ডেস্ক নিউজ
শুক্রবার (১২) নারায়ণগঞ্জের রুপসীতে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন সিটি ইকোনমিক জোনে ‘রুপসী ফ্লাওয়ার মিল’ এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ফ্লাওয়ার মিলটি উদ্বোধন করেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী।
সিটি গ্রুপ জানিয়েছে, সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ‘বুলার’ থেকে আনা হয়েছে কারখানার যাবতীয় মেশিন ও সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি। এই ফ্লাওয়ার মিলে দৈনিক ৫ হাজার টন আটা, ময়দা, সুজি উৎপাদিত হবে। এ কারখানায় কাঁচামাল থেকে পণ্য উৎপাদন এমনকি ট্রাকে পণ্য লোড দেয়া সবকিছুই হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে।
কীভাবে গুণগতমান ঠিক রেখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্বাস্থ্যসম্মত পণ্য উৎপাদিত হবে তার বিবরণও দিয়েছে সিটি গ্রুপ। কর্তৃপক্ষ বলছে, কারখানার সাইলো (কাঁচামাল রাখার জায়গা) থেকে কাঁচামাল প্রথমেই যাবে ম্যাগনেটিক সেপারেশন মেশিনে। যেখানে গমে লোহাজাতীয় উপাদান থাকলে তা আলাদা করবে। এরপর বাছাইকৃত কাঁচামাল যাবে টাচ মেশিনে। যেখানে প্রাথমিকভাবে গম পরিষ্কার করা হয়। এরপর বিন হয়ে চলে যাবে ভেগা সেপারেটর মেশিনে। এই মেশিন চালুনি হিসেবে কাজ করে। গমের চেয়ে বড় কিংবা ছোট দানাগুলোকে আলাদা করে ভেগা সেপারেটর। এখানে চার স্তরে চলে এই কার্যক্রম। একেকটি মেশিনের দৈনিক সক্ষমতা ৬২৫ মেট্রিক টন।
এরপর গমে থাকা পাথর বের করে দেয় ডি স্টোনার মেশিন। আটটি মেশিনের প্রতিটির দৈনিক সক্ষমতা ৬২৫ মেট্রিক টন। এরপর এসপারেটর মেশিনে বাতাসের মাধ্যমে গমের চেয়ে পাতলা দানা আলাদা করে নেয়। স্কোরার গমের গায়ের ময়লা পরিষ্কার করে। এরপর কালার সটার মেশিনে গমগুলোকে পাঠানো হয়। এই মেশিন ৩০টি ক্যামেরার মাধ্যমে গমে থাকা ভুট্টা, সয়াবিন ও ডাবরিসহ অন্যান্য উপদান শনাক্ত করে এবং বাছাই করা হয়। আদ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা হয় এমওয়াইএফডি মেশিনে। এরপর গমগুলোকে ২৪ ঘণ্টা বিনে রেখে পণ্য উৎপাদনের জন্য ক্রায়িংয়ে পাঠানো হয়।
কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, গমের পুষ্টিগুণ পরিমাপ করার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক এনআইআর মেশিনে। যে মেশিনের ডিসপ্লেতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গমের পুষ্টিগুণের তথ্য ভেসে উঠে। এ ছাড়া কারখানার মেঝে পরিষ্কার করার জন্য রয়েছে। অটোমেশন হাউস কিপিং সিস্টেম। মেঝেতে ময়লা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টেনে নেবে এই মেশিন।
কারখানাটিতে নারী-পুরুষ মিলিয়ে স্থানীয় দেড় হাজার মানুষ কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। যার মধ্যে প্রায় ৬০০ নারী কর্মী।