ডেস্ক নিউজ
আগামীকাল শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পণ্য পরিবহন ও গণপরিবহন মালিক সমিতি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসেন মো. মজুমদার আজ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘যে হারে ডিজেলের দাম বাড়ানো হয়েছে তাতে আমাদের পরিবহন চালানো সম্ভব নয়। হুট করে এই ধরনের দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
পরিবহন মালিক সমিতির একটি সূত্র জানিয়েছে, এরই মধ্যে ঢাকার বাইরে অনেক জায়গায় পণ্য পরিবহনের গাড়ি চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। আজই আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মধ্য দিয়ে পরিবহন ধর্মঘট কার্যকর হতে যাচ্ছে। সূত্র- কালের কণ্ঠ।
বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি হাজী মো. তোফাজ্জল হোসেন মজুমদার বলেন,
হঠাৎ করে তেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বেড়ে যাওয়ায় আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের কথা ভাবছি। এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিকেল ৪টার দিকে সমিতির সভায় মূল সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে তেলের দামে বাড়লে প্রকৃত ভোগান্তিতে পড়বেন জনগণ। আমরা নিজেরাও সাধারণ জনগণ, সেখান থেকে চাই সরকার আমাদের দিকে সুনজর দিক।
এর আগেও আমরা সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি নিয়ে গিয়েছি। কিন্তু সরকার সেগুলো আমলে নেয়নি। তাই আমরা এবার কঠোর সিদ্ধান্তে যেতে পারি। ’
এদিকে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা কোনো পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেইনি। তবে পরিবহন মালিকরা গাড়ি চালাতে চাইছেন না। আমরা বিআরটিএ চেয়ারম্যানের কাছে ভাড়া বাড়ানোর জন্য চিঠি দিয়ে বলেছি, জরুরিভিত্তিতে বাস ও অন্যান্য গণপরিবহনের ভাড়া বাড়াতে হবে। কারণ ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ায় মালিকরা পরিবহন চালাতে গিয়ে ভর্তুকির শিকার হবে। মুনাফার বদলে তারা ভর্তুকি দিতে রাজি না।
গতকাল বুধবার (৩ নভেম্বর) রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। নতুন দাম ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছে। রাত ১২টা থেকে এ দাম কার্যকর হয়।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বগতির কারণে ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ তেলের দাম সমন্বয় করছে। গত ১ নভেম্বর ভারতে ডিজেলের বাজার মূল্য লিটার প্রতি ১২৪ দশমিক ৪১ টাকা বা ১০১ দশমিক ৫৬ রুপি ছিল। আর বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৬৫ টাকা অর্থাৎ ৫৯ দশমিক ৪১ টাকা কম।
এতে আরও বলা হয়, বর্তমান ক্রয় মূল্য বিবেচনা করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ডিজেলে লিটার প্রতি ১৩ দশমিক ০১ টাকা কমে বিক্রি করছে। অপরদিকে ফার্নেস অয়েল বিক্রি করছে লিটার প্রতি ৬ দশমিক ২১ টাকা কমে। এতে করে প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে বিপিসি।
গত অক্টোবর মাসে বিভিন্ন গ্রেডের পেট্রোলিয়াম পণ্য বর্তমান দামে সরবরাহ করায়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের মোট ৭২৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে বলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।
এ প্রেক্ষাপটে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ২০০৮ সালের ২২ ডিসেম্বর জারি করা প্রজ্ঞাপন এবং এ সংক্রান্ত জারি করা সংশোধনীসহ অন্যান্য সব বিষয় অপরিবর্তিত থাকবে।
বাংলাদেশে সবশেষ ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছিল।