ভ্রান্তভাবে জিহাদের উসকানি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এক দল মানুষ বোমাবাজি, হত্যা, সন্ত্রাস আর আত্মহনন করছে। আপনাদের এসব কর্মকাণ্ডে দেশে-বিদেশে টুপি-দাড়ি-হিজাবওয়ালা মানুষ শুধু সন্দেহ আর অবিশ্বাসেরই শিকার হচ্ছে না, বরং অনেক ক্ষেত্রে হামলা, অপমান, অবহেলা ও বিদ্রুপের শিকার হচ্ছে। কোনো কোনো দেশে তো মসজিদ-মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
চোখে-মুখে ঘাতকের হিংস্রতা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে-গুঁড়িয়ে দিয়ে বুড়িগঙ্গায় ফেলার হুমকির পর এটা অনুমান করা যাচ্ছিল ডিসেম্বরে প্রকৃতিতে তাপমাত্রা নিম্নগামী হলেও রাজনীতিতে উত্তাপের পারদ ঊর্ধমুখী হতে যাচ্ছে। শরীরী ভাষায় আপাত শান্ত বাংলাদেশকে অশান্ত করার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরে জড়িত দুই মাদ্রাসাছাত্র আবু বক্কর ও সবুজ ইসলাম তাদের স্বীকারোক্তিতে বলেছে, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বয়ানে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছে।
মওলানা সাহেবরা কতটা উদ্বুদ্ধ করেছিলেন এ দুজন তার বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে; ঘটনার রাতে তারা দুজন একসঙ্গে মাদ্রাসা থেকে হেঁটে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে পাঁচ রাস্তার মোড়ে যান। ভাস্কর্য নির্মাণে ব্যবহৃত বাঁশের মই বেয়ে দুজন ওপরে ওঠেন। এরপর পিঠে থাকা ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বের করেন। দুজন মিলে ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন। আট মিনিট ধরে ভাঙচুরের পর তারা আবার হেঁটে মাদ্রাসায় ফিরে যান।
মূর্তি ও ভাস্কর্য নিয়ে ইসলামি চিন্তাবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। উদাহরণস্বরুপ মিশরের আল আজাহারের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি মোহাম্মদ আব্দুল জাদুল হক এবং প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ মোহাম্মদ ইমারাহের নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। তারা দুজনই বলেছেন, ‘it is allowed to have statues as long as they are not worshipped’. আফগানিস্তানে তালেবানরা মূর্তি ও ভাস্কর্য ধ্বংস করতে শুরু করলে মুসলিম ও অমুসলিম দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা মূর্তি ও ভাস্কর্য ধ্বংস থেকে তালেবানদের বিরত থাকতে আহ্বান জানায়। কিন্তু তালেবানরা কর্ণপাত না করে মূর্তি ও ভাস্কর্য ধ্বংস অব্যাহত রাখে। এ বিষয়ে ইসলামের অবস্থান কী তা নির্ধারণ করতে মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা তাদের শ্রেষ্ঠ আলেমদের নিয়ে ২০০১ সালের ৩০-৩১ ডিসেম্বর দোহায় এক কনফারেন্সে মিলিত হন।
কনফারেন্সের শিরোনাম ছিল ‘দোহা কনফারেন্স অফ উলমা অন ইসলাম অ্যান্ড কালচারাল হেরিটেজ।’ আরব লীগ, ওআইসি ও ইউনেস্কো যৌথভাবে এই কনফারেন্সের আয়োজক ছিল। দোহা কনফারেন্সে মিশরের ড. আবদুল মুনীম বলেছেন, রাসুল (সা.) প্রথমদিকে মূর্তির বিরুদ্ধে ছিলেন। কারণ, তখন প্যাগান প্রভাব ছিল, শিরকের চিন্তা ছিল। ইসলাম যখন পরিপূর্ণতা লাভ করবে তখন আর সেই চিন্তা থাকবে না। এ কারণে খোলাফায়ে রাশেদীনের সময় থেকে ইসলাম বিভিন্ন এলাকা জয় করলেও মূর্তি অপসারণ করা হয়নি।
এরপরও আমি ধরে নিচ্ছি, মামুনুল হক ও তার সমর্থকরা যারা মনে করেন মূর্তি ও ভাস্কর্যে কোনো তফাৎ নেই এবং ইসলামে উভয়ই নিষিদ্ধ এটাই সঠিক ব্যাখ্যা। আমার প্রশ্ন, যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার হুমকি দিলেন তারা ইসলামের কোন বিধানমতে এমন হুমকি দিলেন? তারা মূর্তি ভাঙা বিষয়ে রাসুল (সা.) এর উদাহরণ দেন। এটা সত্য মক্কা বিজয়ের পর ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে রাসুল (সা.) কাবা শরিফের ৩৬০টি মূর্তি অপসারণ করেছিলেন। রাসুল (সা.) যখন মূর্তি অপসারণ করেন তখন তিনি মদিনা নগর রাষ্ট্রের শাসক ও মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে মক্কার শাসক হয়েছিলেন।
কিন্তু মামুনুল হক ও অন্য যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে বুড়িগঙ্গায় ফেলার হুমকি দিলেন তাদের কর্তৃত্ব কী? তারা তো শাসক নন। সাধারণ ব্যক্তিরা যদি আইন নিজের হাতে তুলে নেন তাহলে সমাজে-রাষ্ট্রে কি অরাজকতা সৃষ্টি হবে তা ভেবে দেখেছেন কি?
আপনারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙলেন, বঙ্গবন্ধুর সমর্থকরা আপনাদের আস্তানা-আখড়া গুঁড়িয়ে দিল। আপনার পাল্টা আঘাত করলেন। আপনাদের পাল্টা আঘাতের জবাব আরও ভয়ংকরভাবে দেয়া হলো। এমনটি হলে রাষ্ট্রে হত্যা, জখম, রক্তপাত, সম্পদ ধ্বংস চলতেই থাকবে। ইসলাম কি তার অনুমোদন দেয়? অবশ্যই না, ‘ইসলামে বিশৃঙ্খলা, বিপর্যয় সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই, বরং বিশৃঙ্খলা, বিপর্যয়কে কোরআনে হত্যার চেয়েও জঘন্য অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।’
ইসলামে জিহাদের আহ্বান কে করতে পারে? যদি যে কেউ জিহাদের আহ্বান ও নেতৃত্ব দিতে পারত, তাহলে মুসলমানরা নানা দলে বিভক্ত হয়ে জিহাদের ডাক দিত, আর সে ক্ষেত্রে নিশ্চিত বিশৃঙ্খলা, নিজেদের মধ্যে দাঙ্গা-হাঙ্গামা লেগে যেত।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘রাষ্ট্রপ্রধান হলেন ঢাল, যাকে সামনে রেখে কিতাল বা যুদ্ধ পরিচালিত হবে।’ ( সহীহ বুখারী, ৩/১০৮০ সহীহ মুসলিম, ৩/১৪৭১) ইসলামে একমাত্র মনোনীত নেতাই জিহাদের আহ্বান ও নেতৃত্ব দিতে পারেন। রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি ব্যতীত কোনো বাহিনীর জন্য জিহাদ বৈধ নয়, পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন। কারণ কুরআন-হাদীসে বিদ্যমান জিহাদ-কিতাল বিষয়ক নির্দেশগুলোর দায়ভার রাষ্ট্রপ্রধানদের উপরেই, সাধারণ মানুষেরা এ আদেশগুলো দ্বারা সম্বোধিত নয়। এ বিষয়ে সাধারণ মানুষ রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের অনুসরণ করবেন। কাজেই রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি ছাড়া কারো জন্য জিহাদ বা আক্রমণ বৈধ নয়।
তবে প্রতিরক্ষার যুদ্ধ হলে ভিন্ন কথা। যদি শত্রুগণ কোনো জনগোষ্ঠীর উপর আক্রমণ করে এবং তারা ভয় পান যে, রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করলে শত্রু তাদের ক্ষতি করবে তবে এক্ষেত্রে তারা নিজেদের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ করবেন।
হাদিসে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপ্রধান ধার্মিক হোক আর অধার্মিক হোক, উভয় ক্ষেত্রেই তার আনুগত্যে জিহাদ করা তোমাদের ওপর ওয়াজিব।’ (ইবন কুদামা, আল-মুগনী ১০/৩৬৮)। অথচ এক শ্রেণির মাওলানা মানুষকে উগ্রবাদের দিকে উসকে দিচ্ছেন।
এই তো সেদিন মসজিদে নামাজ আদায়ের পর কোরআন অবমাননার অজুহাত তুলে শহীদুন্নবী জুয়েল নামে এক যুবককে টেনে-হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে শত শত মানুষের সামনে পিটিয়ে, আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হলো। অথচ রাসুল (সা.) কাউকে আগুনে পুড়িয়ে এমনকি পিঁপড়াকেও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন।
