ডেস্ক নিউজ
স্বাধীনতার পর ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে দেশে পণ্য তৈরির শিল্প-কারখানার সংখ্যা ছিল মাত্র ১ হাজার ৪২৭টি। এসব শিল্প-কারখানায় বিনিয়োগকৃত সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩৬৫ কোটি টাকা। নিয়োগকৃত জনবলের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৭৪ হাজার জন। ২০১৯ সালে সেই শিল্প-কারখানার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৬ হাজার ৩০১টি। বিনিয়োগকৃত মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়াল ৩ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা প্রায় এবং এসব কারখানায় যুক্ত জনবলের সংখ্যা ৫৮ লাখ ৭৯ হাজার ৮৪৪ জন। এই হিসাবটি সামগ্রিক শিল্প খাতের নয়। শুধু ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্প খাতের।
২০১৯ সালের ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্প খাতের যে প্রাথমিক সার্ভে প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), সেই সার্ভেতে দেশে শুধু বড় আকারের কারখানার সংখ্যা হিসাব করা হয়েছে ৩ হাজার ৩১টি, যেগুলোর প্রতিটিতে নিয়োজিত শ্রমিকের সংখ্যা ২৫০ থেকে কয়েক হাজার পর্যন্ত; আর একেকটি কারখানায় বিনিয়োগের পরিমাণ শত কোটি থেকে হাজার কোটি টাকা। অপরদিকে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ আইএফসির হিসাবে দেশের মোট শ্রমশক্তির ৯৫ শতাংশ বা ৫ কোটি ৭০ লাখ কর্মসংস্থান হয়েছে বেসরকারি খাতে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ৫০ বছরে দেশে তাক লাগানো বিকাশ ঘটেছে বেসরকারি শিল্প খাতে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প থেকে শুরু করে মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প, সব খাতেই বিকাশ ঘটছে সমানতালে। দেশে কমপক্ষে ২০টি বড় বড় শিল্পগ্রুপ রয়েছে যারা যে কোনো প্রকল্পে ১০ হাজার কোটি থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ সক্ষমতা অর্জন করেছে। প্রথমসারির অন্তত ১০০ উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরেও সুনাম অর্জন করেছেন।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের অগ্রগতি নিয়ে সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলেছে, প্রবৃদ্ধি আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থান, মজুরি বৃদ্ধি ও দারিদ্র্য নিরসন সবই হচ্ছে বেসরকারি খাতের হাত ধরে। মোট শ্রমশক্তির ৯৫ শতাংশ বা ৫ কোটি ৭০ লাখ কর্মসংস্থান হয় বেসরকারি খাতে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে একশর বেশি পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত বড় শিল্প গ্রুপ আছে, যারা অর্থনীতির উদারীকরণ নীতি ও একটি কার্যকর শিল্পনীতির সুফল পুরো মাত্রায় গ্রহণ করে অদম্য উদ্যমে এগিয়ে গেছে।
‘বাংলাদেশস জার্নি টু মিডল-ইনকাম স্ট্যাটাস : দ্য রোল অব দ্য প্রাইভেট সেক্টর’ শিরোনামে করা আইএফসির এই প্রতিবেদনটিতে দেশের শীর্ষ ২৩টি বড় গ্রুপ বা কোম্পানির নাম উল্লেখ করে বলা হয়, এ কে খান গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, যমুনা গ্রুপ, স্কয়ার গ্রুপ, টিকে গ্রুপ, আকিজ গ্রুপ, বেক্সিমকো, ইউনাইটেড গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, পিএইচপি গ্রুপ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, পারটেক্স গ্রুপ, নোমান গ্রুপ, বিএসআরএম, কেডিএস গ্রুপ, হা-মীম, এসিআই লিমিটেড, ট্রান্সকম, ভিয়েলাটেক্স, প্যাসিফিক জিনস, কনফিডেন্স গ্রুপ ও ওয়ালটনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো দেশে