ডেস্ক নিউজ
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ও ঐতিহ্যবাহী দর্শনা কেরু চিনিকল ২০২১ সালে ২০ কোটি ৯০ লাখ টাকা নিট মুনাফা অর্জন করেছে। উৎপাদিত পণ্যের সুষ্ঠু বাজারজাত ও সবার সহযোগিতায় সব লোকসান কাটিয়ে লাভ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
চিনিকল কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে চিনি কারখানা, কৃষি খামার, পরীক্ষামূলক খামার, বায়োফার্টিলাইজার, হ্যান্ড সেনিটাইজার ও ডিস্টিলারি পণ্য উৎপাদন, বাজারজাত, বিক্রি করে ১৭০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা পায় কেরু। সরকারের রাজস্ব, ভ্যাট ও আয়কর বাবদ জমা দিয়েছে ৭৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। চিনি উৎপাদন, কৃষি খামার, পরীক্ষামূলক খামার, বায়োফার্টিলাইজারসহ অন্যান্য বিভাগে ৭৬ কোটি টাকা লোকসান কাটিয়েও মিলটি ২০ কোটি ৯০লাখ টাকা নিট মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ১৯৩৮ সালে নির্মিত শিল্প কমপ্লেক্সটি ৮৪ বছর ধরে সুনামের সাথে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এখানে মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারী-শ্রমিকরা শুধু শ্রম দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন না, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তারা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখে চলেছেন।
চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) শেখ সাহাব উদ্দিন জানান, ১৮০৫ সালে জন ম্যাকসওয়েল নামে এক ইংরেজ ভারতের কানপুরের জাগমুতে ফরেনলিকার কারখানা চালু করেন। ১৯৪৭ সালে মালিকানা পরিবর্তন ও অপর একজন শেয়ার হোল্ডার রবার্ট রাসেল কেরু এর অংশীদারিত্ব লাভ করেন। পরে উত্তর ভারতের রোজাতে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড নাম দিয়ে ব্যবসা শুরু হয়। এর আগে ১৯৩৮ সালে তৎকালীন নদীয়া জেলার দর্শনায় আখ মাড়াই ও স্প্রিরিট তৈরির লক্ষ্যে কারখানা স্থাপিত হয়।
স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ হয় এবং তার পর থেকেই শিল্প মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের আওতায় পরিচালিত হয়ে আসছে। স্বাধীনতার পর থেকে ৫০ বছরে মিলটি কোনো বছর লোকসান দেয়নি।
চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন জানান, চিনিকলটি পুরনো হওয়ায় কার্যক্ষমতা কমে গেছে। ফলে আশানুরূপ চিনি উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। বিএমআরের কাজ সম্পন্ন হলে চিনি আহরণের হার বৃদ্ধি পাবে এবং চিনি কারখানায় আর লোকসান থাকবে না বলে তিনি জানান।