ডেস্ক নিউজ
সরকারের সব শ্রেণির জমির বাস্তব অবস্থান ও হিসাব বের করে ডিজিটাল ভূমি ডেটাব্যাংক তৈরি করা হবে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সফটওয়্যার তৈরির পাইলট কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। চর ডেভেলপমেন্ট সেটেলমেন্ট প্রজেক্টের (সিডিএসপি) আওতায় শিগগির দরপত্র আহ্বান করা হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাঠ প্রশাসন) প্রদীপ কুমার দাস রোববার যুগান্তরকে বলেন, ‘সরকারি জমি যাতে বেহাত কিংবা অপব্যবহার হতে না পারে, সেজন্য সব শ্রেণির সরকারি জমির ডিজিটাল ডেটাব্যাংক প্রস্তুত করা হবে। এরপর এসব জমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। এরকম সুচিন্তাকে সামনে রেখে ভূমিমন্ত্রী ও সচিব মহোদয় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি জানান, এ সংক্রান্ত কাজ শেষ হলে কেন্দ্রীয় ডেটাবেজকে ‘ভূমি ব্যাংক’ হিসাবে নামকরণ করা হবে। ভবিষ্যতে এ সংক্রান্ত ‘অ্যাপ’ প্রস্তুত করার চিন্তাভাবনাও রয়েছে। সেক্ষেত্রে যে কেউ চাইলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও অ্যাপে ঢুকে দেশের যে কোনো স্থানের সরকারি জমি বের করতে পারবে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, খাস খতিয়ানের জমি ছাড়াও সরকারের অধীনে থাকা অর্পিত, পরিত্যক্ত ও সাইরাত মহলের জমিও ডিজিটাল ডেটাবেজে অন্তর্ভুক্ত হবে। এজন্য প্রথমে পাইলট কর্মসূচি হিসাবে নোয়াখালী জেলা প্রশাসন কাজ শুরু করেছে। একটি নির্দিষ্ট মেয়াদে নোয়াখালী জেলার পাইলট প্রকল্প শেষ হলে তা পর্যায়ক্রমে সব জেলা নেটওয়ার্কে অন্তর্ভুক্ত হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী জেলার ডিসি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান যুগান্তরকে বলেন, সিডিএস প্রকল্পের আওতায় তিনটি উপজেলা নিয়ে একটি পাইলট প্রকল্প শুরু হতে যাচ্ছে। উপজেলাগুলো হলো নোয়াখালীর সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জ এবং চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ। এই তিনটি উপজেলার সব শ্রেণির সরকারি জমিকে একটি ডেটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যে ডেটাবেজে পরবর্তী সময়ে আরও উপজেলার তথ্য যুক্ত করা যাবে। এরকম সক্ষমতাসম্পন্ন সর্বাধুনিক সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হবে। পুরো কাজটি পিপিআর অনুসরণ করে দরপত্রের মাধ্যমে অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হবে। তিনি জানান, শিগগির দরপত্র আহ্বান করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, সিডিএস প্রকল্পের মেয়াদ আগামী বছর জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে মেয়াদ বাড়ানো হবে। প্রকল্পটি সফল হলে সরকারি জমির বেদখল কিংবা অপব্যবহারের পথ বন্ধ হবে। এছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয়সহ ভূমি প্রশাসনের সব পর্যায়ের পদস্থ কর্মকর্তারা চাইলে ডেটাবেজে ঢুকে সরকারি জমির মালিকানা স্বত্ব যাচাই করে নিতে পারবেন। বিশেষ করে নামজারি করার সময় সংশ্লিষ্ট মৌজায় ঢুকে সরকারি জমির তালিকা যাচাই করা সহজ হবে। ফলে কারও পক্ষে সরকারি জমি ব্যক্তি নামে নামজারি করার সুযোগ থাকবে না।
জানা গেছে, ভূমি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে অর্পিত ও পরিত্যক্ত তালিকার সম্পত্তির হিসাব জেলা প্রশাসন থেকে মন্ত্রণালয়ে এনে সংরক্ষণ করেছে। এ তথ্যগুলো কেন্দ্রীয় ডেটাবেজে যুক্ত করা হবে। পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিত্যক্ত সম্পত্তিকে ১নং খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করে তা খাসজমি বন্দোবস্ত নীতিমালা অনুযায়ী নতুন করে লিজ দেওয়া হবে।