উৎপাদন, আয় ও কর্মসংস্থানে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এর মধ্যে প্রথম ১০টি শিল্পগ্রুপের বার্ষিক আয় ১০০ কোটি ডলারের বেশি। বাকিগুলোর আয় ৫০ কোটি ডলার থেকে ১০০ কোটি ডলার পর্যন্ত। শিল্প খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় বিকাশটি ঘটেছে গত ১০ বছরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগবান্ধব নীতির কারণে বাংলাদেশের উন্নয়নে নেতৃত্ব দিচ্ছে বেসরকারি শিল্প খাত। এই নেতৃত্ব কেবল ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে নয়, এর বাইরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও যোগাযোগ অবকাঠামো নির্ভর খাতগুলোতেও এগিয়ে এসেছে দেশীয় শিল্প খাত।
উদ্যোক্তারা বলছেন, কয়েক বছর আগেও যেখানে বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণে বিদেশি উপকরণের ওপর ভরসা করতে হতো, এখন সেখানে অনেক উপকরণই পাওয়া যাচ্ছে দেশে। দেশীয় শিল্প কারখানায় তৈরি সিমেন্ট দিয়েই নির্মাণ হচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। শুধু তাই নয়, প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার আরেক মেগা প্রজেক্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণেও বসুন্ধরার সিমেন্ট ব্যবহৃত হচ্ছে। এক দশক আগেও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অবকাঠামো সুবিধার জন্য উদ্যোক্তাদের চেয়ে থাকতে হতো সরকারের দিকে। গত এক দশকে শক্তিশালী এই খাতটিতেও এগিয়ে এসেছে দেশের বেসরকারি উদ্যোক্তারা। সামিট গ্রুপের মতো দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ খাতের অবকাঠামো নির্মাণে এগিয়ে এসেছে। জ্বালানি চাহিদা মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরা। স্থানীয় প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় সীতাকুন্ডে সমুদ্র উপকূলসংলগ্ন ২২০ একর নিজস্ব জমির ওপর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল শোধনাগার প্লান্ট নির্মাণ করছে বসুন্ধরা অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশের জ্বালানি চাহিদার ৮০ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব হবে। রাজধানীর গুলিস্তান থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত দেশের প্রথম বৃহত্তম (মেয়র হানিফ) ফ্লাইওভার নির্মাণ করেছে বেসরকারি খাতের ওরিয়ন গ্রুপ। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি এসব ফ্লাইওভার নির্মাণ করতে এখন আর বিদেশি কোম্পানির প্রয়োজন হচ্ছে না। সেতু, ফ্লাইওভার, লালন সেতুর এপ্রোচ সড়কসহ দেশের বড় বড় অবকাঠামো উন্নয়নে সুনামের সঙ্গে কাজ করছে আবদুল মোনেম কনস্ট্রাকশনের মতো দেশীয় প্রতিষ্ঠান। দেশের উন্নয়নে এভাবেই বিপ্লব ঘটিয়ে চলছে বেসরকারি খাত। দুই দশক আগেও বড় বড় বিনিয়োগের জন্য জমিপ্রাপ্তি নিয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়ত বেসরকারি খাত। এখন সরকারের সহায়তায় নিজস্ব জমিতে, নিজেদের অর্থায়নে বড় বড় অর্থনৈতিক জোন গড়ে তুলছে বেসরকারি শিল্পগোষ্ঠী- যেসব জোনে নিজস্ব শিল্পপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও শত শত কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব আসছে। শুধু তাই নয়, কোনো কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে একাধিক অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। দেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ ঢাকার কামরাঙ্গীরচর ছাড়াও দেশের বৃহত্তম অর্থনৈতিক অঞ্চল মিরসরাইয়ে ৫০০ একর জায়গায় নিজেদের তৃতীয় অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এই