নিউজ ডেস্ক:
নতুন বাজেটে মোবাইল গ্রাহকের কথা বলার ওপর করের বোঝা আরও বাড়ছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করা হচ্ছে। বিশেষ করে মোবাইল কোম্পানিগুলো বিভ্রান্তিকর বিভিন্ন তথ্য দিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। নতুন বাজেটে মোবাইল কোম্পানিগুলো যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছেন সে সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার মাধ্যমে জনগণের কাছে সঠিক তথ্যটি উপস্থাপন করেছেন। আমাদের পাঠকদের জন্য নিচে প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকনের স্ট্যাটাসটি হবহু তুলে ধরা হলো-
‘‘টেলকো অর্থাৎ মোবাইল কোম্পানিগুলো প্রোপাগান্ডার দিক দিয়ে অনেক শক্তিশালী। শীর্ষ বিজ্ঞাপনদাতা হবার কারণে বিভিন্ন মিডিয়াকে দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বাজেটের পরপরই প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে।
মোদ্দা কথা হলো, বর্তমান মোবাইল সেবার উপর মূল্য সংযোজন কর, সম্পূরক শুল্ক ও সারচার্জসহ ২২ শতাংশ কর আগে থেকেই ছিল। যা সরকারকে দেয় টেলকো কোম্পানিগুলো। প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যমান করের সঙ্গে আরও ৫ শতাংশ যোগ করা হয়েছে।
কিন্তু মিডিয়াগুলো প্রভাবিত হয়ে এমনভাবে প্রচার করছে যে জনগণকে সরাসরি বাড়তি শতকরা ২৭ টাকা দিতে হবে, যা বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কারণ এখন কোনো গ্রাহককে শতকরা ২২ টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়না।
ভুলে গেলে চলবেনা, আমরা ৭ টাকা মিনিটও কথা বলেছি। কল আসতে যেতে টাকা খরচ হতো। ইন্টারনেট খরচ কমেছে শতগুণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণেই আজ ৫০ পয়সা মিনিটেও কথা বলা যায়।’’
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, কথা বলার ওপর (টকটাইম) ‘অতিরিক্ত’ ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক্ক আরোপের প্রস্তাব করা হচ্ছে। বর্তমানে মোবাইল সেবার ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক্ক এবং তার সঙ্গে ১ শতাংশ সারচার্জসহ মোট করের পরিমাণ প্রায় ২২ শতাংশ। এবারের বাজেটে বিদ্যমান করের সঙ্গে ‘বাড়তি’ পাঁচ শতাংশ যোগ হচ্ছে। বাড়তি করহার কার্যকর হলে তখন মোবাইল সেবায় মোট করহার দাঁড়াবে প্রায় ২৭ শতাংশ। ফলে গ্রাহকের কথা বলার খরচ যে আহামরি বেড়ে যাবে এই কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট আর বিভ্রান্তিকর তথ্য।
এদিকে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, মোবাইল সেবার বাইরে এখন প্রতি সিম সংযোজন এবং প্রতিস্থাপনে ১০০ টাকা নির্ধারিত কর দিতে হয়। অনেক আগেই সিমকে করের আওতায় আনা হয়। তবে প্রথমদিকে নির্ধারিত কর ছিল ৩০০ টাকা। ক্রমান্বয়ে বর্তমান সরকারের সময়কালেই এই করের হার কমিয়ে আনা হয়। অন্যদিকে গ্রাহকের সংখ্যা বাড়াতে নিজেরাই এই কর দিয়ে থাকেন মোবাইল অপারেটররা। হঠাৎ এই কর ফাঁকি দিতে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে মোবাইল অপারেটররা। আর এই জন্য-ই নতুন বাজেটের সময় মোবাইল অপারেটররা সুপরিকল্পিতভাবে প্রোপাগান্ডার আশ্রয় নিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।