করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইনাল সেমিস্টারের ব্যাবহারিক ক্লাস ও পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এছাড়া মাধ্যমিকে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট করে স্কুলে নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরোপুরি খোলার পক্ষে দাবি জোরালো হচ্ছে। অবশ্য আগামী ১৪ নভেম্বরের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে খুলতে সরকার চিন্তাভাবনা করছে বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, অনেক দেশেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলেও আবারও বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে দ্বিধায় আছে সরকার। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেনও। তবে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানবেতন জীবনযাপন করায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিও জোরালো হচ্ছে। বিশেষত ৫০ হাজার কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক-কর্মচারীরা এ দাবিবে সরব বেশি। তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন।
এ বিষয়ে কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান এম ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেছেন, ‘দেশের সর্বত্র লোক সমাগম স্বাভাবিক। কওমি মাদরাসা খুলেছে, ইংলিশ মিডিয়ামেও পরীক্ষা হচ্ছে। তাহলে কিন্ডারগার্টেন স্কুল খুলতে বাধা কোথায়?’ কিন্ডারগার্টেন খোলার অনুমতি না দিলে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করারও হুশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
আর ঢাকার গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ ভূঁইয়া বলেন, ‘অভিভাবকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে মতবিনিময় করেছি, তাঁদের অধিকাংশই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পক্ষে। তবে শিক্ষার্থীদের তিন ভাগে স্কুলে আনা যেতে পারে। প্রয়োজনে তারা সপ্তাহে দু’দিন স্কুলে আসবে, অনলাইনেও ক্লাস চলবে। এতে শিক্ষার্থীদের মানসিক অস্থিরতা দূর হবে।’
সূত্র জানায়, আগামী ১৪ নভেম্বরের পর্যায়ক্রমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। সে ক্ষেত্রে শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় এবং এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হতে পারে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোয় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা সম্ভব কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। অবশ্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক না হওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস নেওয়া সম্ভব বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের মাইজবাড়ী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ আশফাক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তারা নিয়মিতই বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে। এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সময় এসেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের কয়েক ভাগে আমরা ক্লাস নিতে পারব।’
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘দুই সপ্তাহ পর চেষ্টা করে দেখব, সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায় কি না। সবই নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর। আগামী বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায় কিনা, চিন্তা-ভাবনা করে দেখছি।’