ডেস্ক নিউজ
চীনা কোম্পানি সিনোফার্মার কাছ থেকে প্রাথমিক চুক্তি মূল্যের চেয়ে কম দামে দেড় কোটি ডোজ টিকা কিনবে বাংলাদেশ। বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে পরিবর্তিত মূল্যে ওই পরিমাণ টিকা আমদানির বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। ওই বৈঠকে ৬৫০ কোটি টাকার চারটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
এর আগে ২৭ মে ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে জানানো হয়েছিল, সিনোফার্মার এই টিকা কিনতে প্রতি ডোজের দাম পড়বে ১০ ডলার। তবে এখন কত কম দামে কেনা হচ্ছে সেটি বলেননি অর্থমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের সঙ্গে চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মা ইন্টারন্যাশনালের চুক্তির ১৫ মিলিয়ন (১ কোটি ৫০ লাখ) ডোজের মধ্যে অবশিষ্ট ১৩ মিলিয়ন (১ কোটি ৩০ লাখ) ডোজ এবং নতুন প্রস্তাবিত ২ মিলিয়ন (২০ লাখ) ডোজ ভ্যাকসিন, অর্থাৎ সব মিলিয়ে ১৫ মিলিয়ন বা দেড় কোটি ডোজ আগের চুক্তিপত্রের উল্লিখিত মূল্যের চেয়ে কমে সিনোফার্মা ভ্যাকসিন সাপ্লিমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট-১ এর আওতায় সরবরাহের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় জরুরি প্রয়োজন মেটানোর জন্য ১৫ মিলিয়ন ডোজের অতিরিক্ত ভ্যাকসিন প্রয়োজন হলে তা সরবরাহের প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এবার টিকার দাম কত ঠিক হয়েছে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আগের তুলনায় কম প্রাইজে (দাম) কিনছি। আগে যে প্রাইজ দিয়েছিলাম তার থেকেও কমে পাচ্ছি। এটার জন্য আমরা আগে একবার পেছনে পড়ে গিয়েছিলাম, আবারও পেছনে পড়ার সম্ভবনা আছে। এ কেনাকাটাগুলো সিলেকটিভ। এগুলোর সম্পর্কে টেকনিক্যাল ডিটেইলস আপনাদের (সাংবাদিক) বলতে পারি না এবং বলাও সম্ভব হচ্ছে না। আমার বিশ্বাস আপনারা এটা বুঝবেন এবং আমাদের সঙ্গে কো-অপারেশন করবেন।’
চীনের এ টিকা কতদিনের মধ্যে আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আছে তারা বলতে পারবে ঠিক কোনো সময়ে আসবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন বলেন, আগে চুক্তি হয়েছিল ১৫ মিলিয়নের। এর মধ্যে যে ২ মিলিয়ন এসেছে সেগুলো উপহার হিসাবে। এখন আরও দুই মিলিয়ন যোগ করে আবার ১৫ মিলিয়ন আসবে। সেটা হবে আগের মূল্যের চেয়ে হ্রাসকৃত মূল্য।
বৈঠকে সুইজারল্যান্ডের এওটি ট্রেডিং এজি থেকে ৪৩৬ কোটি ৪৭ লাখ ৬৪ হাজার ২০৫ টাকায় ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি ইউনিটের দাম পড়ছে ১৩ দশমিক ০৬৯ ডলার। এছাড়া বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত নতুন ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে পরামর্শকের কাজ দেওয়া হচ্ছে ভারতের আরআইটিইএস ও অ্যারভি অ্যাসোসিয়েটসের জয়েন্ট ভেঞ্চারকে। সেজন্য ওই কোম্পানি পাবে ৯৭ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩৩৪ টাকা। নরসিংদীতে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) ‘ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার’ প্রকল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য পরামর্শকের কাজ পাচ্ছে মিসরের আরব কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স মোহাররম বাখুয়াম, মিসরের ন্যাশনাল মেইনটেন্যান্স করপোরেশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস এবং ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনসাল্টস বাংলাদেশ। সেজন্য খরচ হবে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৪৩৩ টাকা। বৈঠকে বিসিআইসির ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানির জন্য ৩০ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড ১৭৭ কোটি টাকায় আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয়।