হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জানাজায় অংশ নিতে হাটহাজারী মাদ্রাসায় নেমেছে হাজারো মানুষের ঢল। শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ দলে দলে আসতে থাকেন। বেলা যত বাড়ছে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে মানুষের ভিড় ততই বাড়ছে।
কক্সবাজার, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালীসহ আশপাশের জেলাগুলোর বহু কওমি মাদ্রাসা থেকে বিপুল শিক্ষার্থী ও আলেমরা জানাজায় অংশ নিতে আসছেন।
কুমিল্লা থেকে এসেছেন আব্দুর রহমান। নিজেকে প্রাক্তন ছাত্র পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘হুজুরকে শেষবারের মতো একবার দেখতে কুমিল্লা থেকে এসেছি। দেরিতে আসলে দেখতে পাবো না। তাই সকাল ৯টার আগেই মাদ্রাসায় চলে এসেছি। তিনি আমার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন। আমাদের অভিভাবক ছিলেন।’
তার মতো একই কথা জানিয়েছেন আবু ওবায়দা ফারুক।তিনি বলেন, ‘আমি সরাসরি উনার ছাত্র ছিলাম না। এইখান থেকে হেফজ বিভাগ থেকে পড়েছি। ২০০১ সালে মাদ্রাসা থেকে গিয়ে এখন অন্য একটি মাদ্রাসায় পড়াই। হুজুর মারা গেছেন শুনে সব কিছু বাদ দিয়ে চলে আসছি। উনাকে এক নজর দেখবো তাই।’
হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসার মজলিশে শূরার সদস্য নোমান ফয়জী জানান, আজ শনিবার বাদ জোহর দুপুর ২টার দিকে আল্লামা শফীর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। উনার বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ মাদানি জানাজা পড়াবেন। এরপর উনাকে মাদ্রাসার কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।
বৃহস্পতিবার মাদ্রাসার মজলিসে শুরার বৈঠকে আল্লামা শাহ আহমদ শফী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। এরপর অসুস্থবোধ করলে রাত ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার অবস্থা অবনতি হলে শুক্রবার বিকালে সেখান থেকে ঢাকার আসগর আলী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই হাসপাতালে মারা যান। শনিবার সকাল ৯টায় হাটহাজারী মাদরাসায় আল্লামা শফীর মরদেহ আনা হয়। বর্তমানে উনার মরদেহ মাদ্রাসা মাঠে রাখা হয়েছে। সেখানে শেষ বারের মতো তাঁকে দেখছেন মাদ্রাসার ছাত্র এবং তার ভক্তরা।
এদিকে হেফাজত আমিরের জানাজায় উপস্থিত হতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র ও হুজুরের ভক্তরা মাদ্রাসায় আসতেন। মাদ্রাসার মাঠ লোকে ভরপুর হয়ে যাওয়ার পর আশপাশের এলাকায়ও মানুষের ভিড় রয়েছে।
অন্যদিকে তার জানাজায় যেন অনাকাঙ্ক্ষিত কোনও ঝামেলা তৈরি না হয় সেজন্য হাটহাজারীতে ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।