ডেস্ক নিউজ
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে আজ (১০ জুন) উদ্বোধন হচ্ছে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি মসজিদগুলোর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলতি বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ১০০টি মসজিদের কাজ শেষ হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে সারা দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ তৈরি করা হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একসঙ্গে এত মসজিদ কেউ তৈরি করেননি।
প্রকল্পের উপপরিচালক মো. শফিকুর রহমান তালুকদার সময়ের আলোকে জানান, এ প্রকল্পের মাধ্যমে সমাজ থেকে ধর্মান্ধতা ও জঙ্গিবাদ দূর হবে। ইসলামের প্রকৃত শিক্ষায় আলোকিত ও মসজিদভিত্তিক সমাজ গড়ে উঠবে। উপপরিচালক আরও জানান, মসজিদ পরিচালনায় জেলা-উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা যুক্ত থাকবেন। শুরুতে প্রতি মসজিদে ইমাম-মুয়াজ্জিনের পাশাপাশি দুজন খাদেম থাকবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই উদ্যোগকে বিশে^ অনন্য দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেন মডেল মসজিদ প্রকল্পের উপপরিচালক মো. শফিকুর রহমান তালুকদার। তিনি বলেন, বিশে^র সবচেয়ে বড় মসজিদ প্রকল্পের উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এর আগে একসঙ্গে এত মসজিদ কেউ তৈরি করেননি। দেশব্যাপী মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে সারা দেশে শক্তিশালী ইসলামী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা হবে। সন্ত্রাস ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ এবং সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ও সে বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো হবে।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, অনুমোদিত প্রকল্পের নকশা অনুযায়ী ৪০ শতাংশ জায়গার ওপর জেলা পর্যায়ে চারতলা ও উপজেলার জন্য তিনতলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চারতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতিকেন্দ্রের কাজ চলমান রয়েছে। তিন ক্যাটাগরিতে মসজিদগুলো নির্মিত হচ্ছে। জেলা শহর ও সিটি করপোরেশনে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ৬৯টি চারতলা মসজিদ হচ্ছে। সব উপজেলায় ‘বি’ ক্যাটাগরির ৪৭৫টি মসজিদ হবে। এ ছাড়া ‘সি’ ক্যাটাগরির মসজিদ ১৬ উপকূলীয় এলাকায়।
জানা গেছে, মসজিদগুলোয় ইসলামী নানা বিষয়সহ প্রতিবছর ১ লাখ ৬৮ হাজার শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার ২৪০ জন দেশি-বিদেশি অতিথির আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। মসজিদভিত্তিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে পবিত্র হজ পালনের জন্য ডিজিটাল নিবন্ধনের ব্যবস্থা থাকবে। উপকূলীয় এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে মসজিদগুলোর নিচতলা ফাঁকা থাকবে।
জেলা সদর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় নির্মাণাধীন প্রতিটি মসজিদে একসঙ্গে ১ হাজার ২০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। উপজেলা ও উপকূলীয় এলাকার মডেল মসজিদে একত্রে ৯০০ মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান ও ধর্ম সচিব মো. নুরুল ইসলাম, সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকসহ অন্য কর্মকর্তারা রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন থেকে যুক্ত হবেন।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের উদ্যোগে ঢাকার সাভার ও মানিকগঞ্জের শিবালয় মডেল মসজিদ পরিদর্শন করেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
সাভার মডেল মসজিদে সরেজমিন দেখা গেছে, চারতলা এই মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ১৩ ধরনের বিশেষ সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নারী-পুরুষের আলাদা অজ-নামাজের ব্যবস্থা। থাকছে প্রতিবন্ধীদের জন্যও আলাদা ব্যবস্থা। এ ছাড়া ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, ইমাম ট্রেনিং সেন্টার, ইসলামিক গবেষণা ও দিনি দাওয়াত কার্যক্রমও থাকবে। আরও থাকছে পবিত্র কোরআন হেফজখানা, শিশু ও গণশিক্ষার ব্যবস্থা, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য থাকার ব্যবস্থা। এ ছাড়া থাকছে লাশ গোসল ও কফিন বহনের ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধনসহ প্রশিক্ষণ, ইমামের প্রশিক্ষণ, ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অফিসের ব্যবস্থা।