নোয়াখালীতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার নোয়াখালীর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের কর্মকর্তারা নোয়াখালীর আদালতে দুইটি মামলার অভিযোগ পত্র জমা দেন।
নোয়াখালী পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, ওই ঘটনায় মোট তিনটি মামলা হয়েছিল। তদন্ত শেষে তার মধ্যে দুইটি মামলার অভিযোগপত্র আজ দেয়া হয়েছে। আরেকটি মামলার তদন্ত এখনো চলছে।
তিনি জানান, তদন্তে তারা জানতে পেরেছেন, স্থানীয় কতিপয় যুবক দীর্ঘদিন ধরে এই নারীকে হয়রানি ও উত্যক্ত করে আসছিল। পরিকল্পিতভাবে তারা সেদিন রাতে নারীর ওপর নির্যাতন করে।
তিনি জানান, ওই ঘটনার পরে ধর্ষণের চেষ্টা এবং পর্নগ্রাফি মামলায় দুইটি মামলা হয়। পরবর্তীতে দুইজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ করার অভিযোগে আরেকটি মামলা করা হয়।
ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগের মামলা দুইটির অভিযোগ পত্র দেয়া হয়েছে। পর্নগ্রাফি মামলার তদন্ত চলছে।
ধর্ষণ মামলায় দুইজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আর ধর্ষণ চেষ্টার মামলার আসামী ১৪ জন – যার মধ্যে চারজন পলাতক রয়েছে।
গত ২ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রামে একজন গৃহবধূর বাড়ীতে ঢুকে তার স্বামীকে পাশের কক্ষে আটকে রেখে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে স্থানীয় কয়েকজন যুবক।
প্রায় একমাস পরে সেই নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এরপরেই নয় জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন নির্যাতনের শিকার ওই নারী।
এছাড়া নির্যাতনের ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন ওই নারী।
পরবর্তীতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দল মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় লোকজন এবং ক্ষতিগ্রস্ত নারীর বক্তব্যের ভিত্তিতে স্থানীয় থানায় নতুন একটি ধর্ষণ মামলা করে।
তবে ভিডিওটি শেয়ার না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কাউকে এই ভিডিও শেয়ার করতে দেখা গেলে বা এই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার পেছনে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
কিছুদিন আগে আইন সংশোধন করে ধর্ষণের অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান যুক্ত করেছে বাংলাদেশের সংসদ।