নিউজ ডেস্কঃ
গ্রামীণ জনপদে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। দেশের বিভিন্ন স্থানে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের আঞ্চলিক যোগাযোগে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো সড়ক উন্নয়নে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ‘ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। এতে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলার ৮৮ উপজেলার মধ্যে ৬৭ উপজেলাকে প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়াও আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে বর্ষা মৌসুমে সড়ক যোগাযোগ সচল রাখতে রাঙ্গামাটির ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর বিভিন্ন অংশে আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
সম্প্রতি একনেক সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৪ সালে জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শক্তিশালী পল্লীসড়ক নেটওর্য়াক তৈরি হবে এবং সড়কের ধারণক্ষমতা ও নিরাপত্তা বাড়ানোর মাধ্যমে কৃষি-অকৃষি পণ্যের বিপণন সুবিধা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থাটা ভাল হলেই অনেক উন্নয়নের সুফল মিলবে। ইউনিয়ন পর্যায়ের মানুষ তাদের উৎপাদিত পণ্য দ্রুত বাজারজাত করতে পারে। পর্যায়ক্রমে সব জায়গায় যোগাযোগে শক্তিশালী করে তোলা হবে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে ১ হাজার এক দশমিক ৫১ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন, ৫ হাজার ৮৫৭ মিটার ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ, ৩০ কিলোমিটার ড্রেন, ২৪০টি ইন্টারসেকশন, ১২ হাজার স্লোপ প্রোটেকশন, ৩ হাজার ট্রাফিক সাইন ও ১২ হাজার গাইড পোস্ট তৈরি।
পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশে ও লক্ষ্যের সঙ্গে প্রকল্পটি সঙ্গতিপূর্ণ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ৫ হাজার কি.মি. উপজেলা সড়ক, ৮ হাজার কি.মি. ইউনিয়ন সড়ক, ১২ হাজার কি.মি. গ্রাম সড়ক, উপজেলা ইউনিয়ন সড়কে ১ লাখ ৪০ হাজার মিটার ব্রিজ/কালভার্ট এবং গ্রাম সড়কে ৫০ হাজার মিটার ব্রিজ/কালভাট নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে এই প্রকল্পটি সামঞ্জস্যপূর্ণ।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে- ৩ লাখ ২৯ হাজার ৮০৬ ঘনমিটার সড়কে মাটির কাজ, ৬ হাজার ২২৫ মিটার আরসিসি সসার, ড্রেন নির্মাণ, এক হাজার ৫১০ মিটার আরসিসিইউ ড্রেন নির্মাণ, ৭২ হাজার ১৫০ বর্গমিটার কংক্রিট স্লোপ প্রোটেকশন উইথ জিও টেক্সটাইল এবং ২ হাজার ৬৪৮ মিটার আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ। ২০ আগস্ট অনুমোদন হওয়া প্রকল্পটি চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত ছয়টি সড়ক রাঙ্গামাটি সড়ক বিভাগের অধীন সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলা মহাসড়ক। এ ছয়টি মহাসড়কের মধ্যে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি জাতীয় মহাসড়ক চট্টগ্রামসহ সারাদেশের সঙ্গে রাঙ্গামাটিকে যুক্ত করেছে। এছাড়া রাঙ্গামাটি-মানিকছড়ি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়ক খাগড়াছড়ির সঙ্গে এবং ঘাগড়া-চন্দ্রঘোনা-বান্দরবান সড়ক বান্দরবানের সঙ্গে রাঙ্গামাটি যুক্ত হয়েছে। এর বাইরে বগাছড়ি-নানিয়ারচর-লংগদু ও বাঙ্গালহালিয়া-রাজস্থলী সড়ক যথাক্রমে নানিয়ারচর ও লংগদু এবং রাজস্থলী উপজেলাকে রাঙ্গামাটি শহরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। রাঙ্গামাটি শহরের সংযোগ সড়কগুলো শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোকে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি জাতীয় মহাসড়ক এর সঙ্গে যুক্ত করেছে।
এদিকে, পার্বত্য এলাকা রাঙ্গামাটির দিকেও দৃষ্টি দিয়েছে সরকার। রাঙ্গামাটি সড়ক বিভাগের অধীন ‘পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ড্রেনসহ স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এতে খরচ ধরা হয়েছে ২৪৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা।