মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের হাতে নির্যাতিত আরও ৬১ জন বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। সোমবার এ সংক্রান্ত গেজেট জারি করা হয়েছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৭০তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বীরাঙ্গনারা এ স্বীকৃতি পেলেন। এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়া বীরাঙ্গনার সংখ্যা দাঁড়াল ৪০০ জনে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা প্রতি মাসে ভাতাসহ মুক্তিযোদ্ধাদের মতো অন্যান্য সব সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন।
স্বীকৃতি পেলেন যারা : ৬১ জন নারী মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে কিশোরগঞ্জে ১ জন, মৌলভীবাজারে ১ জন, নাটোরে ১২ জন, পিরোজপুরে ১ জন, ময়মনসিংহে ১ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ জন, বগুড়ায় ১ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ২ জন, পটুয়াখালীতে ১৫ জন, সাতক্ষীরায় ১ জন, খাগড়াছড়িতে ১ জন, মাদারীপুরে ১ জন, বরগুনায় ২ জন, ফরিদপুরে ১ জন, বরিশালে ১ জন, কুষ্টিয়ায় ২ জন, সিলেটে ১৩ জন, গোপালগঞ্জে ২ জন ও খুলনায় ১ জন। এরা হলেন কিশোরগঞ্জের নিকলীর সিজু বেগম, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার আছকিরুন নেছা, নাটোর সদরের আশালতা পাল, হালিমা বেগম, হাজেরা বেগম, হালিমা বেগম, ফরিদা বেগম, লাইলী বেগম, ফাতেমা বেগম ও মানিকজান, নাটোর নলডাঙ্গার ইয়ারজান, সমর্থভান, রেখা বেগম ও ছায়েরা খাতুন, পিরোজপুর ভাণ্ডারিয়ার রেনুকা চক্রবর্তী, ময়মনসিংহ মুক্তাগাছার রেনু বেগম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের সাহেরা বেগম, বগুড়া সদরের জরিনা বিবি, ঠাকুরগাঁও রানীশংকৈলের রোপণ বেওয়া ও মোজেফা খাতুন, পটুয়াখালী সদরের হাজেরা বেগম, ফুল বরু ওরফে ফুল বানু, মনোয়ারা বেগম, সালেহা বেগম, আনোয়ারা বেগম, ছৈতন নেছা, রিজিয়া বেগম, মৃত জোবেদা, মৃত হাছেন ভানু, মৃত হাচন ভানু, মৃত জয়ফুল, মৃত ছকিনা খাতুন, মৃত ফুলভানু, মনোয়ারা বেগম ও জমিলা বেগম। এদের পাশাপাশি বীরাঙ্গনা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরের তুলসী চন্দনা রায়, খাগড়াছড়িরর গুইমারীর রাহেলা বেগম, মাদারীপুর সদরের আয়েশা বেগম, বরগুনার পাথরঘাটার সালেহা খাতুন ও তরুণ বালা, ফরিদপুর কোতোয়ালির মায়া রানী সাহা, বরিশাল সদরের হাজেরা খাতুন, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের সুফিয়া বেগম ও হোসনেয়ারা বেগম, সিলেট গোয়াইনঘাটের জামিরুন নেছা, জয়নব বিবি, জয়তুন বেগম, হাজেরা বেগম, খুদেজা, রুকেয়া, মমতা, আলিপজান, রহিমা বেগম, নবিরুন বেগম, সিমন্তী রানী চন্দ, জোৎস্না বেগম ও আসমা বেগম। এছাড়া পাবনা চটমোহরের জামেনা খাতুন, গোপালগঞ্জ সদরের আমেনা বেগম ও সুমি বিশ্বাস এবং খুলনার পাইকগাছার গুরুদাসী মণ্ডল স্বীকৃতি পেয়েছেন।
১৯৭১ সালে ডিসেম্বরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতিত নারীদের ‘বীরাঙ্গনা’ স্বীকৃতি দিয়ে তাদের সম্মান জানান। তার নির্দেশনায় বীরাঙ্গনাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়, যা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আগ পর্যন্ত চলছিল।