ডেস্ক নিউজ
সদ্য সমাপ্ত আগস্ট মাসে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের মধ্যে সব থেকে ভালো পারফরম্যান্স করেছে। পারফরম্যান্স শুধু শীর্ষ স্থানটিই দখল করেনি বাংলাদেশের পুঁজিবাজার, দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভিয়েতনামের থেকে অনেকে এগিয়ে রয়েছে।
বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ইপিএলের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। একই ধরনের তথ্য উঠে এসেছে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনেও।
দুই প্রতিবেদনের তথ্যেই দেখা গেছে, আগস্ট মাসে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে ১৫ দশমিক ৮০ শতাংশ উত্থান হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভিয়েতনামের শেয়ারবাজারে উত্থান হয়েছে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ। ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ উত্থানের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রোমানিয়া।
ব্র্যাক ইপিএলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লকডাউনের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি একধরনের চাপে ছিল। আমদানি ও রফতানি কমলেও শক্ত অবস্থানে ছিল রেমিট্যান্স।
তৈরি পোশাক খাতে রফতানি আদেশ বাড়ায় এবং রেমিট্যান্সের গতি অব্যাহত থাকায় অর্থনীতিতে এখন স্বাভাবিকতা দেখা যাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেকর্ড ৩৯ বিলিয়ন ডলার হয়েছে- বলেও ব্র্যাক ইপিএলের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, মে মাসের শেষে শেয়ারবাজারে পুনরায় লেনদেন চালুর পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ২০ শতাংশ বেড়েছে। টেলিকম, ব্যাংক, ফার্মাসিউটিক্যালস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং প্রকৌশল খাত ভালো অবস্থানে রয়েছে।
শেয়ারবাজারের এই উত্থানের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের প্রশংসা করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এ বিষয়ে বলা হয়েছে, একটি কঠিন সময়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি এবং তার টিম সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের কারণে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছেন। বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের আইপিও আবেদন বাতিল করে দিয়েছেন।
এদিকে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগস্ট মাসে এশিয়ার শেয়ারবাজার উত্থান হয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বেশি ১৫ দশমিক ৮০ শতাংশ উত্থান হয়েছে। যা বিশ্বের শেয়ারবাজারেও সেরা পারফর্ম।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগস্ট মাসে বাংলাদেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রড ইনডেক্স বেড়েছে ১৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। যা এশিয়ারসহ বিশ্বের সেরা পারফরম্যান্স। বাংলাদেশের পরে এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উত্থান হয়েছে ভিয়েতনামের ভিএন সূচকে। আগস্টে এ সূচকটি বেড়েছে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ। এশিয়ার মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। দেশটির কেএসই-১০০ সূচক বেড়েছে ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ।
এই উত্থানের পর বাংলাদেশসহ এশিয়ার শেয়ারবাজার বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় বলে উল্লেখ করেছে ব্লুমবার্গ। মূল্য-আয় অনুপাত (পিই) বিবেচনায় তারা এ কথা বলেছে।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬ দশমিক ৫০ মূল্য আয় (পিই) নিয়ে সবচেয়ে বিনিয়োগযোগ্য অবস্থায় রয়েছে এশিয়ার কাজাগিস্তান। দ্বিতীয় স্থানে থাকা পাকিস্তানের বাজারে পিই ৭ দশমিক ৫০ পয়েন্ট।
১১ দশমিক ৮০ পিই নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। বাংলাদেশের আগে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। দেশটির শেয়ারবাজারের পিই ৮ দশমিক ৯০ পয়েন্ট।
এছাড়া ভিয়েতনামের ১৩ দশমিক ৮০, থাইল্যান্ডের ১৬ দশমিক ৫০, ফিলিপাইনের ১৭ দশমিক ৩০ এবং ভারতের শেয়ারবাজারের পিই ২৩ দশমিক ৯০ পয়েন্টে রয়েছে।