নিজেস্ব প্রতিবেদক
নাটোরে ১৪ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি দখলদারদের হাত থেকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন একটি পরিবার। আজ শুক্রবার স্থানীয় একটি রেস্তোরায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমির প্রকৃত মালিক দাবি করা মরহুম হযরত আলীর মেয়ে ভুক্তভোগী হাজেরা বেগম। লিখিত বক্তব্যে হাজেরা বেগম দাবি করেন, ১৯৫৮ সালে জীবন জীবিকার প্রয়োজনে মরহুম হযরত আলী ঢাকার নরসিংদী থেকে নাটোর শহরের বড়হরিশপুর এলাকায় এসে বসবাস শুরু করেন। এরপর তিনি স্থানীয় প্রয়াত অজিৎ নাথ চক্রবর্তীর কাছ থেকে বিভিন্ন দাগে ১একর ৪৬ শতাংশ জমি কিনে বাড়ী করেন। কিন্তু সেই সম্পত্তি দখল করতে উঠে পড়ে লাগে স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিগ্রাসী রহমান পিকে ও তার ভাই রহমত পিকে। তারা ওই জমি বিক্রি করার জন্য হযরত আলীর ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। ব্যর্থ হয়ে ভূমিগ্রাসীরা স্বদলবলে হযরত আলীর পরিবারকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে তাদের ক্রয় করা পুরো সম্পত্তি দখলে নেয়। পরবর্তীতে তারা ১৯৭৬ সালের ডিসেম্বর মাসে হত্যার উদ্দেশ্যে হযরত আলীর ওপর হামলা চালিয়ে গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করে । ওই ঘটনায় নাটোর মহকুমা প্রশাসকের দপ্তরে ৬-৭জনকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া নি¤œ আদালত এবং উচ্চ আদালতে চলা মামলায় হযরত আলীর পক্ষে রায় এলেও ক্ষমতা ও প্রভাব বিস্তার করে জমি নিজেদের দখলে রাখে ভূমিগ্রাসী রহমান পিকে ও রহমত পিকে। পরে পার্শ্ববর্তী রামাইগাছী গুচ্ছগ্রামে স্বপরিবারে মানবেতর বসবাস শুরু করেন হযরত আলী।
সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করা হয়, হযরত আলীর ক্রয় করা জমির তিনটি দলিল রয়েছে। কিন্তু রহমান ও রহমত গ্যাংদের কাছে একই জমির ১৩টি দলিল রয়েছে। এছাড়া, ওই জমি ভূমিগ্রাসীদের নয় জন্যই এতবছরেও তারা ওই জমিতে কোন স্থায়ী অবকাঠামো গড়ে তুলতে পারেননি। হযরত আলীর মৃত্যুর পর দীর্ঘ ৪৩ বছর নানাভাবে চেষ্টা করেও জমিটি ফিরে পাননি অসহায় পরিবারটি। এই ভূমি গ্রাসীদের অত্যাচারে তারা দীর্ঘদিন মানবেতর জীবন যাপন করে আসছেন। পরবর্তীতে রহমান পিকে ও তার ভাই রহমত পিকের মৃত্যুর পর তাদের পরিবারের সদস্যরা ওই জমি ভোগদখল করতে থাকেন। এ অবস্থায় নিজেদের পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল এবং স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ এবং সহযোগিতা কামনা করেছেন। নতুবা তারা স্বপিরবারে আতœহত্যার পথ বেছে নেবেন বলে হুশিয়ারি দেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে মরহুম হযরত আলীর স্ত্রী সাহারা বেওয়া, তার তিন ছেলে হাসান ,হোসেন ও কাসেম এবং তিন মেয়ে হাজেরা বেগম ছাড়াও আনোয়ারা বেগম ও রাবেয়া বেগমসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে মরহুম রহমান ও মরহুম রহমত পিকের ভাই আব্দুর রশিদ পিকে জানান, তারা এই সম্পত্তি ক্রয়মুলে মালিক। খাজনা খারিজ করে ওয়ারিশন সুত্রে এই জমি বর্তমানে ভোগ দখল করছেন মৃত রহমত পিকের অংশীদাররা। প্রতিপক্ষ মরহুম হযরত আলীর পরিবার প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে তাদের বিরুদ্ধে অপ্রচার চালাচ্ছে।