ঘূর্ণিঝড় আমফান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অবকাঠামো পুনর্বাসন ও অর্থনৈতিক গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৫ হাজার ৯০৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের অনুমোদন করেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে-বাংলানগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সভাকক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভায় যুক্ত হন। সভাশেষে পরিকল্পনা সচিব মো. আসাদুল ইসলাম প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত ব্রিফ করেন।
পরিকল্পনা সচিব জানান, চলতি অর্থবছরের ১৫তম একনেক সভায় আজ পাঁচটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট খরচ হবে ৭ হাজার ৫০৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
ঘূর্ণিঝড় আমফান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো. জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, প্রকল্প ব্যয়ের ৫ হাজার ৯০৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার পুরো অর্থ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে।
তিনি জানান, ডিসেম্বর ২০২৩ মেয়াদে স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। দেশের ৫৫ জেলার ৩৫৫টি উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।
জাকির হোসেন বলেন, প্রকল্পের আওতায় ঘূর্ণিঝড় আমফান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও ব্রিজ-কালভার্ট পুনর্বাসনের মাধ্যমে পল্লী সড়ক নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা সংরক্ষণ করা হবে। এর মাধ্যমে পরিবহন ব্যয় ও সময় সাশ্রয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্যের বাজারজাতকরণ সহজ হবে।
এছাড়া সড়ক অবকাঠামো মেরামত ও পুনর্বাসনের মাধ্যমে গ্রামীণ কর্মসংস্থান তৈরি ও গ্রামীণ অর্থনীতি আরও সচল করা প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য বলে তিনি জানান।
প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার ৩৮৮ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার উপজেলা সড়ক, ২ হাজার ২৭৪ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার ইউনিয়ন সড়ক, ১ হাজার ৫৩৪ দশমিক ৯৪ কিলোমিটার গ্রাম সড়ক ও ৭৮ কিলোমিটার আরসিসি সড়ক পুনর্বাসন এবং ৪ হাজার ৬৩১ দশমিক ৮৫ মিটার ব্রিজ ও ৬৯২ মিটার কালভার্ট পুনর্নির্মাণের পাশাপাশি ৩২৮ কিলোমিটার এলাকায় বৃক্ষ রোপণ করা হবে।
পরিকল্পনা সচিব মো. আসাদুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একনেক সভায় ঘূর্ণিঝড় আমফান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুততম সময়ে সড়ক পুনর্নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে বলেন তিনি, যাতে কোনোভাবে ওভারল্যাপ না হয়।
প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামো নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে মহা-পরিকল্পনা প্রণয়নেরও নির্দেশ দিয়েছেন।
একনেক সভায় ৭৯৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে যমুনা নদীর ডান তীরের ভাঙন হতে গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলাধীন কাতলামারী ও সাঘাটা উপজেলাধীন গোবিন্দি এবং হলদিয়া এলাকা রক্ষা প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভায় বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলা (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। মূল অনুমোদন ছিল ৯৫০ কোটি টাকার, সংশোধনী প্রকল্পে ৩৫৫ কোটি টাকার ব্যয় বাড়ানো হয়।
একনেকে অনুমোদিত অন্য দুই প্রকল্প হলো- খুলনা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, এর বাস্তবায়ন খরচ ধরা হয়েছে ৩৯৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং ২২৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক পল্লী নির্মাণ প্রকল্পের (১ম সংশোধিত) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মূল অনুমোদনে ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ১২৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।