নিউজ ডেস্ক:
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ কতিপয় সংবাদ মাধ্যমে ঘুরেফিরে এসেছে পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ পরিবর্তনের বিষয়টি। অনেকেই এর পক্ষে বিপক্ষে জানিয়েছেন মতামত। তবে এই বিষয়ে সরাসরি শিক্ষামন্ত্রণালয়ের কোন মন্তব্য না পাওয়ায় বিষয়টিকে ঘিরে রয়ে গেছে অনেকটাই ধোঁয়াশা। পাবলিক পরীক্ষার জিপিএ কি আসছে কোন নতুন নিয়মে? বাংলার আলোর আজকের আয়োজনে জেনে নিন বিস্তারিত।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানা যায়, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের পাবলিক পরীক্ষায় গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ (জিপিএ) পদ্ধতিতেই ফল প্রকাশিত হবে। তবে ফলের সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫–এর পরিবর্তে ৪ হবে। আর কত নম্বরের মধ্যে কত জিপিএ হবে, তার স্তর বা শ্রেণিসংখ্যা বাড়বে। যেমন এখন ৮০ থেকে ১০০ নম্বর পেলে জিপিএ-৫ ধরা হয়। এই স্তর ভেঙে দুই বা তারও বেশি করার পরিকল্পনা হচ্ছে।
গ্রেডের স্তর নির্ণয়ে তিনটি বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। প্রস্তাবগুলো শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে। তবে আগামী জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা থেকে নতুন এই পদ্ধতি চালুর পরিকল্পনা চলছে। শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, এখানে পড়াশোনার ওপর প্রভাব পড়বে না। শুধু ফলাফল তৈরি হবে নতুন পদ্ধতিতে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এবং বিদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য আনতেই এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে মনে করেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক।
২০০১ সালে পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলে সনাতন পদ্ধতিতে নম্বর দেওয়ার পরিবর্তে গ্রেড পদ্ধতি চালু করা হয়। ২০০৩ সালে সর্বোচ্চ ৫ সূচকের (পয়েন্ট বা স্কেল) ভিত্তিতে ফল প্রকাশ করা হয়। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন দুজন কর্মকর্তা বলেছেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সহ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে পরীক্ষার ফল সর্বোচ্চ ৪ সূচক (সিজিপিএ) ধরে করা হয়। তবে পাবলিক পরীক্ষায় কিউমুলেটিভ গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ (সিজিপিএ) পদ্ধতিতে ফল তৈরির সুযোগ নেই। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কয়েকটি বছরের ফল যোগ করে সিজিপিএ পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হয়। কিন্তু জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষায় একটি পরীক্ষার ভিত্তিতে ফল তৈরি হয়। তাই এখানে জিপিএ পদ্ধতিতেই ফল তৈরি করা হবে। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সূচক ৪ ধরে বিদ্যমান গ্রেডের সাতটি স্তরের পরিবর্তে ১৩টি করার একটি প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে। বিকল্প হিসেবে আরও দুটি প্রস্তাব রয়েছে।
বর্তমানে গড়ে ৮০ থেকে ১০০–এর মধ্যে নম্বর পেলে সেটিকে জিপিএ-৫ বলা হয়। যাকে লেটার গ্রেডে বলা হয় ‘এ’ প্লাস। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেডের বিদ্যমান স্তরে পার্থক্যটা বেশি। এখানে কেউ গড়ে ৮০ নম্বর পেলেও সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫, আবার কেউ গড়ে ৯৯ নম্বর পেলেও একই ফল। অন্যদিকে ৭৯ পেলেও মাত্র ১ নম্বরের জন্য জিপিএ-৫ হয় না। এ জন্য বিদ্যমান স্তরকে আরও বেশি করাসহ তিনটি প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছেন তাঁরা।