প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ফেব্রুয়ারি মাসটা আমরা করোনা পরিস্থিতি দেখব। তারপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। আগে শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার জন্য করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল সকালে গণভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
এইচএসসির ফল মূল্যায়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই এটা নিয়ে কথা বলছেন। আমি মনে করি এটা নিয়ে বেশি তিক্ততা সৃষ্টি করা উচিত নয়। মনে রাখতে হবে, আমাদের ছোট ছেলেমেয়েরা, তাদের জীবনটার দিকে তাকাতে হবে। তারা যেন কোনোভাবেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে না পড়ে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমনিতেই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারছে না, এটা তাদের জীবনে বিরাট এক বাধা সৃষ্টি করছে। এরপর যদি আবার ফলাফল নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা হয়, এতেও কিন্তু তাদের ওপর মানসিক চাপ পড়বে।
তিনি বলেন, একবার ভেবেছিলাম অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হবে। অবস্থার পরিবর্তন হলে পরে আমরা পরীক্ষাটা নিতে পারব। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি এটা কোনোমতেই বন্ধ হচ্ছে না, এমনকি নতুনভাবে সংক্রমণ শুরু হয়েছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করবে, তাদের পড়াশোনার পথ যেন নষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই এ রকম একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে এ ফলাফলটা ঘোষণা করলাম। শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে সেন্টিমেন্টাল হচ্ছেন, কথা বলছেন পরীক্ষা নিতে। কিন্তু এগুলো করতে গিয়ে যদি কেউ সংক্রমিত হয় তার দায়িত্ব কে নেবে? যারা সমালোচনা করছেন এ পদ্ধতিতে রেজাল্ট দেওয়ার কারণে, তারা নেবেন দায়িত্ব? নিশ্চয়ই তারা নেবেন না। তখন তারা নতুন করে আবার সমালোচনা শুরু করবেন। এটাই আমাদের সবচেয়ে দুর্ভাগ্য যে কিছু লোক থাকেই, যা কিছু করতে যান তাতেই একটা খুঁত বের করা। ফলাফলটা কী হবে সেটা তারা চিন্তাও করেন না। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আমরা যথাযথ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা যখন আরও বেশি সুরক্ষিত করতে পারব, অর্থাৎ এটা থেকে যখন মানুষ মুক্তি পাবে তখন আবার যথানিয়মে ক্লাস হবে, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যেতে পারবে। যারা প্রমোশন পাবে তারা আগামীতে পড়াশোনা শুরু করতে পারবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে আমরা খুব দ্রুতই স্কুল খুলে দিতে পারব। করোনাভাইরাস আমরা যেভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখছি, সবাই যদি আরেকটু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন আমরা এটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব এবং খুব দ্রুতই আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে পারব। আমরা মার্চ মাসটা দেখব। আমাদের দেশে এ মার্চ মাসেই ব্যাপকভাবে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। তবে আমরা ফেব্রুয়ারি মাসটা নজরে রাখব, যদি অবস্থা ভালো থাকে পরবর্তীতে আমরা সীমিত আকারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেব, আমাদের ছেলেমেয়েরা যাতে যেতে পারে সে ব্যবস্থাটা আমরা নেব। আমরা যত দ্রুত পারি এ ব্যবস্থাটা নেব। করোনাভাইরাসের টিকা যেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও দেওয়া হয় সে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, ইতিমধ্যে ভ্যাকসিন বের হয়েছে। যখন থেকেই শুরু হয়েছে গবেষণা তখন থেকেই আগাম টাকাপয়সা দিয়ে আমরা বুক করে রেখেছিলাম। যখনই এটা আবিষ্কার হবে, যখনই এটা ব্যবহার করার অনুমতি পাওয়া যাবে সঙ্গে সঙ্গে আমরা যেন দিতে পারি। আমরা করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছি। সেখানে আমি এরই মধ্যে নির্দেশ দিয়েছি, আমাদের যারা শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন তাদেরও এ ভ্যাকসিনটা যাতে দ্রুত দেওয়া হয়।