ডেস্ক নিউজ
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্যোগে আজ বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী জলবায়ু সম্মেলন। ভার্চুয়াল সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এ সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে চারটি দাবি তুলে ধরবেন। এ ছাড়া জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জোট ‘ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ)’ সভাপতি হিসেবে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানাবেন।
জো বাইডেন এ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪০ জন বিশ্বনেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি ওই আমন্ত্রণপত্র নিয়ে গত ৯ এপ্রিল বাংলাদেশ সফর করেছেন। সে সময় তিনি জলবায়ু ইস্যুতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারগুলোর বিষয়েও জানা ও বোঝার চেষ্টা করেছেন।
এই সম্মেলনে বাংলাদেশ কী দাবি জানাবে, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের দাবি, প্রত্যেক দেশ যেন তার ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন (এনডিসি) অঙ্গীকার পূর্ণ করে। আমাদের ইস্যু থাকবে, প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু তহবিলে দেবে। এর ৫০ ভাগ অভিযোজন, বাকি ৫০ ভাগ প্রশমনে ব্যয় হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বহু লোক নদীভাঙনের ফলে বাস্তুচ্যুত হয়। এই নদীভাঙন, লবণাক্ততার কারণে বাস্তুচ্যুতি ধনী দেশগুলোর কারণে। তাই আমাদের দাবি, ওদের পুনর্বাসনে আমাদের সাহায্য কর। এটি সবার কাজ হওয়া উচিত। আমরা ওদের এই ঝামেলায় ফেলিনি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা বৃক্ষরোপণ, বনায়ন করতে চাই বড় আকারে। ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাফরেস্টেশন প্রগ্রাম’ আমরা নিয়েছি। আমরা চাই, সেটিতে যেন সবাই সাহায্য করে। এ ছাড়া আমরা বাঁধগুলো আরো বড় করে সেখানে বনায়ন করতে চাই। এর ফলে অভিযোজন, প্রশমন—দুটিই হবে।”
সিভিএফের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জন কেরি বলেছেন, এ ক্ষেত্রে ধনী দেশগুলোকে রাজি করানো খুব কঠিন হবে। বিষয়টি তাঁর জন্য খুব কঠিন। আমরা বলেছি, আগে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার জোগাড় করেন। এ ছাড়া আমরা ‘রিজিওনাল অ্যাডাপটেশান সেন্টার’ চালু করেছি। এটিতে তারা সহায়কের ভূমিকা পালন করতে পারে।”
জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় (ওয়াশিংটন ডিসি সময় সকাল ৮টায়) শুরু হবে জলবায়ু সম্মেলন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস সম্মেলনের উদ্বোধন পর্বের অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিনকেন এবং প্রেসিডেন্টের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি। ওই অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং যোগ দেবেন। এ ছাড়া আর্জেন্টিনা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, চিলি, কলম্বিয়া, ইউরোপীয় কমিশন, ফ্রান্স, গ্যাবন, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, মেক্সিকো, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় নেতারা ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর সম্মেলনের প্রথম দিন তিনটি পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। পরের দিন, আগামীকাল শুক্রবার আরো দুই পর্বে আলোচনা হবে। শেষ পর্বে ব্রেকথোএনার্জির প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসসহ অন্য নেতারা বক্তব্য দেবেন।