নিউজ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন সফরে বিদ্যুতের দুই প্রকল্পে ২৩৭ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি সই হবে। ডিপিডিসি অর্থাৎ রাজধানী ও এর আশপাশ এলাকায় বিদ্যুৎ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্পে ১৪০ কোটি ২৯ লাখ ডলার ঋণ দেবে দেশটি। এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিতরণ গ্রিডলাইন শক্তিশালীকরণ প্রকল্পে ঋণ পাওয়া যাবে ৯৭ কোটি ডলার। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইআরডি কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী আগামী ১ থেকে ৪ জুলাই চীন সফর করবেন। এ সময় ঋণ চুক্তি সই হবে। তবে প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে আরও একটি বা দুটি প্রকল্পের ঋণ গ্রহণের প্রস্তুতি দ্রুত শেষ করতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে দেশটির সঙ্গে আলোচনা চলছে। ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় দেশটির সঙ্গে ২৭ প্রকল্পে সাড়ে ২২ বিলিয়ন ডলার ঋণের সমঝোতা (এমওইউ) হয়। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় ঋণ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর সফরে মোট ৭ প্রকল্পে ঋণের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৬৬৩ কোটি ডলার। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন সফরকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ জানান, প্রস্তুতি শেষ হয়েছে এমন প্রকল্পের ঋণ চুক্তি হবে প্রধানমন্ত্রীর সফরে। একই সঙ্গে বাকি প্রকল্পগুলোর ঋণ চুক্তি যাতে দ্রুত হয়, সে বিষয়ে আলোচনা হবে। উচ্চ পর্যায়ের সফরে দ্বিপক্ষীয় অনেক বিষয়ে গতি আসে। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরে ঋণ চুক্তির অপেক্ষায় থাকা প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রেও গতি আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংশ্নিষ্টরা জানান, ২৭ প্রকল্পের মধ্যে ২০১৬ সালে একটি এবং ২০১৭ সালের চারটি প্রকল্পের ঋণ চুক্তি সই হয়। চুক্তি হওয়া প্রকল্পগুলো হলো- পদ্মা রেল সংযোগ, জাতীয় তথ্য-প্রযুক্তি ইনফো-নেটওয়ার্ক, কর্ণফুলী টানেল, সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং টার্মিনাল নির্মাণ এবং টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ প্রকল্প।
ঋণ চুক্তির জন্য অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রকল্পগুলো হলো- ঢাকা-সিলেট মহসড়ককে চার লেন করা, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, সীতাকুণ্ড-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ, চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৭৮৩ একর জমিতে চায়না অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন, আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত মিটারগেজ রেললাইনকে ব্রডগেজে রূপান্তর, জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত ডবল লাইন ও ডবল গেজ রেললাইন নির্মাণ, সরকারি পাটকলগুলো আধুনিকায়ন, মোংলা বন্দরের সুবিধা সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন, রাজশাহী ওয়াসার জন্য পানি শোধনাগার নির্মাণ, পৌরসভার জন্য পানি সরবরাহ, পয়ঃনিস্কাশন এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, ছয়টি টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপন, গজারিয়া ৩৫০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন অন্যাতম।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্রে ঋণের শর্তাবলির বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল যে, পাঁচ প্রকল্পে ঋণের সুদহার ২ শতাংশ। কিন্তু এ বছরের জন্য নির্ধারিত দুই প্রকল্পে সুদহার বেড়ে হচ্ছে ৩ শতাংশ। এর সঙ্গে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ ব্যবস্থাপনা ফি এবং শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ কমিটমেন্ট ফি দিতে হবে।