শিল্পনগরীতে জমি বরাদ্দ পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে বসুন্ধরাই সর্বপ্রথম ভারী শিল্প স্থাপনের কাজ শুরু করেছে। এখানেই স্থাপন হচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপের কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, মাল্টি স্টিল মিলস প্রি-ফেবরিকেটেড কোম্পানির কারখানা। সংশ্লিষ্টদের মতে, স্বাধীনতার পরও এক দশক পর্যন্ত দেশের শিল্প বলতে ছিল কয়েকটি পাট, কাগজ ও চিনিকল। এ ছাড়া তাঁত বস্ত্র কারখানা হস্ত ও কুটির শিল্পের মতো ছোট ছোট এলাকাভিত্তিক কয়েকটি শিল্প ছিল কয়েকটি জেলায়। উপরন্তু পাট ও কাগজ শিল্পের মতো মাঝারি ও বড় শিল্পগুলো সবই ছিল সরকারের নিয়ন্ত্রণে। এখন এসব শিল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছে বেসরকারি খাত। দেশে এশিয়ার সর্ববৃহৎ কাগজের কারখানা স্থাপন করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। দেশে উৎপাদিত উন্নতমানের কাগজ অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। চিনি ও ভোজ্যতেল পরিশোধনেও এগিয়ে রয়েছে বেসরকারি উদ্যোক্তারা। তারা এখন পরিশোধিত চিনি ও ভোজ্যতেল বিদেশে রপ্তানি করছে। শুধু পাট, কাগজ বা চিনি, তেল নয়, ব্যবসা-বাণিজ্যের সব ক্ষেত্রেই এখন বেসরকারি খাতের আধিপত্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা বস্ত্র ও পোশাকশিল্প গত কয়েক দশকে অর্থনীতির মেরুদন্ড হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি, ওষুধ শিল্প, প্লাস্টিক, চামড়া কারখানা, ইস্পাত শিল্প, ইলেকট্রনিক্স পণ্য, হালকা প্রকৌশলী পণ্য, জাহাজ নির্মাণ কারখানা এসব শিল্পে এখন শুধু দেশেই নয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও স্বীকৃতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। কাগজ শিল্প থেকে শুরু করে সিমেন্ট শিল্প, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য থেকে খাদ্যপণ্য, এলপিজি গ্যাস, বিটুমিন, প্লাস্টিকের খেলনা, সাইকেল, মোটরবাইক, মোটরভ্যাহিকেল, এমন কি হাজার মেট্রিক টন পণ্যধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজ নির্মিত হচ্ছে দেশের কারখানায়।
বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক সময় ব্র্যান্ডের পণ্য বলতে বোঝাত বিদেশি কোম্পানির পণ্য। গত ৫ দশকে এখন বাংলাদেশের শিল্পগুলো বিশ্ববাজারে নিজেদের ব্র্যান্ড হিসেবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষ বিশেষ পণ্যে এসব ব্র্যান্ড আন্তর্জাতিক বাজারেও সুনাম অর্জন করেছে। বসুন্ধরা গ্রুপের কাগজ, আটা, ময়দা, ভোজ্যতেল থেকে শুরু করে স্যানিটাইজিং পণ্যগুলো দেশের বাজার ছাড়িয়ে অন্যান্য দেশেও রপ্তানি হচ্ছে। প্রাণ গ্রুপের ফলের জুস, ও অন্যান্য প্যাকেটজাতপণ্য ভারত, নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ায় প্রচলিত। আকিজ গ্রুপের পার্টিক্যাল বোর্ড, ওয়ালটনের ইলেকট্রনিক্স পণ্য, রানার গ্রুপের মোটরসাইকেল এখন দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে।
লৌহ ও ইস্পাত শিল্পের মতো ভারী শিল্পেও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশীয় ইস্পাত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিএসআরএম, জিপিএইচ, আরআরএম, পিএইচপি ফ্যামিলি ও আরএসআরএম-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এখন আন্তর্জাতিক বাজারে সুনাম অর্জন করেছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ডেনিম পণ্য বিশ্বসেরা। বিশ্বের মোট পোশাক সরবরাহের দ্বিতীয় শীর্ষ উৎস বাংলাদেশ। বিশ্বসেরা পোশাক খাতের ব্র্যান্ড