নিউজ ডেস্ক:
অর্থনৈতিক ও মানব উন্নয়ন সূচকের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অগ্রগতি হওয়ায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের পথে যাত্রা করেছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এগিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বা ইকোনমিক জোন (ইজেড) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলো। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলছে বেজার অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কার্যক্রম।
২০১০ সালে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) প্রতিষ্ঠার পর থেকে বেজা দ্রুত শিল্পায়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। ২০২১ সালের মধ্যে ২০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের জন্য বেজার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত সময়ের আগেই যেন সম্পন্ন হয় সে বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
এরই মধ্যে কিছু ইজেডে শিল্পকারখানা চালু হয়েছে এবং কিছু চালু হওয়ার পথে। ১১টি ইজেড এখন শিল্প স্থাপনের উপযোগী। এর মধ্যে নয়টি বেসরকারি, সরকারি একটি ও সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগের (পিপিপি) একটি। নতুন করে আরও ১৩টি ইজেডের উন্নয়নকাজ শুরু হবে। বিভিন্ন ইজেডে ১৭টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে। আরও ২০টি শিল্পকারখানা স্থাপনের কাজ শুরু হচ্ছে। এ ছাড়া বেজার উদ্যোগে ইজেড উন্নয়নে বড় পাঁচটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
গত এক বছরে বিভিন্ন ইজেডে ১৭টি শিল্পকারখানা স্থাপন হয়েছে। এর মধ্যে আবদুল মোনেম ইজেডে জাপানি প্রতিষ্ঠান হোন্ডা ও বিএসইসি যৌথ বিনিয়োগ করেছে। গত নভেম্বর থেকে এ কারখানায় মোটরসাইকেল উৎপাদন শুরু হয়েছে। মেঘনা গ্রুপের দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১১টি কারখানা চালু হয়েছে।
এগুলো মেঘনা এডিবল অয়েলস রিফাইনারি, এমপিপি পাওয়ার প্ল্যান্ট, তাসনিম কেমিক্যাল কমপ্লেক্স-২, মেঘনা পাম্প অ্যান্ড পেপার মিলস, সোনারগাঁও ময়দা ও ডালের মিল, সোনারগাঁও স্টিল ফেব্রিকেট, টিআইসি ইন্ডাস্ট্রিজ বিডি, টিআইসি ম্যানুফ্যাকচারিং বিডি, মেঘনা স্টার কেবল অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্স, থাই ফয়েল অ্যান্ড পলিমার ও ইউনিক সিমেন্ট ফাইবার ইন্ডাস্ট্রিজ। আমান অর্থনৈতিক অঞ্চলে আমান সিমেন্ট মিল ইউনিট-২ ও আমান প্যাকেজিং চালু করা হয়েছে। চীনের সরাসরি বিনিয়োগে ইজেডে খেলনা তৈরির কারখানা চালু করেছে মেইগো বাংলাদেশ। সিটি ইজেডে চালু হয়েছে সিটি অটো রাইস অ্যান্ড ডাল মিল ও সিটি এডিবল অয়েল মিল। এসব শিল্পে ১৩৫ কোটি ডলার বা ১১ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে।
দেশব্যাপী ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ শেষ হলে শিল্পায়নে ব্যাপকভাবে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। এক কোটিরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে মুছে যাবে বেকারত্বের অভিশাপ। একই সঙ্গে বেসরকারি বিনিয়োগের খরা কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।