করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পরই এর টিকা আবিস্কারে গবেষণা শুরু হয় বিশ্বের নানা প্রান্তে। বছর না ঘুরতেই করোনার টিকা তৈরিতে সাফল্যের খবর আসছে। অন্যদিকে, আরেক প্রাণঘাতী রোগ এইডসের কোনো টিকা এখনও তৈরি হয়নি। তবে এইডস প্রতিরোধে পিল বা বড়ির ব্যবহার এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকা বিশেষ করে আফ্রিকার নারীরা ট্রুভাদা নামের ওষুধটি গ্রহণ করছেন। এই বড়ির কার্যকারিতা কম হওয়ায় এ নিয়ে গবেষণা চলছে। এবার এ গবেষণার ইতি টানার সময় এসেছে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।
এইচআইভি প্রতিরোধে ক্যাবোটেগ্রাভির নামের ইনজেকশন তৈরি করে সাফল্য পাওয়ার পরই তারা এ দাবি করেন। এ ইনজেকশন এইচআইভি প্রতিরোধে দৈনিক খাওয়ার ওষুধ ট্রুভাদার চেয়ে ৮৯ শতাংশ বেশি কার্যকর বলে দাবি করা হয়েছে। খবর আলজাজিরার।
যুক্তরাজ্যের ভিভ হেলথ কেয়ার এ ওষুধ তৈরি করেছে। তাদের সহায়তা করেছে ফাইজার ও শিওনোগি লিমিটেড এবং অর্থ সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ (এনআইএইচ), বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন ও ভিভ। গবেষণার প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবকদের ওষুধটি যৌথভাবে সরবরাহ করেছেন ভিভ ও ট্রুভাদার প্রস্তুতকারকরা।
এনআইএইচে সংক্রামক ব্যাধির প্রধান চিকিৎসক অ্যান্থনি ফুসি বলেছেন, ‘এইচআইভি প্রতিরোধে চলমান গবেষণার অনেক বড় সাফল্য হলো নতুন এই ইনজেকশন। এটি ভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর, বিশেষ করে কম বয়সী নারীদের যাদের এটি বেশি প্রয়োজন।’
গবেষণায় আফ্রিকার সাতটি দেশ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ অংশ নেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ইউনিভার্সিটি অব উইটওয়াটারস্র্যান্ডের সিনায়েদ দেলানি-মোরটল বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে পুরুষের চেয়ে কম বয়সী নারীরা এইআইভিতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এদিকে ট্রুভাদার কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা থামিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বতন্ত্র পর্যবেক্ষকরাও। তারা প্রমাণ পেয়েছেন, ইনজেকশন নেওয়া স্বেচ্ছাসেবীদের মাত্র ০.২১ শতাংশ এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে বড়ি গ্রহণ করা স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১.৭৯ শতাংশ।