ডেস্ক নিউজ
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় ‘লকডাউন’ বা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। যা এখনো চলমান রয়েছে। এই বিধিনিষেধের মধ্যে বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে দেশের পুঁজিবাজার। লকডাউনের ছয় সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ল ৩৩ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৯২ হাজার ২৯২ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল চার লাখ ৮৯ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে দুই হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। আগের পাঁচ সপ্তাহেও বড় অঙ্কের মূলধন বাড়ে বাজারটিতে। আগের পাঁচ সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ে ৩০ হাজার ৭০১ কোটি টাকা।
গত সপ্তাহে প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গেল সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী ছিল বাজার। এতে সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। সেই সঙ্গে বেড়েছে প্রধান মূল্য সূচক। পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৬২ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট। আগের পাঁচ সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৪৯৫ দশমিক ৭২ পয়েন্ট। অর্থাৎ টানা ছয় সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বাড়ল ৫৫৮ দশমিক ২৯ পয়েন্ট। অবশ্য তার আগের চার সপ্তাহ টানা এই সূচকটি কমে। আগের চার সপ্তাহের টানা পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমে ৩১৪ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্য সূচকের বড় উত্থান হলেও গত সপ্তাহজুড়ে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গেল সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে আট দশমিক ৪০ পয়েন্ট। তবে আগের পাঁচ সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ১৯৬ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট। অপরদিকে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচকও টানা পাঁচ সপ্তাহ বড়ার পর গত সপ্তাহে কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে সূচকটি কমেছে দুই দশমিক ৩৩ পয়েন্ট। আগের পাঁচ সপ্তাহের টানা উত্থানে সূচকটি বাড়ে ৭৭ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্য সূচকের উত্থানের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৬৯টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৯টির। আর ৫৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৬৮৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় এক হাজার ৪০২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৪৮১ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে আট হাজার ৪২৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় চার হাজার ২০৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে চার হাজার ২১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। মোট লেনদেন বেশি হারে বাড়ার কারণ গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে দুই কার্যদিবস কম লেনদেন হয়। গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বেক্সিমকো, প্রাইম ব্যাংক, সাইফ পাওয়ার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, রবি, ন্যাশনাল ফিড, আইএফআইসি ব্যাংক, জিনেক্স ইনফোসিস এবং ম্যাকসন স্পিনিং।