ভ্রান্তভাবে জিহাদের উসকানি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এক দল মানুষ বোমাবাজি, হত্যা, সন্ত্রাস আর আত্মহনন করছে। আপনাদের এসব কর্মকাণ্ডে দেশে-বিদেশে টুপি-দাড়ি-হিজাবওয়ালা মানুষ শুধু সন্দেহ আর অবিশ্বাসেরই শিকার হচ্ছে না, বরং অনেক ক্ষেত্রে হামলা, অপমান, অবহেলা ও বিদ্রুপের শিকার হচ্ছে। কোনো কোনো দেশে তো মসজিদ-মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
আমি কয়েকজন আলেম এর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন, রাসূল (সা.) ছাড়া কোনো সাহাবি মূর্তি-ভাস্কর্য ভেঙেছেন, অপসারণ করেছেন এমন কোনো ঘটনা আছে বলে তাদের জানা নেই। বরং তারা মূর্তি ভাঙার বিষয়ে একজন সাহাবির সিদ্ধান্ত বিষয়ে আমাকে একটি ঘটনার উদ্ধৃতি দিয়েছেন দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর (রা.)-এর খেলাফতকাল। মিসরের শাসনকর্তা হিসেবে তখন রাসূল (সা.) এর ঘনিষ্ঠ সাহাবী হজরত আমর ইবনে আ’স (রা.) দায়িত্ব পালন করছিলেন।
একদিন সকালবেলা আলেকজান্দ্রিয়ার খ্রিষ্টান পল্লীতে হইচই পড়ে গেল। দেখা গেল বাজারে জটলা হয়ে আছে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলছে। সেখান থেকে খ্রিষ্টানদের স্থানীয় আর্চবিশপ আমর ইবনে আস এর বাসভবনে গেলেন বাজারের ঘটনা অবহিত করার জন্য। তার সঙ্গে আরও অনেকেই গেলেন। সেখানে গিয়ে বিশপ জানালেন, আগের রাতে কে বা কারা বাজারে স্থাপিত যিশু খ্রিষ্টের মার্বেলের মূর্তির নাক ভেঙে ফেলেছে। খ্রিষ্টানরা ধরে নিয়েছে যে এটা মুসলমানদের কাজ। তারা উত্তেজিত হয়ে উঠেছে।
আমর ইবনে আস এ কথা শুনে অত্যন্ত দুঃখিত হলেন। তিনি বললেন, ‘আমি খুবই লজ্জিত, ব্যথিত। সত্যি কথা, ইসলামে মূর্তিপূজা জায়েজ না। কিন্তু অন্য ধর্মের উপাস্যকে গালি দেয়া পর্যন্তও হারাম। দয়া করে, আপনি মূর্তিটা সংস্কার করে নিন। আমি পূর্ণ খরচ দেব।’
কিন্তু বিশপ বললেন, ‘এ মূর্তি মেরামত করা যাবে না।’ এবার আমর ইবনে আস বললেন, ‘তবে নতুন করে বানান। আমি খরচ দেব।’
‘না, সেটাও হবে না। আপনি জানেন, যিশু ঈশ্বরপুত্র। তার মূর্তির এমন অবমাননা সহ্য করা যায় না। একটাই ক্ষতিপূরণ, আমরা আপনাদের মুহাম্মাদ (সা.) এর মূর্তি বানিয়ে সেটার নাক ভাঙব।’
রাগে অগ্নিশর্মা হলেন আমর ইবনে আস। তিনি কিছুক্ষণ নীরব থেকে খ্রিষ্টান বিশপকে বললেন, ‘আপনি যা বললেন সেটা সম্ভব না। আমাদের সম্পদ, পরিবারের চেয়েও মুহাম্মাদ (সা.) কে বেশি ভালবাসি। আমার অনুরোধ, এ প্রস্তাব ছাড়া অন্য যেকোনো প্রস্তাব করুন আমি রাজি আছি। আমাদের যেকোনো একজনের নাক কেটে আমি আপনাদের দিতে প্রস্তুত, যার নাক আপনারা চান।’
খ্রিষ্টান নেতারা সবাই এ প্রস্তাবে সম্মত হল।
পরদিন খ্রিষ্টান ও মুসলমান বিরাট এক ময়দানে জমায়েত হল। মিসরের শাসক সেনাপতি আমর ইবনে আস (রা.) সবার সামনে হাজির হয়ে বিশপকে বললেন, ‘এ দেশ শাসনের দায়িত্ব আমার। যে অপমান আজ আপনাদের, তাতে আমার শাসনের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। তাই এই তরবারি গ্রহণ করুন এবং আপনিই আমার নাক কেটে দিন।’