জারা, এইচ অ্যান্ড এম, ওয়ালমার্ট, ইন্ডিটেক্স-এর মতো ব্র্যান্ডগুলো এখন বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের জন্য অপেক্ষায় থাকে। মানসম্পন্ন ফুটওয়্যার পণ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ড হিসেবে তুলে ধরছে এপেক্স, বেঙ্গল, আর্থ, ফরচুনা, জিল ওয়্যার ও ল্যান্ডমার্ক-এর মতো শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। এসব কারখানায় ডাইচম্যানের জনপ্রিয় ফিফথ এভিনিউ, এএম সুজ, ফিলা, গ্রেসল্যান্ড, ল্যান্ডলোভার, আগাক্সি, বারেনসচু, ক্যাটওয়াক, ক্লাউডিও কন্টি, ভেনিস, ভিক্টরি, ভিটিওয়াই ও গালুসের মতো ব্র্যান্ডের জুতা তৈরি হচ্ছে।
প্লাস্টিক শিল্পেও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের বেসরকারি খাত। আর এ শিল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছে প্রাণ আরএফএল গ্রুপ, বেঙ্গল গ্রুপ, এন মোহাম্মদ, এসিআই, তানিন বেস্টওয়্যার ও আকিজের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। বর্তমানে বাংলাদেশি প্লাস্টিক পণ্যের বাজারের আকার ২ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার। দেশে প্রায় ৫ হাজার কারখানা গড়ে তুলেছেন প্লাস্টিক শিল্পের উদ্যোক্তারা।
ওষুধ শিল্পেও এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। বর্তমানে দেশের চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশে উৎপাদিত হয়। অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১৯-এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের ৫৪টি প্রতিষ্ঠান বিশ্বের ১৪৬টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে। দেশে ২৭২টি অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বছরে ২৯ হাজার ৫৫৮টি ব্র্যান্ডের ২২ হাজার কোটি টাকার ওষুধ উৎপাদন করছে। বিশ্বাজারে বাংলাদেশের ওষুধ ছড়িয়ে দিতে ভূমিকা রাখছে বেক্সিমকো, স্কয়ার, এসিআই, ইনসেপ্টা, গ্লাক্সো, রেনেটার মতো শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো।
এর বাইরে হালকা প্রকৌশলশিল্প, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, প্রসাধনী, আবাসন, ম্যানুফ্যাকচারিং খাতসহ আরও অনেক শিল্প খাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে দেশীয় কোম্পানিগুলো। দেশীয় এসব শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের কারণে কমছে আমদানি-নির্ভরতা। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে এসব খাতের রপ্তানিও বাড়ছে। ব্রিটেনের অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ইকোনমিক অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর) এর সাম্প্রতিক রিপোর্টের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বিকাশ অব্যাহত থাকলে ২০৩৫ সাল নাগাদ দেশটি হবে বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবল ২০২১’ নামের ওই রিপোর্টটি গত ডিসেম্বরে প্রকাশ করা হয়। সিইবিআর বলছে, ২০২০ হতে ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতির সূচকে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে। ২০২৫ সালে বাংলাদেশের অবস্থান হবে ৩৪। এর পাঁচ বছর পর ২০৩০ সালে বাংলাদেশ হবে ২৮তম বৃহৎ অর্থনীতি। ২০৩৫ সালে ঢুকবে প্রথম ২৫টি দেশের তালিকায়। বিশ্বের ১৯৩টি জাতিরাষ্ট্রের মধ্যে আয়তন দিক দিয়ে ৯২তম এই ছোট্ট রাষ্ট্রটি স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যে বেসরকারি খাতের হাত ধরে অর্থনীতিতে এমন এক বিপ্লব সাধন করতে যাচ্ছে, যেটি এখন অর্থনীতিবিদদের গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।