বর্তমান বিশ্বের ১৬৫ টির ও অধিক দেশে কাজ করছেন ১ কোটিরও বেশি প্রবাসী। যাদের কষ্টের পরিশ্রমের টাকায় ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। তাদের পাঠানো রেমিটেন্সের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক মর্যাদা সারা বিশ্বের কাছে বেড়েই চলেছে। আর এই অর্থের মাধ্যমে সৃষ্টি হচ্ছে একের পর এক রেকর্ড। এবারে এক হাজার ৬০০ কোটি (১৬ বিলিয়ন) ডলার আয় নিয়ে নতুন রেকর্ড ছাড়িয়েছে আগের সব রেকর্ডকেই। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এক সপ্তাহ বাকি থাকতেই রেমিটেন্স এই অংক অতিক্রম করল। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই এক অর্থবছরে ১৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স আসেনি। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। যা ছিল এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার বিদায়ী অর্থবছরের শেষ মাস জুনের ২১ দিনের রেমিটেন্সের তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, এই ২১ দিনে (১ জুন থেকে ২১ জুন) দেশে ৯৭ কোটি ২৯ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে। অর্থবছরের ১১ মাসে অর্থাৎ জুলাই-মে সময়ে এসেছিল এক হাজার ৫০৫ কোটি ৯০ লাখ (১৫.০৫ বিলিয়ন) ডলার। সব মিলিয়ে ৩০ জুন শেষ হতে যাওয়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১১ মাসে ২১ দিনে (২০১৮ সালে ১ জুলাই থেকে ২০১৯ সালের ২১ জুন) এক হাজার ৬০৩ কোটি ২০ লাখ ডলার (১৬.০৩ বিলিয়ন) রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। অর্থবছরের বাকি এক সপ্তাহে (২২ জুন থেকে ৩০ জুন) আরও ২৫ থেকে ৩০ কোটি ডলার রেমিটেন্স আসবে এমনটাই আশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম। তাতে রেমিটেন্স এবার ১৬ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে প্রবাসীরা দেশে বেশি অর্থ পাঠানোয় মে মাসে ১৭৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে বাংলাদেশে: যা ছিল মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর আগে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছিল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে, ১৫৯ কোটি ৭২ লাখ ডলার।
বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হল বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ বা রেমিটেন্স। বর্তমানে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। জিডিপিতে তাদের পাঠানো অর্থের অবদান ১২ শতাংশের মত।
২০০৮ সালের পূর্বে বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে দেশে রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিলো নিতান্তই সামান্য। আর যতটুকুই রেমিটেন্স আসতো তা খেয়ে লুটপাট করে দিতো বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ তার ছেলে তারেক রহমান ও তার সঙ্গীরা। আর এতে করেই সারাবিশ্বে পর পর তিনবার দুর্নীতিতে রেকর্ড করেছিলো তারা। এরপর ২০০৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্বস্তি ফিরে আসে অর্থনৈতিক খাতে। এই খাত তার পুনর্জীবন ফিরে পায়। এরপর বাড়তে থাকে দেশে বৈদেশিক রেমিটেন্সের সংখ্যা। বাড়তে থাকে রিজার্ভ। বাংলাদেশের থেকেও উন্নত অনেক দেশের সাথে তুলনা করলে দেখা যায় এই দেশের রিজার্ভ অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। যা একমাত্র সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অপার দূরদর্শিতায়।