নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রযুক্তির উৎকর্ষে বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য যাত্রাপালা হারিয়ে যেতে বসেছে। সেই গ্রামীণ সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে নাটোরের বাগাতিপাড়ায় গালিমপুরের শতবর্ষী গিরিশ নাটমন্দিরকে ঘিরে গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন সময় মঞ্চস্থ হয় নাচ মহল, সিরাজউদ্দৌলা, টিপু সুলতান, সাগর ভাষা, পরাজিত সম্রাটসহ বিখ্যাত যাত্রাপালা।
এরই ধারাবাহিকতায় গ্রাম বাংলার লোক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এই বিলুপ্তপ্রায় যাত্রা শিল্পকে ধরে রাখতে বাগাতিপাড়ায় বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের অঙ্গ সংগঠন বকুল স্মৃতি থিয়েটারের আয়োজনে দুই দিনব্যাপী যাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে জমিদার বাড়ি গিরিশ ধাম সংলগ্ন মাঠে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। যাত্রা উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ও বকুল স্মৃতি থিয়েটারের পৃষ্ঠপোষক মলয় কুমার রায়।
উৎসবের প্রথম দিন শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাতে ঐতিহাসিক যাত্রাপালা ‘নাচ মহল’ এবং শনিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে যাত্রাপালা ‘বিজয় বসন্ত’ মঞ্চস্থ হয় । স্থানীয় নারী, শিশু, আবাল বৃদ্ধ বণিতাসহ আশপাশের এলাকা এমনকি পার্শ্ববর্তী জেলা থেকেও যাত্রাপ্রেমী দর্শক এই উৎসব উপভোগ করতে আসেন। বকুল স্মৃতি থিয়েটারসহ নাটোরের নামকরা শিল্পীরা এতে অভিনয় করেন।
যাত্রাপালা দুটির পরিচালনায় ছিলেন দেবাশীষ কুন্ডু। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন দেবাশীষ কুন্ডু, মুজিবুল হক, মসগুল হোসেন, ফারুক হোসেন, জিন্নাত আলী, জালাল উদ্দিন, সুমি, সোনা, টুনি বেগম ও সালমাসহ ১৫ জন।
যাত্রাপালায় অভিনয়কারী শিল্পী ও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের ইলামিত্র অঞ্চলের সমন্বয়কারী মসগুল হোসেন ইতি বলেন, ঐতিহাসিব যাত্রাপালা ‘নাচ মহল’ ও ’বিজয় বসন্ত’ এর কাহিনী দর্শকদের মন জয় করেছে। বিশেষত নাচ মহল যাত্রাপালায় হিন্দু-মুসলমান দুই ধর্মের দুই রাজার মধ্যে একে অপরকে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করার এবং রাজ্য দখলের দ্বন্দ্বে সাম্প্রদায়িক লড়াইকে যুবরাজ হেমন্ত সেন কিভাবে নিরসন করেছেন এবং অসম্প্রদায়িক সমাজ গঠণে যুবরাজের ভূমিকা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যা দর্শককে উজ্জীবিত করেছে।