ডেস্ক নিউজ
দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনাভাইরাসের রূপান্তরিত ধরন ওমিক্রন শনাক্তের জেরে যে ১১ টি দেশকে কোভিড বিষয়ক ভ্রমণ বিধিনিষেধে লাল তালিকায় ফেলেছিল যুক্তরাজ্য, তা প্রত্যাহার করছে সরকার। দেশটির নতুন ভ্রমণনীতিতে আপাতত লাল তালিকা বলে কিছু থাকছে না।
মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ব্রিটেনের বর্তমান সংক্রমণ পরিস্থিতিকে বিবেচনায় রেখে ভ্রমণ বিধিনিষেধে আপাতত কোনো লাল তালিকা না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।
বিশ্বজুড়েই ব্যাপক বিস্তৃত আকারে ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন এবং যুক্তরাজ্যে বর্তমানের যারা এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা বাইরের কারোর দ্বারা নয়, বরং আশপাশের মানুষদের মাধ্যমেই তারা ওমিক্রনের শিকার হচ্ছেন।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে- ভ্রমণ বিধিনিষেধের লাল তালিকা যুক্তরাজ্যে ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে তেমন কোনো কাজে আসছে না। এ কারণে সরকার ভ্রমণ নীতি থেকে লাল তালিকা আপাতত বাদ দিচ্ছে। এই তালিকায় কোনো দেশকে রাখা হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার ভোর ৪ টার মধ্যে সরকারের নতুন আদেশ কার্যকর হবে।
গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার পর আফ্রিকার ১১ টি দেশকে লাল তালিকাভুক্ত করেছিল যুক্তরাজ্য। এই দেশগুলো হলো- অ্যাঙ্গোলা, বতসোয়ানা, এসওয়াতিনি, লেসোথো, মালাউই, মোজাম্বিক, নামিবিয়া, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে।
যুক্তরাজ্যের করোনা ভ্রমণনীতিতে কোনো দেশকে লাল তালিকাভূক্ত করার অর্থ- ওই দেশের কোনো যাত্রীকে ব্রিটেনে প্রবেশ করতে দেওয়া হবেনা, কেবল যুক্তরাজ্যের নাগরিক বা বসাবসকারীদেরই সেই দেশ থেকে ব্রিটেনে প্রবেশ করতে পারবেন।
গত ২৪ নভেম্বর বিশ্ববাসীকে প্রথম করোনার রূপান্তরিত ধরন ওমিক্রনের তথ্য দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। অবশ্য এক গবেষণায় জানা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় এই ধরনটির ব্যাপারে বিশ্বকে জানানোর ৫ দিন আগে, নেদারল্যান্ডসে এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ৬৩টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে সার্স-কোভ-২ বা করোনাভাইরাসের রূপান্তরিত ধরন ওমিক্রন।
জাপানের বিজ্ঞানীরা সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ডেল্টার চেয়েও ৪ গুণ বেশি গতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে ওমিক্রন।
যুক্তরাজ্যে প্রথম ওমক্রিনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় ২৭ নভেম্বর। দেশটিতে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১২ লাখ ১১ হাজার ৩৭২ জন।
গত ১৩ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ জানান, সক্রিয় এই করোনা রোগীদের অর্ধেকই ওমিক্রনে আক্রান্ত। আক্রান্তদের মধ্যে ১০ জন ইতোমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে সম্প্রতি একজনের মৃত্যুও হয়েছে।