ডেস্ক নিউজ
অবশেষে কমতে শুরু করেছে চালের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে চালভেদে কেজিতে দুই থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত কমেছে। গত কয়েক মাস ধরে চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখি থাকার পর দাম কমায় কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে স্বল্প আয়ের মানুষের জীবনে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি বোরো মৌসুমের নতুন ধান-চাল বাজারে আসায় চালের বাজার এখন নিম্নমুখী। এছাড়া বোরো মৌসুমে বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় উত্পাদন ভালো হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে।
উল্লেখ্য, গত বছর দেশে চার দফা বন্যায় আমন আবাদ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১ লাখ টন আবাদ কম হয় আমনের। এছাড়া করোনা সংকটকালীন সময়ে সরকার অসহায়, শ্রমজীবী মানুষকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দেয়। এতে সরকারের গুদামে চালের মজুত উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়। এর সুযোগ নেয় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। তারা সুযোগ বুঝে দফায় দফায় চালের দাম বাড়িয়ে দেয়। চাল আমদানি করেও চালের দামের লাগাম টানা যায়নি। নতুন বোরো ওঠায় সেই চালের বাজার এখন কমতির দিকে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর তুরাগ এলাকার নতুন বাজার, শান্তিনগর বাজার ও কাওরানবাজারে খোঁজ নিয়ে চালের বাজারের এ চিত্র পাওয়া যায়। গতকাল বাজারে সরু চাল নাজিরশাইল/মিনিকেট ৫৫ থেকে ৬২ টাকা, পাইজাম/লতা ৪৮ থেকে ৫২ টাকা ও মোটা চাল ইরি/স্বর্না ৪২ থেকে ৪৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। যা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে চালভেদে তিন থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত কম। সবচেয়ে বেশি সরু চালের দাম কেজিতে কমেছে পাঁচ টাকা। আর এক মাসের ব্যবধানে নাজিরশাইল/মিনিকেট ৬ দশমিক ৪ শতাংশ, পাইজাম/লতা ৯ শতাংশ ও ইরি/স্বর্ণার দাম ৫ শতাংশ কমেছে। কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বছর বোরোতে ২ কোটি ৫ লাখ টন চাল উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর উত্পাদন হয়েছিল ১ কোটি ৯৬ লাখ টন। গতকাল রাজধানীর নতুন বাজারের চাল ব্যবসায়ী হুমায়ুন ফরিদ বলেন, দেশের হাট-বাজারে এখন নতুন ধান-চালে ভরা। মৌসুমের শুরুতে ধানের দাম একটু বেশি থাকলেও এখন কমতির দিকে।
বেড়েছে পেঁয়াজের দাম : সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সবজির দামও এখন বাড়তি। গতকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে বেগুন ৩০ থেকে ৪০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মূলা, গাজর ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, টম্যাটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মটরশুটি, কাঁকড়ল, বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, আলু ২০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এদিকে শীত চলে গেলেও এখনো মিলছে বাঁধাকপি, ফুলকপি। আকারভেদে প্রতিটি ফুলকপি, বাঁধাকপি পাওয়া যাচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। এছাড়া লাউ পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।
গতকাল বাজারে মাংসের মধ্যে খাসি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, গরু ৫৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ব্রয়লার ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা, সোনালি (কক) ২৩০ টাকা ও লেয়ার ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।