নিউজ ডেস্ক:
সেমিফাইনালের স্বপ্ন জিইয়ে রাখতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না। ৩২১ রানের পাহাড় ডিঙিয়ে বাংলাদেশ জিতেছে ৭ উইকেটে। তাও আবার ৫১ বল হাতে রেখে। আর এটা সম্ভব হয়েছে অবশ্যই সাকিব আল হাসানের সৌজন্যে। দলের চরম প্রয়োজনের মুহূর্তে সাকিব আরও একবার দাঁড়িয়ে গেলেন বুক চিতিয়ে। দুরন্ত সাহসিকতার নজির হিসেবে করলেন বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, তাও আবার টানা দুই ম্যাচে। বাংলাদেশের হয়ে যে কীর্তি ছিল শুধু মাহমুদউল্লাহর।
তবে সোমবার অনেকগুলো রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন সাকিব। বিশ্বকাপে দলের প্রথম চার ইনিংসেই পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলা মাত্র চতুর্থ ক্রিকেটার হয়ে গেছেন সাকিব। এর আগে ১৯৮৭ বিশ্বকাপে নভজ্যোৎ সিং সিধু, ১৯৯৬ বিশ্বকাপে শচীন টেন্ডুলকার ও ২০০৭ বিশ্বকাপে গ্রায়েম স্মিথ প্রথম চার ম্যাচেই পঞ্চাশের বেশি রান করেছিলেন।
অপরাজিত ১২৪ রানের ইনিংস খেলার পথে তামিম ইকবালের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে ৬ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়ে গেছেন সাকিব। ৬ হাজার রান ছুঁতে সাকিবের লেগেছে ১৯০ ইনিংস। বীরেন্দর শেবাগ ও শিবনারায়ণ চন্দরপলদের মতো নিখাদ ব্যাটসম্যানদেরও ওয়ানডেতে ৬ হাজার করতে সাকিবের সমান ইনিংস লেগেছিল। কুমার সাঙ্গাকারা, অরবিন্দ ডি সিলভা, যুবরাজ সিংয়ের মতো ব্যাটসম্যানদেরও ৬ হাজার রানে পৌঁছাতে এর চেয়ে বেশি ইনিংস লেগেছিল।
সাকিবের মাহাত্ম্য বোঝা যাবে আরেকটি পরিসংখ্যানে। ওয়ানডেতে ২৫০ উইকেট পূরণ করতে মাত্র ১৯৯ ম্যাচ লেগেছে সাকিবের, যা কি না চামিন্দা ভাস ও কপিল দেবের মতো বোলারদের চেয়েও দ্রুত। কুমার সাঙ্গাকারার চেয়ে দ্রুতগতিতে রান করছেন, আবার চামিন্দা ভাসের চেয়ে দ্রুত উইকেট পাচ্ছেন, একজন ক্রিকেটারের গুরুত্ব বোঝাতে এর চেয়ে ভালো পরিসংখ্যান বোধহয় আর কিছু হতে পারে না।
আরেকটি জায়গায়ও অনবদ্য সাকিব। ওয়ানডেতে ৬ হাজার রান ও ২৫০ উইকেটের ডাবলে পৌঁছানো দ্রুততম ক্রিকেটার এখন সাকিব। ডাবল পূর্ণ করতে সাকিবের লেগেছে মাত্র ২০২ ম্যাচ। এর আগে রেকর্ডটির মালিক ছিলেন শহীদ আফ্রিদি, লেগেছিল ২৯৪ ইনিংস। জ্যাক ক্যালিসের লেগেছিল ২৯৬ ইনিংস, আর সনাথ জয়াসুরিয়ার লেগেছিল ৩০৪ ইনিংস।
বিশ্বকাপে টানা দুই সেঞ্চুরি নেই খুব বেশি ক্রিকেটারের। সোমবার সেঞ্চুরি দিয়ে মার্ক ওয়াহ, কুমার সাঙ্গাকারা, রাহুল দ্রাবিড়দের মতো কিংবদন্তিদের পাশে নাম লেখালেন সাকিবও। সাকিবের আগেই অবশ্য গত বিশ্বকাপে এই তালিকায় নিজের নাম উঠিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ।
৮৩ বলে সেঞ্চুরি তুলেছেন সাকিব। এ বিশ্বকাপে যেটি দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরিও এটি। সাকিব ভেঙেছেন নিজের রেকর্ডই। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ৯৫ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন।
এই ইনিংসের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষস্থানটা আবারো পুনরুদ্ধার করলেন সাকিব। জো রুট ও রোহিত শর্মার সমান দুই সেঞ্চুরিতে সাকিবের রান এখন ৩৮৪।