উপমহাদেশের অন্যতম বৃহত্তম অর্থনৈতিক অঞ্চল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর। এ শিল্পনগরের ৫০০ একর জমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে বিজিএমইএ গার্মেন্টস ভিলেজ। এ পল্লীতে বিনিয়োগ হবে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কর্মসংস্থান হবে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষের। ইতিমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে গার্মেন্টস ভিলেজের ভূমি উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ। সংযোগ সড়ক ও গ?্যাস নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার কাজও চূড়ান্ত পর্যায়ে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর প্রতিষ্ঠা করছে। ইতিমধ্যে বেজাকে ১০০ কোটি টাকা দিয়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের জন্য পরিকল্পিত শিল্পনগর প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। বেজাসূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২১ মার্চ বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে জমি বরাদ্দের বিষয়ে বিজিএমইএর সঙ্গে বেজার চুক্তি হয়। এরপর বিজিএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে জমি বরাদ্দের উদ্যোগ নেয় বেজা। ইতিমধ্যে ছোট-বড় ৭২টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান জমি নিতে আবেদন করে। এর মধ্যে অধিকাংশ বরাদ্দই সম্পন্ন হয়েছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো শিগগিরই শুরু করতে পারবে স্থাপনা নির্মাণ। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ‘মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৫০০ একর জমিতে হবে গার্মেন্টস ভিলেজ। এটি হবে দেশের বৃহত্তম গার্মেন্টস শিল্প জোন। গার্মেন্টস শিল্পে এটি একটি বড় সংযোজন। বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর হবে পূর্ণাঙ্গ শিল্পশহর।’ বেজার কনসালট্যান্ট আবদুল কাদের খান বলেন, ‘ভৌত অবকাঠামো ও সড়ক নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। গ্যাস-বিদ্যুৎসহ সেবা সংস্থাগুলোর কাজও শেষ পর্যায়ে। আশা করছি শিগগিরই শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব স্থাপনা নির্মাণকাজ শুরু করতে পারবে।’ তিনি বলেন, ‘বিজিএমইএ গার্মেন্টস পল্লীতে বিনিয়োগ হবে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এখানে কর্মসংস্থান হবে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষের। গার্মেন্টস খাতের জন্য এটি একটি যুগান্তকারী সংযোজন।’ জানা যায়, ৩০ হাজার একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে দেশের বৃহত্তম অর্থনৈতিক অঞ্চল বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর। চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড ও মিরসরাই উপজেলা এবং ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর। চট্টগ্রাম বন্দরের অনতিদূরে সমুদ্র উপকূলে গড়ে ওঠা এ শিল্পনগরে ২৫টি আলাদা জোন নির্মাণ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন চলছে। ইতিমধ্যে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ নিশ্চিত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ শিল্পনগরে প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। মিরসরাই উপজেলার ইছাখালী ইউনিয়নের সাধুরচর, শীলচর, মোশাররফচর ও পীরেরচর; ফেনীর সোনাগাজী ও চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড অংশের ধু-ধু চরাঞ্চলজুড়ে দৃশ্যমান হচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সোপান। প্রকল্প এলাকায় যাতায়াতের জন্য ইতিমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে চার লেনের সংযোগ সড়ক নির্মাণসহ অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পের জন্য স্থাপন করা হয়েছে পৃথক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। জাহাজ ভেড়াতে টার্মিনাল নির্মাণ, সুপেয় পানির সরবরাহে গভীর নলকূপ স্থাপন এবং পর্যটন সম্ভাবনা তৈরি করতে তিনটি কৃত্রিম লেকের সমন্বয়ে ‘শেখ হাসিনা সরোবর’ তৈরির কাজ চলছে।