নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের নলডাঙ্গায় কীটনাশক প্রয়োগে হেলাল নামের এক কৃষকের লক্ষাধিক টাকার ফসলের ক্ষতির অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগি কৃষক আলু,ল্যালা পেঁয়াজ ও পেঁয়াজের চারায় প্রয়োগ করতে নলডাঙ্গা বাজারের বিজয় এন্টারপ্রাইজের মালিক বজলুর রশিদের কীটনাশক দোকান থেকে এসব কীটনাশক কিনে জমিতে প্রয়োগ করে।ছত্রাকনাশক এ কীটনাশক প্রয়োগ করার তিনদিন পরই ফসল হলদে বর্ণ ধারন করে পচে নষ্ট হতে শুরু করে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি বিভাগে জানালে কৃষি বিভাগ সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োগ করা কীটনাশকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠিয়েছে। কীটনাশকের কারনে ফসলের ক্ষতি হলে ওই কৃষকের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কীটনাশক দোকান মালিক বজলুর রশিদ। উপজেলার হলুদঘর মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, উপজেলার হলুদঘর গ্রামের আসমত আলীর ছেলে হেলাল ধার দেনা করে লাভের আশায় হলুদঘর মাঠে ১৭ কাটা জমিতে ল্যালা পেয়াজ,৫ কাটা জমিতে পেঁয়াজের চারা ও ৫ কাটা জমিতে আলু রোপন করেছিলেন।ভালো ফলন পেতে এসব ফসলে কীটনাশক প্রয়োগ করার প্রয়োজন হলে নলডাঙ্গা বাজারের বজলুর রশিদের কীটনাশক দোকান থেকে তার পরামর্শে ব্যাবিলন এগ্রিসাইন লিমিটেড কোম্পানির ৭ ধরনের কীটনাশক দিয়ে জমিতে প্রয়োগ করতে বলে। দোকানদারের পরামর্শে কৃষক হেলাল জমিতে প্রয়োগ করেন।পরে তিনদিন পর এসে দেখে ল্যালা পেঁয়াজ,পেঁয়াজের চারা ও আলু হলুদ বর্ণ ধারন করে পচে নষ্ট হতে শুরু করে। এ অবস্থা দেখে কৃষক হেলাল উপজেলা কৃষি বিভাগে জানায়। কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা সরেজমিন দেখে প্রয়োগকৃত কীটনাশকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠায়। ভুক্তভোগি কৃষক হেলাল জানান,আমি ধার দেনা করে ৭০-৮০ হাজার টাকা খরচ করে ল্যালা পেঁয়াজ,পেঁয়াজের চারা ও আলু লাগিয়েছিলাম।কিন্ত বজলুর দোকান থেকে ভেজাল কীটনাশক কিনে জমিতে প্রয়োগ করেই আমার সর্বনাশ হল। আমি এর ক্ষতিপূরুনের দাবী জানাচ্ছি।তার মত আরেক কৃষক অসিফ জানান,আমিও বজলুর দোকান কীটনাশক কিনে আলু,পেঁয়াজে প্রয়োগ করে একই ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
কীটনাশক দোকান মালিক বজলু এ অভিযোগ স্বীকার করে জানান, আমি ব্যাবিলন এগ্রিসাইন লিমিটেড কোম্পানির ডিলার হিসেবে দীর্ঘদিন থেকে সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করছি। আমার কাছ থেকে কৃষক হেলাল এই কোম্পানি কীটনাশক কিনে নিয়ে যায়।তার মত প্রতিদিন বহু কৃষক একই কীটনাশক কিনে নিয়ে জমিতে প্রয়োগ করে ভালো ফলাফল পাচ্ছে।কীটনাশকের কারনে হেলালের ফসলের ক্ষতি হয়নি দাবী করে বলেন আমি এ কীটনাশকের তদন্ত চাই। কৃষি অফিস কীটনাশকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠিয়েছে। কীটনাশকের কারনে তার ক্ষতি হলে আমি এর ক্ষতি পূরুণ দিব। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার ফৌজিয়া ফেরদৌস জানান,অভিযোগ শুনে আমরা সরেজমিন ফসলের ক্ষেত পরিদর্শন করেছি এবং প্রয়োগকৃত কীটনাশকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল আসলে জানা যাবে কি কারনে ফসলের এ ক্ষতি হল। তবে মাঠ পর্যায়ের কৃষি উপ-সহকারীর পরামর্শ ছাড়া কীটনাশক প্রয়োগ করা ঠিক না বলে তিনি জানান।