ডেস্ক নিউজ
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেশীয় ও গাড়ল জাতীয় ভেড়ার সংকরায়ণের সাফল্য মিলেছে। এই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় উপকূলীয় অঞ্চলে সংকর জাতের ভেড়া পালনে দারিদ্র্য বিমোচন ও মাংসের চাহিদা পূরণের সম্ভাবনা দেখছেন গবেষকরা। আগামী বছর এ গবেষণালব্ধ প্রযুক্তি কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।
সুন্দরবনসংলগ্ন খুলনার উপকূলীয় অঞ্চলের লবণাক্ত জমিতে চিংড়ি চাষের আধিক্যের কারণে দিন দিন গৃহপালিত পশুর চারণভূমি কমছে। ফলে এ অঞ্চলে গৃহপালিত পশুর সংখ্যাও কমছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ২০১৯ সাল থেকে স্থানীয় ভেড়া ও মেহেরপুর অঞ্চলের গাড়লের সংকরায়ণ নিয়ে গবেষণা শুরু করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) অ্যাগ্রোটেকনোলজি বিভাগের গবেষকরা। ইতিমধ্যে এ গবেষণার মাধ্যমে দেশি ভেড়া ও গাড়লের ক্রস ব্রিডিং করে এ পর্যন্ত ২৪টি শাবকের জন্ম হয়েছে। যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও বৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক।
খুবির অ্যাগ্রোটেকনোলজি বিভাগের গবেষণা সহকারী মণীষা দে জানান, সংকর জাতীয় ভেড়ার যে বাচ্চা জন্ম হয়েছে তাদের চার শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এদের এক শ্রেণিকে কোনো প্রকার বাড়তি খাবার দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া অপর তিন শ্রেণিকে তৃণ জাতীয় খাবারের পাশাপাশি একশ গ্রাম, দেড়শ গ্রাম, দুশো গ্রাম ও আড়াইশো গ্রাম করে গমের ভুসি, ডালের ভুসি, চালের কুড়াসহ দানাদার জাতীয় খাদ্য দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া প্রতি ১৫ দিন পর পর ভেড়ার বাচ্চাগুলোর ওজন পরিমাপের মাধ্যমে তাদের জন্মের সময়কাল থেকে প্রতিনিয়ত ওজন বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
গবেষণা সহকারী মিনহাজুল আবেদীন সান বলেন, খাবার কম লাগার পাশাপশি প্রতিদিন ভেড়ার ওজন পরিমাপ করে ৪৫ ও ৬০ গ্রামের বেশি পাওয়া যাচ্ছে।
গবেষণা প্রধান ও অ্যাগ্রোটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, খুলনার উপকূলীয় অঞ্চলের দরিদ্র মানুষ সংকর জাতের ভেড়া পালন করে দারিদ্র্য বিমোচন করতে সক্ষম হবে। এছাড়া ভেড়ার মাংসের মূল্য কম হওয়ায় সাধারণ মানুষ ভেড়ার মাংস খেয়ে আমিষের চাহিরদা পূরণ করতে পারবে।
খুবির অ্যাগ্রোটেকনোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধাপক ড. সরোয়ার জাহান বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের জলবায়ুর যে বৈশিষ্ট্য রয়েছে তার সঙ্গে সহজেই সংকর জাতের ভেড়া খাপ খাইয়ে নিতে পারবে। এই ভেড়ার জন্য অতিরিক্ত চারণভূমির প্রয়োজন পড়বে না। তিনি বলেন, আগামী বছর গবেষণালব্ধ প্রযুক্তি কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।