তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশকে আরো ফলপ্রসূ করতে ৫৫৫টি উপজেলা ডিজিটাল সার্ভিস এন্ড ইমপ্লয়মেন্ট সেন্টার তৈরী করবে সরকার। এসব সেন্টার সরকারী সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি উদ্যোক্তা তৈরীতে কাজ করবে। প্রতিমন্ত্রী আজ মঙ্গলবার সকাল দশটায় সিংড়া উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে উপজেলার ছয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্যে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২০ জোড়া বে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষের বর্তমান মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৬৯ ডলার। আমাদের দেশের জিডিপি’র পরিধি ৩৪৮ বিলিয়ন ডলার। এদেশের সম্পদ লুট করেও পাকিস্তানের অর্থনীতি আমাদের চেয়ে অর্ধেক অবস্থানে। স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীতে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা এসেছেন এবং দেশের উন্নয়নে মুগ্ধ হয়েছেন। দেশের এই অগ্রযাত্রার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানসহ শতাধিক দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান। দেশের ধারাবাহিক উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রায় ২০৪১ সালে দেশ চলে যাবে উন্নত দেশের কাতারে। পলক বলেন, দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করার পাশাপাশি সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে সরকার।
সরকারী দপ্তরগুলোতে নাগরিক সেবাকে আরো সহজীকরণ ও সেবার পরিধি বৃদ্ধির জন্যে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। দেশের ৫৫৫টি উপজেলা পরিষদে ডিজিটাল সার্ভিস সেন্টার এন্ড ইমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টার তৈরী করবে সরকার। এসব সেন্টারে ২৪ ঘন্টা নাগরিক সেবা প্রদান করা হবে। পাশাপাশি এই রিসোর্স সেন্টারগুলো ফ্রিল্যান্সার তৈরীর জন্যে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবেও কাজ করবে। প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুখী-সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’র আধুনিক রুপ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে কার্যকর সকল পদক্ষেপ গ্রহন করে প্রয়োজনীয় প্লাটফর্ম তৈরী করে দিচ্ছে সরকার। তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ শিক্ষিত জনগোষ্ঠি গড়ে তুলতে দেশের আট হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্যে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়কে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩৯টিহাইটেক পার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তি খাতে ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সাড়ে ছয় লাখ ফ্রিল্যান্সার কাজ করে যাচ্ছেন। তথ্য প্রযুক্তি’র রপ্তানী আয় বর্তমানে এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম সামিরুল ইসলাম সভা প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। পরে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সিংড়া উপজেলা বাসষ্ট্যান্ডে ৩১টি শ্রমিক সংগঠনের এক হাজার দুইশ’ শ্রমিকের হাতে ঈদ উপহার হিসেবে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন।
উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে পলক বলেন, আমেরিকা, ইউরোপসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলো করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে আমাদের দেশ করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। জীবন ও জীবিকা-উভয়কে রক্ষা করে । দেশের চার কোটি মানুষের কাছে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এবং সাড়ে ৩৬ লক্ষ মানুষ ঘরে বসে আড়াই হাজার টাকার অনুদান পেয়েছেন। বর্তমান সরকার বিগত ১৩ মাসের মত ভবিষ্যতেও অসহায় মানুষের পাশে থাকবে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি যথাযথভাবে অনুসরণের জন্যেও শ্রমিকদের প্রতি অনুরোধ জানান প্রতিমন্ত্রী। এরআগে প্রতিমন্ত্রী পলক উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তাঁর স্বেচ্ছাধীন তহবিলের সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার চেক ১৩টি ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং ৫৮টি অসহায় পরিবারের হাতে তুলে দেন।