সেবা নিতে ভূমি অফিসে গিয়ে পদে পদে দুর্ভোগ আর হয়রানির অভিযোগ বরাবরের। জনগণের এই ভোগান্তি লাঘবে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর ভূমি অফিস। ভূমি অফিসের সেবা মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে এখানে শুরু হয়েছে ভ্রাম্যমাণ ভূমিসেবা কার্যক্রম। জেলায় প্রথমবারের মতো সৃজনশীল এই উদ্যোগ নিয়েছেন হোসেনপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওয়াহিদুজ্জামান।
জানা গেছে, হোসেনপুর উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়ন রয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে সপ্তাহে দুই দিন পুরো অফিস নিয়ে হাজির থাকবেন এসি ল্যান্ড। এই উদ্যোগে ই-নামজারি আবেদন, নামজারি (খারিজ) শুনানি, অনুমোদিত নামজারি (ডিসিআর) ও খতিয়ান সংগ্রহ, ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) দেওয়াসহ ভূমিসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা তাত্ক্ষণিকভাবে সমাধান বা পরামর্শ দেওয়া হবে। শুধু তা-ই নয়, এক দিনেই একসনা চান্দিনা ভিটি নবায়ন করে দেবে এই ভ্রাম্যমাণ ভূমিসেবা কার্যক্রম।
উপজেলা ভূমি অফিস চত্বরে গত রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রাম্যমাণ ভূমিসেবা কার্যক্রমটির উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম জাহিদুর রহমান। এদিনই উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নে কার্যক্রমটি শুরু করা হয়।
উপজেলা ভূমি অফিস জানায়, প্রথম দিনেই ১০ জনের নামজারি শুনানি হয়। ৩০ জন তাঁদের জমির খাজনা দিয়েছেন। এ ছাড়া জমিসংক্রান্ত নানা সমস্যার পরামর্শ নিতে জড়ো হয়েছিলেন অর্ধশতাধিক মানুষ। তাঁদের সমস্যা শুনে করণীয় সম্পর্কে এসি ল্যান্ড পরামর্শ দিয়েছেন।
ভ্রাম্যমাণ ভূমিসেবা উদ্যোগটি লোকজনের মধ্যে এরই মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। সেবা নিতে আসা শাহেদল ইউনিয়নের গোলাপ মিয়া বলেন, ‘আমরা আগে সেবার জন্য অফিসে অফিসে ঘুরতাম। এখন ভূমি অফিসই মানুষের কাছে যাচ্ছে। এতে আমাদের সময় ও অর্থ দুই-ই বাঁচবে। দালালের খপ্পরে পড়তে হবে না। এলাকাতেই ভূমি খারিজ করা ও খাজনা দিতে পারব।’
এসি ল্যান্ড কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভূমিসেবা গ্রহণে সাধারণ মানুষের সুবিধার কথা চিন্তা করেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে সপ্তাহে দু-এক দিন করে আমরা যাব। একটা কার্যপদ্ধতি এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে আগামী ১৫ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ ভূমিসেবা যাচ্ছে আড়াইবাড়িয়া ইউনিয়নে। সেখানে জামাইল বাজারে আমরা বসব। অক্টোবরের ১৮ তারিখ সেবা নিয়ে যাব গোবিন্দপুর ইউনিয়নের গাঙ্গাটিয়া জমিদারবাড়ির কাছে। এভাবে পর্যায়ক্রমে সব ইউনিয়নে ভ্রাম্যমাণ ভূমিসেবা যাবে।’ তিনি জানান, মাসে ৯ দিন তাঁরা মাঠেঘাটে সেবা নিয়ে ঘুরবেন। হোসেনপুর পৌরসভা, শাহেদল ইউনিয়ন, আড়াইবাড়িয়া, গোবিন্দপুর, সিদলা, জিনারি ও পুমদি ইউনিয়নে এই সেবা কার্যক্রম চলবে।