নাটোরের সিংড়ায় দ্বিতীয় দফা বন্যায় প্রায় দুইশ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৎস্য, কৃষি, প্রাণী সম্পদ, রাস্তা-ঘাটসহ অবকাঠামো খাতে এ ক্ষতি সাধন হয়েছে।
এ ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলো ছাড়াও প্রায় অর্ধশত ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত বুধবার মধ্য রাতে সিংড়া পৌর শহরের শোলাকুড়া এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে ১৯টি বাড়ি সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়। এসময় ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরো ২৫টি বাড়ি। ইতিমধ্যেই ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেন এবং আর্থিক সহায়তা দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী এড. জুনাইদ আহমেদ পলক। এদিকে শোলাকুড়া বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় শোলাকুড়া, সোহাগবাড়ি, কতুয়াবাড়ি, মহেশচন্দ্রপুর গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। অপরদিকে তাজুপর ইউনিয়নের হিয়াতপুর এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ঐ ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। এ উপজেলায় পানিবন্দি প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। উপজেলায় মোট ৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
এলজিইডি, সওজ, পাউবো, কৃষি ও মৎস্য অফিস জানায়, দু’দফা বন্যায় প্রায় ৫০ কি: মি: রাস্তার ক্ষতি সাধন হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার তালিকা করা হচ্ছে। এতে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হবার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বছর বন্যায় সড়ক ও জনপদের অধীনে সিংড়া-বলিয়াবাড়ি, সিংড়া-তাজপুর সড়কের বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গনে প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। পাউবো’র অধীনে আত্রাই নদী, গুরনই, বারনই, নাগর ও গোদাই নদীর বিভিন্ন বাঁধে ভাঙ্গনে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের তালিকা করা হচ্ছে। কৃষিতে এ উপজেলায় বন্যায় ৩২’শ হেক্টর রোপা আমন এবং ৩০ হেক্টর সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বন্যায় প্রথম দফায় প্রায় ৩ হাজার পুকুরের মাছ ভেসে যায়। পরের দফা বন্যায় আরো দেড় হাজার পুকুর ভেসে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক মৎস্যচাষী পথে বসেছে। এ খাতে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হবে।
সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিার পক্ষ থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হয়েছে, তাদেরকে পূণর্বাসন করা হবে।