ডেস্ক নিউজ
পদ্মা সেতু নির্মাণ, মোংলা বন্দরে অবকাঠামো উন্নয়ন, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা-মোংলা রেললাইনসহ বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। সেই সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে খুলনা-মোংলা সড়ক ছয় লেন ও কল-কারখানা স্থাপনে অর্থনৈতিক জোন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে শিল্প ও বিনিয়োগে পিছিয়ে পড়া এ অঞ্চলে পাল্টে যাবে অর্থনীতি। সেই সঙ্গে বাড়বে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ। তৈরি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ। সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্তে পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোংলা বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ২০১৭ সালে ১১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ চলমান রয়েছে। মোংলা বন্দরের গতিশীলতা ফেরাতে খননকাজে ড্রেজিং মেশিন কেনা হয়েছে। আউটারবারে নাব্য বৃদ্ধিতে সাড়ে ৯০০ কোটি টাকায় খননকাজ করা হয়েছে। আরও ৭৯৩ কোটি টাকায় ইনারবারে হারবারিয়া (জয়মনিরঘোল) থেকে জেটি পর্যন্ত খননকাজ চলছে। ড্রেজিং কাজ শেষ হলে বড় জাহাজ সরাসরি বন্দরের জেটিতে আসতে পারবে। তিনি বলেন, মোংলা ইপিজেডে একের পর এক ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠছে। প্রায় ৫ হাজার নারী শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে এখানে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চলতি বছরের মধ্যে খুলনা-মোংলা রেললাইন চালু হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ মোংলা বন্দরে মালামাল লোড-আনলোডে গতি ফিরবে। তবে যোগাযোগের সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে পদ্মা সেতু। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ্জামান বলেন, পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে অর্থনীতির চাকা পাল্টে যাবে। দক্ষিণাঞ্চলে শিল্প খাতের বিকাশ, কর্মসংস্থান, রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের প্রধান প্রফেসর ড. শাহনেওয়াজ নাজিমুদ্দিন আহমেদ বলেন, মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে আয় বৈষম্য হ্রাস পাবে। এতে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগে ভারসাম্য আসবে।
মোংলাভিত্তিক যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে তাতে এরই মধ্যে বিনিয়োগের সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। তবে মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থনীতিতে সুফল পেতে সমন্বিত অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের দাবি উঠেছে।
খুলনা মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম বলেন, দৃশ্যমান যেসব মেগা প্রজেক্ট হচ্ছে তা থেকে আরও বেশি সুফল মিলবে যদি অর্থনৈতিক ক্ষেত্র, শিল্প কল-কারখানা তৈরিসহ অন্য সেক্টরগুলোতেও ‘প্যারালাল ডেভেলপমেন্ট’ হয়।