করোনা মহামারীর মধ্যেও যথাসময়ে সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনা মূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে সরকার। আজ গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানে বই বিতরণ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মন্ত্রী ও সচিবদের উপস্থিতিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বই তুলে দেয়া হবে। কাল থেকে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় বই বিতরণ শুরু হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে তিন দিন করে মোট ১২ দিনে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই বিতরণ করা হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পয়লা জানুয়ারি বই উৎসব হচ্ছে না। অন্যদিকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবার বইয়ের প্রচ্ছদে নতুনত্ব আনা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের পেছনের মলাটে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনসহ বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন স্থিরচিত্র ক্যাপশনসহ সংযোজন করা হয়েছে। এবার ছাপা হয়েছে প্রায় ৩৫ কোটি বই।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২১ সালে সর্বমোট পাঠ্যপুস্তকের সংখ্যা ১০ কোটি ২৫ লাখ ৮২ হাজার ৫৫৫টি। এর মধ্যে প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য ২ কোটি ৫৯ লাখ ৯২ হাজার ৬৭১টি বই, তৃতীয়-চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ৬ কোটি ৯৬ লাখ, ৯৭ হাজার ৩৭৪টি।
এর মধ্যে ৯৪ হাজার ২৭৫ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রী) শিশুদের জন্য পাঁচটি ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ১৩ হাজার ২৮৮টি বিশেষ ভাষায় বই বিতরণ করা হবে। তবে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের ভাষায় শুধু বাংলা বইটি পাবে। এ বছর সাঁওতাল ভাষায় পাঠ্যপুস্তক দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এবার ৯ হাজার ১৯৬ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর জন্য ব্রেইল পদ্ধতির বই বিতরণ করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য ২৪ কোটি ৩৩ লাখ ৩৪ হাজার কপি বই মুদ্রণ করার কাজ চলমান রয়েছে।
শিক্ষাকে মানসম্মত করা এবং ঝরে পড়ার হার রোধ করতে ২০১০ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিবছর ১ জানুয়ারি ‘বই উৎসব’ করে আসছে।