ডেস্ক নিউজ
করোনাভাইরাসের টিকা যৌথভাবে উৎপাদনে চীনের গবেষণা ও উন্নয়ন (আরঅ্যান্ডডি) কোম্পানিগুলো বাংলাদেশী অংশীদারদের সাথে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির উপরাষ্ট্রদূত হুয়ালং ইয়ান।
গতকাল ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা জানান। এতে তিনি লিখেছেন, চীন এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০টি দেশে টিকা সরবরাহ করেছে। এ ছাড়া কোভ্যাক্সকে (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরিচালিত) প্রথম চালানে এক কোটি ডোজ টিকা দেয়া হচ্ছে। বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশ করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে চীনের কাছে থেকেই টিকার প্রথম চালান পেয়েছে। চীন অনেক উন্নয়নশীল দেশের সাথে যৌথভাবে টিকার গবেষণা ও উন্নয়নকাজ করেছে এবং যৌথ উৎপাদনে গিয়েছে। এ ছাড়া টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অনেক বিদেশী কোম্পানিকে চীন সহায়তা দিয়েছে।
উপরাষ্ট্রদূত বলেছেন, চীনা টিকাগুলো নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার দিক থেকে ব্যাপকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এসব টিকা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সুনাম অর্জন করেছে।
গত মাসে চীনের সিনোভ্যাক টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ। ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড বাংলাদেশে সিনোভ্যাকের স্থানীয় এজেন্ট। ইনসেপ্টার সাথে চীনের প্রতিষ্ঠানটি যৌথভাবে টিকা উৎপাদন করতে চায়। বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর এর আগে চীনের অপর টিকা সিনোফার্ম জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল। সিনোভ্যাক ও সিনোফার্মÑ দু’টি টিকাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে।
চীন উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে দুই দফায় মোট ১১ লাখ সিনোফার্ম টিকা দিয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ বাণিজ্যিকভাবে সিনোফার্মের দেড় কোটি টিকা আমদানি করছে। বাণিজ্যিকভাবে আমদানি করা সিনোফার্ম টিকার প্রথম চালানের ২০ লাখ ডোজ ইতোমধ্যে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। সিনোফার্মের পাশাপাশি কোভ্যাক্সের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া ২৫ লাখ মডার্না টিকা দিয়ে সরকার আবারো গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে। এ জন্য নিবন্ধনপ্রক্রিয়া আগামী বৃহস্পতিবার থেকে চালু হবে।
কোভ্যাক্সের মাধ্যমে চলতি মাসে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১০ লাখ ডোজ টিকা আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, আগামী আগস্ট থেকে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার চালান আবারো আসার কথা রয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়ার করোনা টিকা (স্পুটনিক-ভি) আমদানির জন্য চুক্তির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এখন রাশিয়া থেকে ফিরতি বার্তা পেলে কী পরিমাণ টিকা কত দামে পাওয়া যাবে, কবে নাগাদ সরবরাহ পাওয়া যাবেÑ এসব বিষয় চূড়ান্ত হবে। আশা করছি, চলতি মাসেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার দ্বিতীয় ডোজ যথাসময়ে না পাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। এসব টিকা হাতে এলে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজের সঙ্কট কেটে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদার কারণে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট চুক্তি অনুযায়ী, অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা সরবরাহ করতে না পারায় বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হয়।