ডেস্ক নিউজ
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশেই আন্তর্জাতিক মানের টিকা উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে ব্রিটিশ-সুইডিশ বহুজাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি এ্যাস্ট্রাজেনেকার কাছে ‘প্রযুক্তি’ চেয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশে টিকা উৎপাদনের অনুমতি দিতে এ্যাস্ট্রাজেনেকাকে অনুরোধ করেছে সরকার।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, ১০ দিন আগে এ্যাস্ট্রাজেনেকাকে সরকার একটি চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশকে তাদের প্রযুক্তি দিতে, যাতে দেশেই টিকা উৎপাদন করা যায়। তবে এখন পর্যন্ত কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গণমাধ্যমকে বলেন, দেশে টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা আমাদের আছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ্যাস্ট্রাজেনেকাকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের কয়েকটি ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠানের সে সক্ষমতা রয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে সেসব প্রতিষ্ঠানের কিছু প্ল্যান্ট দেখে এসেছি। টিকা উৎপাদনে তাদের সক্ষমতা রয়েছে।
এর আগে গত ১৮ মার্চ সাভারের জিরাবোতে ইনসেপ্টার ভ্যাকসিন কারখানা পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সেখানে মন্ত্রী বলেন, করোনার টিকা তৈরিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত ল্যাব (পরীক্ষাগার) প্রয়োজন, যা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে। এই ল্যাবের একটি অংশ (কেমিক্যাল) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আমাদের অনুমোদন দিয়েছে। বাকি অংশ অনুমোদন নেয়ার প্রস্তুতি চলছে। এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানোর প্রক্রিয়াও চলছে।
জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের দেশ বিভিন্ন খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ওষুধ খাতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে বিদেশেও রফতানি করছি। আমাদের দেশের বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান টিকা তৈরি করছে। করোনার টিকা তৈরি করতে স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে আমরা পর্যাপ্ত সহযোগিতা করব।
তিনি আরও বলেন, বাল্কে আমরা টিকা তৈরি করতে পারি। তবে এসব আমাদের বাইরে থেকে সংগ্রহ করতে হবে। এসব টিকা তৈরির পর সেটি কতটা কার্যকর তাও পরীক্ষা করা হবে।
জানা যায়, দেশে টিকা তৈরি করতে পারলে দেশবাসীর মাঝে খুব সহজেই সরবরাহ করতে পারবে সরকার। দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো কোভিডের সব ওষুধ তৈরি করছে। দেশেই এসব ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। দেশীয় কোম্পানিগুলো যদি টিকা তৈরি করে, সেগুলোও সরকার নেবে। এ ছাড়া প্রাথমিকভাবে ভারত থেকে টিকা নিয়েছে সরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকেও টিকা দেয়ার কথা রয়েছে। এই টিকা পেলে ২২ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত বয়সের মানুষকে সরবরাহ করা যাবে।
জানা যায়, ইনসেপ্টার প্রতি বছর ১৮০ মিলিয়ন ডোজ টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। এটি সবার জন্য সুখবর। সারাবিশ্বে যখন করোনা টিকার বিপুল চাহিদা তৈরি হবে, তখন ওয়ার্ল্ড কমিউনিটি এ সুবিধা ব্যবহার করবে বলে সরকার মনে করছে।
ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুক্তাদির বলেন, ইনসেপ্টা লিমিটেড ইতোমধ্যে দেশ ও দেশের বাইরে বিপুল আস্থা ও প্রশংসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এই কোম্পানির প্রধান উদ্দেশ্য হলো সাশ্রয়ী মূল্যে বাংলাদেশের সুবিশাল জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি উন্নয়নশীল বিশ্বকে বিভিন্ন সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করা।