ডেস্ক নিউজ
অতিসম্প্রতি যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পাওয়া করোনাভাইরাসের মুখে খাওয়ার ওষুধ ‘মলনুপিরাভির’ চলে এসেছে বাংলাদেশের বাজারেও। দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসকে অনুমোদন দেওয়ার এক দিন পর মঙ্গলবার আরেক প্রতিষ্ঠান এসকেএফকে এ ওষুধ বাজারজাতকরণের অনুমোদন দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। এরই মধ্যে ওষুধটি বাজারে ছেড়েছে প্রতিষ্ঠান দুটি। এ ছাড়া অনুমোদনের তালিকায় রয়েছে আরও আটটি প্রতিষ্ঠান।
মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান।
তিনি জানান, অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বেক্সিমকো ও এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসকে মলনুপিরাভির জরুরি বাজারজাতের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে ওষুধটি বাজারজাতকরণ শুরু করেছে। এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস ওষুধটির জেনেরিক সংস্করণের নাম দিয়েছে ‘মনুভির’। প্রতিটি ২০০ মিলিগ্রামের ‘মলনুপিরাভির’ ট্যাবলেটের দাম ধরা হয়েছে ৫০ টাকা। অনুমোদন পাওয়ার তালিকায় থাকা অন্য আটটি প্রতিষ্ঠান হলো- স্কয়ার, জেনারেল, বিকন, রেনেটা, ইনসেপটা, একমি, হেলথকেয়ার ও পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস।
মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, এই প্রথম মুখে খাওয়ার কোনো অ্যান্টিভাইরাল আমাদের দেশে এলো। মলনুপিরাভির এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পেয়েছে। গত সোমবার আমরা বেক্সিমকোকে এবং আজকে (মঙ্গলবার) এসকেএফকে ইমার্জেন্সি ইউজ এবং মার্কেটিং অথরাইজেশন দিয়েছি। আমরা মনে করি, এই ওষুধ করোনাভাইরাস মহামারি দূর করতে ভূমিকা পালন করবে।
‘উন্নয়নশীল দেশ’ হিসেবে কিছু ওষুধের ক্ষেত্রে ‘মেধাস্বত্ব ছাড়ের’ সুযোগ থাকায় বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো দ্রুত ওষুধটি আনতে পারছে বলে জানান তিনি।
মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, ‘মলনুপিরাভির’ অবশ্যই টিকার বিকল্প নয়। টিকা নিতে হবে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এই অ্যান্টিভাইরাল ট্যাবলেট খেতে হবে। ওষুধের ব্যবহারবিধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুখে খাওয়ার এই ওষুধ পাঁচ দিনের ডোজ। সকালে চারটি ট্যাবলেট আর রাতে চারটি ট্যাবলেট। পাঁচ দিনে মোট ৪০টি ট্যাবলেট খেতে হবে।
করোনার চিকিৎসায় কোনো সুনির্দিষ্ট ওষুধ ছিল না। গত সপ্তাহে একটি নতুন ওষুধের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। ‘মলনুপিরাভির’ নামে ওই খাওয়ার ওষুধ উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। করোনা নিরাময়ে যৌথভাবে মলনুপিরাভির তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি মার্ক ও রিজব্যাক বায়োথেরাপিউটিক। ওষুধটির ওপর পরীক্ষা হয়েছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ১৭টি দেশে। ওষুধটি ৪ নভেম্বর অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্যের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড কিংডম মেডিসিন্স অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি অথোরিটি। ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি ও যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) ওষুধটি অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করছে।