোগ থাকায় সীমিত সম্পদ নিয়েও বাংলাদেশ ঠিকভাবে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করতে পারছে। ওয়ালটনের মতো অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানকেও এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি তাইওয়ানকে এ সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও এ জন্য তাইওয়ানকে অভিনন্দন জানান।
ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে : অনুষ্ঠানে মোস্তাফা জব্বার বলেন, করোনাকালে দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দেশে মাত্র আট লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করত। এ বছরের জানুয়ারিতে দেশে ৯ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেছে। ব্যান্ডউইথ ছিল এক হাজার জিবিপিএস। এই আগস্টে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে ১০ কোটি হয়েছে, সারাদেশে দুই হাজার ১০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হচ্ছে। প্রত্যন্ত গ্রামেও দ্রুতগতির ইন্টারনেটের চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান। এ সময় বাণিজ্য সচিব মো. জাফর উদ্দীন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব নূর-উর-রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মো. খুরশিদ আলম, ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক লিয়াকত আলী, ঢাকায় তাইওয়ান এক্সটার্নাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক তিথমি ডব্লিউ ডি সো, ম্যানেজার রঞ্জন চক্রবর্তী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।