সরকারের সাথে ভারতের টানা পোড়েনের সুযোগ নিতে মরিয়া বিএনপি। ভারতের বিভিন্ন মহলে বিএনপির পক্ষ থেকে যোগাযোগের খবর পাওয়া যাচ্ছে। লন্ডনে তারেক জিয়ার সঙ্গে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক নিয়েও বিএনপির মধ্যে আলোচনা চলছে।
বিএনপি’র একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ভারতের মন জয় করতে তারেক জিয়া ও বিএনপির পক্ষ থেকে ৫ বিষয়ে মুচলেকা দেয়া হয়েছে। ক্ষমতায় আসা নয় বরং এই মুচলেকা দিয়ে বিএনপি ভারতের আস্থা অর্জন করতে চায়, বলেও বিএনপি’র একাধিক সূত্র জানিয়েছে। ভারতকে বিএনপি যে, ৫ বিষয়ে অঙ্গীকার করেছে তা হলোঃ
১। জিয়া পরিবার বিএনপি’র মূল নেতৃত্বে থাকবে না
বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ এবং তারেক জিয়া ভারতীয় প্রতিনিধিদের কাছে এই মর্মে অঙ্গীকার করেছেন যে, বিএনপির মূল নেতৃত্বে জিয়া পরিবারের কেউ সক্রিয় থাকবেন না। তারেক এবং বেগম জিয়ার দলে ভূমিকা হবে উপদেষ্টার। সংশ্লিষ্ট সূত্র গুলো বলছে, বিএনপিকে জিয়া পরিবার মুক্ত করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছিল দীর্ঘদিন থেকেই। ভারতে এই পরামর্শেই এখন বিএনপি সাড়া দিতে রাজি, বলে জানা গেছে।
২। জামাতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করবে
দ্বিতীয় যে বিষয়ে বিএনপি ও তারেক ভারতের কাছে অঙ্গীকার করেছে, সেটি হলো জামাতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ। সূত্র গুলো বলছে, ভারতের পক্ষ থেকে গত ১২ বছর ধরেই বিএনপিকে জামাতের সঙ্গ ত্যাগ করবে পরামর্শ দিচ্ছিল। যদিও গত দেড় বছরে এই দুই দলের সম্পর্কের মধ্যে কিছুটা হলেও দূরত্ব তৈরি হয়েছে। কিন্তু দুই দলের সম্পর্কের আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ হয়নি। এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েও সম্মত বিএনপি এমন অঙ্গীকার করা হয়েছে বলেই জানা গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে।
৩। ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ
ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে এ রকম সুনির্দিষ্ট তথ্য আছে যে, বিএনপির কোন কোন নেতার সঙ্গে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের যোগাযোগ রয়েছে। এদের গোপন সম্পর্ক রয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যদি এ ধরনের সম্পর্ক থাকে, তা হলে তা বন্ধ হবে অবিলম্বে।
৪। চীন নীতি পরিবর্তন ও পুনঃমূল্যায়ন
বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের যে চীন নীতি তা পরিবর্তন করবে। চীনের সঙ্গে বানিজ্য ভারসাম্য তৈরি এবং অর্থনীতিতে চীন নির্ভরতা কমাতে কাজ করবে বিএনপি।
৫। সংখ্যা লঘুদের স্বার্থ এবং তাদের অধিকারের ব্যাপারে বিএনপি’র অবস্থান আরো স্পষ্ট এবং পরিষ্কার হবে।
বিএনপির অনেক নেতাই মনে করছেন, এ ধরনের অবস্থানের কারণে ভারতের বিএনপি’র প্রতি দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন হবে। তবে, একাধিক কূটনীতিক মহল মনে করেন, ভারত বিএনপির সঙ্গে কথা বলছে ঠিকই, কিন্তু তাদের কথা কতটুক বিশ্বাস করেছে, সেটাই দেখার বিষয়।