সৌদি আরবের রাজতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ভিন্নমতাবলম্বীরা গঠন করলো বিরোধী দল। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় নির্বাসিত দেশটির নাগরিকেরা ‘ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি পার্টি’ নামের রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। বাদশাহ সালমানের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এটাই সৌদি আরবে প্রথম সংগঠিত রাজনৈতিক প্রতিরোধ।
মধ্যপ্রাচ্যে নিখুঁত রাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পরিচালিত একটি রাষ্ট্র সৌদি আরব। সেখানে রাজনৈতিক বিরোধিতার কোনো সুযোগ নেই। অতীতে যারাই এ ব্যবস্থার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন, দিতে হয়েছে চড়া মূল্য। সৌদি রাজপরিবারের বিরোধিতা করায় অনেককেই যেতে হয়েছে নির্বাসনে। তাদের বড় অংশই বসবাস করছেন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায়।
এতোদিন বিদেশ থেকেই সৌদি আরবের শাসন ব্যবস্থার সমালোচনা করে আসছিলেন তারা। অবশেষে ২৩ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে গঠন করেছেন রাজনৈতিক দল ‘ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি পার্টি’। বাদশাহ সালমানের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এটাই প্রথম সংগঠিত রাজনৈতিক প্রতিরোধ।
এই দলের নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে আছেন লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকারকর্মী ইয়াহা আসিরি। সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষাবিদ মাদায়ি আল-রশিদ, গবেষক সাঈদ বিন নাসের আল-গামদি, যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত আবদুল্লাহ আলাউদ এবং কানাডায় বসবাসরত ওমর আবদুল আজিজ।
ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি পার্টির নেতা ইয়াহা আসিরি বলেন, ‘চরম এক সংকটময় মুহূর্তে আমরা এই দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এবং শাসনকাজে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানো।’
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা মানেই প্রবল ক্ষমতাধর সৌদি রাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার পতন নয়। তবে তেলের দাম হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি জি-২০ বৈঠক নিয়ে ব্যস্ত সৌদি শাসকের জন্য এটি স্পষ্টত একটি চ্যালেঞ্জ আকারে হাজির হয়েছে।
আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের শক্তিধর এই দেশটিতে এর আগেও ২০০৭ ও ২০১১ সালে সৌদি আরবে বিরোধী দল গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেসব প্রচেষ্টা বেশি দূর এগোতে পারেনি। কারণ ক্ষমতাসীন রাজপরিবার সেই সময় রাজনৈতিক দল গঠনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন-পীড়ন অভিযান পরিচালনা ও গ্রেফতার করে।