নিজস্ব প্রতিবেদক:
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সারাদেশের মতো নাটোরেও পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে । শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে বন্ধ রয়েছে জেলার বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যান। কোন প্রকার আলোচনা ছাড়াই হঠাৎ করে জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধি করায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা এই ধর্মঘট শুরু করেছেন। জ্বালানি তেলের বর্ধিত দাম না কমানো পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো হলে এমন সিদ্ধান্ত নেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। এদিকে সকাল থেকেই বড় হরিশপুর বাইপাস, মাদ্রাসা মোড়, দত্তপাড়া, বনপাড়া, কাছিকাটাসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় গাড়ির জন্য বিভিন্নস্থানে যাতায়াতকারী যাত্রীরা অপেক্ষা করছেন। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে রাস্তায় গণপরিবহনের খুব একটা উপস্থিতি দেখা যায়নি। এর ফলে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অনেকে সিএনজি, অটোরিক্সা ও রিক্সায় করে তাদের গন্তব্যে রওনা হচ্ছেন। তবে এ জন্য তাদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।
পরিবহন শ্রমিক জিন্নাহ জানান, কোনরকম আলোচনা না করেই তেলের দাম বৃদ্ধি করেছে সরকার। এতে করে আমরা যে যাত্রীদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া নেবো তাতে সমস্যার সৃষ্টি হবে। তাই তারা মালক পক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধর্মঘট করেছেন।
জাকির হোসেন, কৃষ্ণ বসাক, মোঃ ইব্রাহিম, নূরজাহান বেগমসহ যাত্রী জানান, হঠাৎ করেই বাস বন্ধ হওয়ায় তিনিসহ যাত্রীরা প্রচুর ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। মাঝে মাঝেই পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই এধরনের ধর্মঘট জনজীবনে যন্ত্রণার কারণ হিসাবে দেখা দেয়। আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত এর সমাধান হওয়া জরুরী। কাসেম আলী ও নূরজাহান বেগম জানান, ঢাকা যাওয়ার জন্য তারা টিকিট কেটেছিলেন। শুক্রবার সকালে বাস টার্মিনালে এসে জানতে পারেন পরিবহণ ধর্মঘটের কথা। বাধ্য হয়ে তারা টিকিটের টাকা ফেরৎ নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন। ঢাকায় তাদের দোকান রয়েছে। তারা যেতে না পারায় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন তারা।
নাটোরের হানিফ কাউন্টারের মাষ্টার খন্দকার কোরবান আলী জানান, তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মালিক পক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা ঢাকাগামী কোচ বন্ধ রেখেছেন। মালিক পক্ষের সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত তারা গাড়ি চালাবেন না।
নাটোর জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল করিম জানান, করোকালীন সময়ে প্রায় দেড় বছর পরিবহন সংশ্লিষ্টরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কারোনার দূর্যোগ কাটিয়ে যখন সবাই পরিবহন ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছি তখনই তেলের মূল্য বৃদ্ধি করায় আমরা বিপাকে পড়েছি। তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ হবে। যা পরিচালনা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। বাধ্য হয়ে তারা গাড়ি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।। সরকার যদি তেলের মূল্য কমায় অথবা বর্ধিত ভাড়া নির্ধারণ করে দেয় তাহলেই তারা ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন।