ডেস্ক নিউজ
বোরো মৌসুমের লবণাক্ততা সহনশীল দুটি ও আউশ মৌসুমে চাষাবাদের উপযোগী একটিসহ মোট তিনটি নতুন উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)। মঙ্গলবার জাতীয় বীজ বোর্ডের ১০৩তম সভায় ব্রি ধান৯৭, ব্রি ধান৯৮ ও ব্রি ধান৯৯ অবমুক্ত করা হয়। এর ফলে ব্রি উদ্ভাবিত সর্বমোট ধান জাতের সংখ্যা হলো ১০৫টি।
ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর জানান, নতুন জাতগুলোর মধ্যে ব্রি ধান৯৮ আউশ মৌসুমে চাষ উপযোগী জাত। এর ফলন প্রতি হেক্টরে ৫.০৯ থেকে ৫.৮৭ টন। এর দানা লম্বা ও চিকন, রং সোনালি। এ জাতের জীবনকাল ১১২ দিন। এ ধানের দানায় অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৭.৯ ভাগ এবং প্রোটিনের পরিমাণ শতকরা ৯.৫ ভাগ। ভাত হয় ঝরঝরে।
ব্রি ধান৯৭ ও ব্রি ধান৯৯ বোরো মৌসুমের উচ্চ ফলনশীল লবণাক্ততা সহনশীল ধানের জাত। এ জাতগুলো চারা অবস্থায় ১৪ ডিএস/মি এবং সমগ্র জীবনকাল ৮-১০ ডিএস/মি লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। ব্রি ধান৯৭-এর গড় জীবনকাল ১৫২ দিন এবং গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৪.৯ টন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে অনুকূল পরিবেশে হেক্টরপ্রতি ৭ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। এ জাতের ধানের দানায় অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৫.২ ভাগ এবং প্রোটিনের পরিমাণ শতকরা ৮.৬ ভাগ। এর চাল মাঝারি মোটা হওয়ায় বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর ও খুলনা অঞ্চলে অধিক জনপ্রিয় হবে।
ব্রি ধান৯৯-এর গড় জীবনকাল ১৫৫ দিন এবং গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৫.৪ টন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে অনুকূল পরিবেশে হেক্টর প্রতি ৭.১ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। এ জাতের ধানের দানায় অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৭.১ ভাগ এবং প্রোটিনের পরিমাণ শতকরা ৭.৯ ভাগ। এর চাল লম্বা ও চিকন হওয়ায় সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও খুলনা অঞ্চলে অধিক জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ জাতের কৌলিক সারিগুলো নির্বাচনের পর ব্রির গবেষণা মাঠে তিন বছর এর ফলন পরীক্ষা করা হয়। উক্ত কৌলিক সারিগুলো লবণাক্ততা সহনশীল ব্রি ধান৬৭-এর থেকে ফলন বেশি হওয়ায় প্রস্তাবিত জাত হিসেবে নির্বাচিত হয়। এরপর জাতীয় বীজ বোর্ডের মাঠ মূল্যায়ন দল বোরো ২০১৮-১৯ মৌসুমে কৃষকের মাঠে প্রস্তাবিত জাতের ফলন পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। কৃষকের মাঠে ফলন পরীক্ষা সন্তোষজনক হওয়ায় বোরো মৌওসুমের জন্য লবণাক্ততা সহনশীল ব্রি ধান৬৭-এর পরিপূরক জাত হিসেবে ব্রি ধান৯৭ ও ব্রি ধান৯৯ জাত দুটি অবমুক্ত করা হয়।