এ কথা বলেই বিশপকে একখানি ধারালো তরবারি হাতে দিলেন, বিশপ সেটা পরীক্ষা করলেন। জনতা স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, খ্রিষ্টানরা স্তম্ভিত। চারদিকে থমথমে ভাব। হঠাৎ সেই নীরবতা ভঙ্গ করে একজন মুসলিম সৈন্য এগিয়ে এলো। চিৎকার করে বলল, ‘আমিই দোষী, সেনাপতির কোনো অপরাধ নেই। আমিই মূর্তির নাক ভেঙেছি। এই তো, আমার হাতেই আছে সে নাক। তবে মূর্তি ভাঙার কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না। মূর্তির মাথায় বসা একটি পাখির দিকে তীর নিক্ষেপ করতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
সৈন্যটি এগিয়ে এসে বিশপের তরবারির নিচে নাক পেতে দিল। স্তম্ভিত বিশপ! নির্বাক সবাই।
বিশপের অন্তরাত্মা রোমাঞ্চিত হয়ে উঠল। তরবারি ছুড়ে বিশপ বললেন, ‘ধন্য সেনাপতি, ধন্য হে বীর সৈনিক, আর ধন্য আপনাদের মুহাম্মদ (সা.), যার মহান আদর্শে আপনাদের মতো মহৎ উদার নির্ভীক ও শক্তিমান ব্যক্তি গড়ে উঠেছে। যিশু খ্রিষ্টের প্রতিমূর্তির অসম্মান করা হয়েছে সন্দেহ নেই, কিন্তু তার চেয়েও অন্যায় হবে যদি অঙ্গহানী করি।’
সাহাবিদের মর্যাদা বিষয়ে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আল্লাহ তাদের উপর রাজি হলেন, তারাও (সাহবিগণ) আল্লাহর উপরে রাজি হলেন’ (সুরা বাইয়্যিনা:৮)।
রাসুল (সা.) এর সাহাবিদের (রা.) অনুসরণ মুসলমানদের জন্য আবশ্যিক দায়িত্ব। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার সাহাবিদের সম্মান করবে (কারণ তারাই তোমাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ); তাদের পর পরবর্তী যুগের মানুষদের (তাবেঈ), এবং এরপর তাদের পরবর্তী যুগের মানুষদের (তাবে-তাবেঈন)। আর এরপর মিথ্যা প্রকাশিত হবে’ (সুনানি নাসাঈ, ৫/৩৮৭)।
সাহাবিদেরকে মহব্বত করা তথা অনুসরণ করা ঈমানের অংশ। তাদের সঙ্গে বিদ্বেষ রাখা বা তাদের সমালোচনা করা হারাম এবং তা ইমানের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। হযরত ইমরান বিন হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত,রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম তারা যারা আমার যুগে রয়েছে। অতঃপর তাদের পরবর্তী যুগের উম্মাত (তথা তাবেয়িগণের যুগ) অতঃপর তাদের পরবর্তী যুগের উম্মাত’ (বুখারী ৪/২৮৭- ২৮৮, মুসলিম ৪/১৯৬৪)।
ইসলামের অনুসারীদের প্রতি অনুরোধ ইসলাম প্রতিষ্ঠায়, ইসলামের দিকে আহ্বান করতে জোরজবরদস্তি, নেতিবাচক, নৈরাজ্য, ধ্বংসাত্মক ও কঠোর পন্থা নয়, বরং জ্ঞান, হিকমাহ, ধৈর্য, সহনশীলতা, কোমলতা অবলম্বন করুন। বাস্তবজীবনে কোন কিছুর ভিত তৈরি হয়ে পূর্ণতা পেতে যেমন সময়, পরিশ্রম ও ধৈর্যের প্রয়োজন তেমনি মানুষের অন্তরগুলো গড়ে তুলতে এবং সেগুলোকে সত্যের পথে নিয়ে আসতে সময়, ধৈর্য ও ত্যাগের প্রয়োজন।
হারেছা বিন ওহাব (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘অশ্লীলভাষী ও উগ্র মেজাজি লোক জান্নাতে যাবেন না’ (আবু দাউদ, ৪১৬৮)।