ডেস্ক নিউজ
দুই বছর ৫ মাস আগে এক টুইটে লতা মঙ্গেশকর নিজেই জানিয়েছেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর পরই বাংলাদেশে এসে গেয়েছিলেন তিনি। টুইটটি করেছিলেন ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর। ১৯৭১ সালে অজন্তা শিল্পীগোষ্ঠীর সঙ্গে বাংলাদেশ সফরের সদস্য হয়েছিলেন তিনি। এই দলের প্রধান ছিলেন অভিনেতা সুনীল দত্ত।
লতা লিখেছিলেন, ‘নমস্কার। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শেষ হতেই আমি সুনীল দত্তের গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশ গিয়ে অনেক কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিলাম। সে সময়ে সেনাবাহিনীর উড়োজাহাজে করে অনেক জায়গায় গিয়েছিলাম। ’
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছেলিনে লতা মঙ্গেশকর। ভারতের বিভিন্ন স্থানে গান পরিবেশন করে বাঙালি রিফিউজিদের জন্য তহবিলও সংগ্রহ করেছিলেন এই কিংবদন্তী। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তার জন্য ভারতীয় অনেক শিল্পীই এগিয়ে আসেন। গান গেয়ে তহবিল সংগ্রহের পাশাপাশি গড়ে তুলেছিলেন বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাপী সচেতনতা। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র স্থাপনেও অর্থ সাহায্য করেছিলেন তারা। সে সময় লতা মঙ্গেশকর ছাড়াও আশা ভোঁসলে, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, কিশোর কুমার, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মোহাম্মদ রফি, মান্না দে, সলিল চৌধুরী প্রমুখ শিল্পীরা বাংলাদেশের জন্য সংগীত পরিবেশন করেছিলেন।
বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান যখন ভারতে গিয়েছেলিন, সৌজন্য সাক্ষাৎকারে গিয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকরও। বাংলাদেশের এই অকৃত্রিম বন্ধু গেয়েছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রেও। ১৯৭২ সালে মমতাজ আলীর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘রক্তাক্ত বাংলা’য় সলিল চৌধুরী সুরে ‘ও দাদাভাই’ শিরোনামের গান গেয়েছিলেন। এটিই বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে গাওয়া লতা মঙ্গেশকরের একমাত্র গান।
২৭ দিন করোনার সঙ্গে লড়াই করে অঅজ সকালে হেরে গেলেন উপমহাদেশের সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। করোনা আক্রান্ত হওয়ায় গত ১১ জানুয়ারি তাকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত ছিলেন তিনি। প্রথম থেকেই তাকে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছিল। ৩০ জানুয়ারি শিল্পীর কভিড নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। কিন্তু বয়সজনিত নানা সমস্যার কারণে শেষ পর্যন্ত আর লড়তে পারলেন না তিনি।